ফাইভ সেকেন্ড রুলটিকে আমি অ-জ্ঞানবাদী পরিবর্তন বলতে চাই। যে কোনো আচরণগত পরিবর্তন, আপনি যা আনতে চাইছেন, সেসব ক্ষেত্রে রুলটি কাজ করবে। ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির প্রয়োগ আপনার কল্পনার দ্বারা সীমাবদ্ধ। আপনি যদি কোনো ইতিবাচক নতুন অভ্যাস আত্মীকরণ করতে চান, তাহলে রুলটি ব্যবহার করুন এবং নিজেকে ধাক্কা দিন।
আপনি রুটি ব্যবহার করার মাধ্যমে নিজেকে ধ্বংসাত্মক আচরণ যেমন– জুয়া, মদ্যপান, ড্রাগ এবং আবেগতাড়িত আচরণ যেমন– নিজ দলের ক্ষুদ্রতম ব্যবস্থাপনা, হতাশায় হাত কামড়ানো বা অতিরিক্ত টেলিভিশন অনুষ্ঠান দেখা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেন। বিধ্বংসী আচরণ থেকে আপনার দৃষ্টি সরাতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে শুধুমাত্র ৫-৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনা করুন। তারপর ঘুরে দাঁড়ান এবং এর থেকে দূরে সরে যান। অন্যসব চ্যালেঞ্জ-এর মতোই এটি খুব সাধারণ কিন্তু সহজ কিছু নয় এবং রুলটি আপনাকে তা সম্পন্ন করতে সহায়তা করবে।
তিনটি আচরণগত পরিবর্তন, যে সম্পর্কে আমি ক্রমাগত ই-মেইল পেয়েছি– স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা ও দীর্ঘসূত্রতা, বইটির এই অংশে আমি তাদের উল্লেখ করব। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণালব্ধ কৌশলের সঙ্গে ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি ধাপে ধাপে জানতে পারবেন আপনার জীবনের এই তিনটি প্রধান এলাকার উন্নয়ন কি করে করতে হবে।
প্রথমত– আপনি আপনার স্বাস্থ্য উন্নয়নের গোপনীয়তা জানতে পারবেন। এটি আপনার পছন্দ হবে না কিন্তু কাজ করবে এবং বিশ্বজুড়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে আপনি বিভিন্ন মানুষের পোস্ট দেখতে পাবেন যারা নিজেদের জন্য অসাধারণ কিছু করতে রুলটি ব্যবহার করছেন।
দ্বিতীয়ত– ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কি করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং আরো জানতে পারবেন দৃষ্টিপাত, উৎপাদন ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক সাম্প্রতিক গবেষণা সম্পর্কে। ঘুমিয়ে পড় বোতামটির বিষয়ে এখানে একটি বিশেষ তথ্য রয়েছে এবং এটি আপনার উৎপাদনশীলতার উপর কি প্রভাব বিস্তার করে তা জেনে সত্যিই অবাক হবেন।
তৃতীয়ত– আপনি একটি বিষয়ে এখানে বিশদভাবে জানতে পারবেন যা আমাদের সবাইকে ভীষণ উৎপাত করে থাকে– দীর্ঘসূত্রতা। এর দুটি রূপ সম্পর্কে এবং ১৯ বৎসরের গবেষণার সাথে ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করার মাধ্যমে কি পদ্ধতিতে ধাপে ধাপে দীর্ঘসূত্রতাকে একবার এবং চিরতরে পরাস্ত করা যায় তা জানতে পারবেন।
যা কিছুই আপনি শিখতে চলেছেন তার সবই তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োগযোগ্য এবং বিজ্ঞান দ্বারা সমর্থিত। আপনার সম্ভাব্যতায় পৌঁছানোর জন্য নিজেকে অবশ্যই ধাক্কা দিতে হবে– অন্য কোনো উপায় নেই।
হয় আপনি দিনটিকে চালাবেন, না হয় দিনটি আপনাকে চালাবে।
*
(৯) স্বাস্থ্যের উন্নতি
মনোবল হলো সাফল্যের নিশ্চয়তা ছাড়াই শুরু করার অঙ্গীকার।
– ইয়োহান উলফগ্যাঙ ভন গ্যেটে
আমি যাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে বার্তা পেয়েছি তাদের প্রায় অর্ধেকের মতো মানুষ স্বাস্থ্যের উন্নতি চান, আপনার আমার মতোই। পাতলা হওয়া, মোটা হওয়া, ওজন কমানো, কোলেস্টেরল কমানো, রোগমুক্তি, স্বাস্থ্যকর খাওয়া কিংবা শক্তি ও নমনীয়তা বৃদ্ধিসহ যাই হোক না কেন, আপনি এর জন্য ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করতে পারেন।
আসলে স্বাস্থ্যবান হওয়ার চিন্তা আপনাকে স্বাস্থ্যবান করবে না। এমনকি ধ্যান, যা একটি মানসিক ব্যায়াম, তা সত্ত্বেও আপনাকে কাজটি করতে হবে। এর আশপাশে অন্য কিছু নেই। আপনাকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিষয়টি হলো, স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার মতো আমাদের জীবনের আর কোনো এলাকার উপর এত পরিমাণ তথ্য, সহায়তা, গবেষণা, বিকল্প অথবা বিনামূল্য উপাদান নেই। আপনি ডায়েট লিখে গুগল সার্চ দিতে পারেন, ২০টি প্রধান অনুসন্ধান ফলাফল ডাউনলোড করতে পারেন, মুদ্রণ / প্রিন্ট করে নিতে পারেন, তালিকাটি একটি ডার্টবোর্ড-এর উপর বসাতে পারেন এবং তারপর আপনি যে কোনো একটি ডায়েট অনুসরণ করতে পারেন যেটিকে আপনার ডার্ট ফলাটি আঘাত করবে। আপনি সত্যি যদি অনুসরণ করেন, এটি কাজ করবে। ডায়েট বা খাদ্যটি কোনো সমস্যা নয়। সমস্যা হলো ডায়েট-এর ব্যাপারে আপনার অনুভূতিগুলো। এটি ব্যায়াম বা শারীরিক কসরতের ব্যাপারেও সত্যি।
এনার মতে– আমরা শারীরিক কসরত করার ব্যাপারটি কখনোই অনুভব করি না এবং স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠার পথে এই অনুভূতিগুলোকে প্রতিবন্ধক হিসেবে প্রবেশ করতে দিই। এনা ৫-৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনার মাধ্যমে রুলটি ব্যবহার করে নিজেকে ধাক্কা দিয়েছিলেন এবং জিমনেসিয়াম এর সাইকেলে চড়ে বসেছিলেন। হ্যাঁ, আপনি হয়তো সাইকেলে প্যাডেল মারার সাথে সাথে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে যাবেন, কিন্তু কি আসে যায়। এটা অন্তত ঘরে বসে অজুহাত তৈরি করার চাইতে অনেক ভালো।
প্রতিটি খাবার, শারীরিক কসরত, জিমনেসিয়াম পরিক্রমা, শরীরচর্চা ক্লাস, শারীরিক চিকিৎসা বিধি, আড়াআড়ি প্রশিক্ষণসূচি, ধ্যান কর্মসূচি এবং ক্রমাগত যোগব্যায়াম আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতি করবে। কিন্তু বিষয়টি হলো– আপনাকে এটি করতে হবে। এবং বিশ্বাস করুন, শারীরিক কসরত আমার খুবই অপছন্দ, বিশেষ করে বাইরে যখন বৃষ্টি হচ্ছে কিংবা খুব ঠাণ্ডা। আমি এটা ঘৃণা করি যেমন করি খুব ভোরে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়া। ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির সাহায্য ব্যতীত আমি হয়তো কখনোই এটা করতে পারতাম না।