সাফল্যের জন্য নিজেকে কিভাবে তৈরি করবেন?
(১) বিছানায় যাওয়ার আগে আপনার অ্যালার্ম ঘড়িটি অন্য একটি কক্ষে রাখুন এবং সচরাচর আপনার যে সময়ে ঘুম ভাঙে তার চাইতে ৩০ মিনিট আগে সময় সেট করুন। যদিও বিছানা থেকে খুব ভোরে উঠে পড়াটা সহজ কাজ নয়। প্যাটি যেমনটি বর্ণনা করেছেন– চ্যালেঞ্জটি সম্পূর্ণ করতে হলে অবশ্যই আপনার নিজেকে ধাক্কা দিতে হবে। আপনি হয়তো ভেবে অবাক হচ্ছেন কেন আমি চাইছি এই অনুশীলনটি শুরু করার জন্য ৩০ মিনিট আগে আপনার ঘড়ির অ্যালার্মটি সেট করুন। সহজ কারণ। আমি চাই এটা আপনার কাছে কঠিন মনে হোক, আপনার যদি আক্ষরিক অর্থে সেভাবেই নিজেকে বিছানা থেকে টেনে তুলতে হয়।
(২) আগামীকাল ভোরে যখন অ্যালার্ম বাজবে– চোখ খুলুন এবং উল্টো ক্ষণ গণনা করুন ৫-৪-৩-২-১, গায়ের চাদর/কম্বল ছুঁড়ে ফেলুন, উঠে দাঁড়ান, শোবার ঘর ছেড়ে বাইরে হেঁটে যান এবং আপনার দিনটি শুরু করুন, দেরি না করেই। মাথার উপর কোনো বালিশ নয়। প্রলম্বিত করা নয়। আবার ঘুমিয়ে পড়া নয় কিংবা বিছানায় ফিরে যাওয়া নয়।
এখানে যা ঘটতে পারে তা হলো, অ্যালার্ম বন্ধ হওয়ার পর আপনি উঠে পড়ার ব্যাপারে কেমন বোধ করছেন তা নিয়ে চিন্তা শুরু করবেন। আপনার মনে হবে উঠে পড়ার এই চ্যালেঞ্জটি বেকুব ধরনের। আপনি ক্লান্ত বোধ করবেন। নিজেকে আপনি এই বলে বোঝাতে চেষ্টা করবেন– আগামীকাল শুরু করা যাবে। টিম-এর মতোই আপনি হয়তো উঠতে চান না। কিন্তু ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি আপনাকে আপনার অনুভূতিগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করতে এমন কিছু হাতিয়ার দেবে যা আপনাকে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়তে সাহায্য করবে।
একবার যখন টিম-এর মাথায় ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ঢুকে পড়েছিল, তিনি অবিলম্বে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়তে এবং জিমনেসিয়াম যেতে সক্ষম হয়েছিলেন। আমাদের অনেকের মাঝেই কিছু ভালো লাগছে না জাতীয় আচরণ লক্ষ্য করা যায়। ঐ মুহূর্তগুলোতে রুলটি আপনাকে জেসিকার মতো কাজ করতে সহায়তা করবে। জেসিকা-র ভাষ্যমতে :
আমি দেখেছি যে আমার ভেতরে যখন কিছু ভালো লাগছে না জাতীয় আচরণ প্রতিদিন হামাগুড়ি দিয়ে বেড়ায়, তখন রুলটি আমাকে সাহায্য করে। আর তাই, আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
এই কিছু ভালো লাগছে না আচরণটি আপনার সারাদিনের নিয়ন্ত্রণভার নিয়ে নিতে পারে, আর তাই ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির ব্যবহার এত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার বাকি জীবনে এর একটি অর্থনৈতিক প্রভাব রয়েছে। স্টিফেনকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন যিনি উঠে পড়ার চ্যালেঞ্জটি প্রথমবার চেষ্টা করে দেখার আগে আমাকে লিখেছিলেন।
আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম সকালে উঠে পড়া কেমন ছিল? তিনি বলেছিলেন, যখন তিনি প্রথমবার চেষ্টাটি করেছিলেন– এটি ছিল গাধার মতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি তার জীবনে বিশাল একটি পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছিল। তার মানসিকতা কয়েক মিনিটের মধ্যে আক্ষরিক অর্থেই বদলে গিয়েছিল। এবং যখন তিনি উঠে পড়া চ্যালেঞ্জটি অনুশীলন করা শুরু করলেন, তিনি একটি নতুন চাকরি পেলেন যা তাকে নতুন করে জীবন শুরু করার অনুমতি দেয়।
স্টিফেন-এর জন্য ঘুমিয়ে পড় বোতামটি ভেঙে গিয়েছিল এবং স্বয়ংক্রিয় চালক বলে তার জন্য আর কিছু রইল না। এটাই সব পার্থক্য গড়ে দেয়। স্টিফেন শুধুমাত্র সকালে উঠে পড়লেন না, তিনি সবসময় একই রকম ও কদাচিৎ নিজের ভালোলাগার পেছনে ছোটা জাতীয় ব্যক্তিত্ব থেকে একটি পাঁচ সেকেন্ড সময়ের সিদ্ধান্তে নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়া ব্যক্তিত্বে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। এবং এর সবকিছুই শুরু হয়েছিল ঠিক যখন অ্যালার্মটি বেজেছিল।
আপনি যদি ঠিক সময়ে উঠে পড়তে পারেন, দিনটি শক্তভাবে শুরু করুন, এগিয়ে যাবার পরিকল্পনা করুন, নিজের লক্ষ্য সম্পর্কে ভাবুন এবং নিজের উপর দৃষ্টিবদ্ধ করুন। এই সব কিছুই করুন আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজের মধ্যে ডুবে যাওয়ার আগেই। তারপর আপনি খুব সহজে আরো অনেক কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। আপনার জীবনের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণের এটা হলো প্রথম পদক্ষেপ।
মনে রাখবেন, রুলটি আমি তৈরি করেছিলাম বিছানা ছেড়ে উঠে পরার জন্য কিন্তু এটি তার চাইতেও বেশি কিছু। এটি আপনার শক্তিকে জাগ্রত করবে। জীবনকে ঝাঁকুনি দিতে আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন। উঠে পড়া চ্যালেঞ্জটি চেষ্টা করে দেখার পর ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি নিজের সম্পর্কে কি আবিষ্কার করলেন তা জানিয়ে আমাকে লিখুন। আপনি হয়তো দেখতে পাবেন, স্টিফেন যেমনটি বলেছিলেন– এটি ছিল গাধার মতো, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, একটি ছোট্ট পরিবর্তন বিশাল পার্থক্য তৈরি করে দেবে।
এখন আপনি জানেন কেমন করে শুরু করতে হবে, মৌলিক স্তরে। পরবর্তী তিন অধ্যায়ে আমরা আরো গভীরে প্রবেশ করব এটা দেখার জন্য যে, রুটি ব্যবহার করার মাধ্যমে কি করে আপনি ক্রমবর্ধমান উৎপাদনশীলতা অর্জন, ভয়কে জয়, সুখী বোধ ও সম্পর্কগুলোকে সমৃদ্ধ করাসহ নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
পর্ব ৩ : মনোবল বদলে দেবে আচরণ
তৃতীয় পর্ব – মনোবল বদলে দেবে আচরণ
সবচাইতে উৎপাদনশীল ব্যক্তিত্ব হওয়ার উপায়