ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির জন্য ধন্যবাদ।
পুনশ্চ : আমার দল এখন আমার ধারণাগুলো নিয়ে গবেষণা করছে।
– এ্যানা ক্যাট।
আপনি নিজেকে ভয়ঙ্কর বিড়াল মনে করতে পারেন কিন্তু ৫-৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনার মাধ্যমে আপনিও মহৎ কাজ করতে পারেন। আপনার কাছে যা সত্যিই খুব গুরুত্বপূর্ণ তা করতে, বলতে অথবা অনুসরণ করতে ৫ সেকেন্ডের একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। এ কারণেই মনোবল ও আত্মবিশ্বাসের মধ্যকার বন্ধন এত অচ্ছেদ্য। প্রতিবার আপনি যখন সন্দেহের মুখোমুখি হবেন, ৫-৪ ৩-২-১ ক্ষণ গণনা করে তা পার হয়ে যান এবং নিজেকে সক্ষম প্রমাণ করুন।
প্রতিবার আপনি যখন ভয়কে প্রতিহত করবেন, ৫-৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনা করুন এবং কাজটি যেভাবেই হোক সম্পন্ন করুন যাতে করে আপনার অন্তর্গত শক্তির প্রদর্শন হয়। প্রতিবার আপনি যখন অজুহাতগুলোকে ধ্বংস করবেন, ৫ ৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনা করুন এবং কথা বলুন যাতে করে আপনার মহত্ত্বকে সম্মানিত করা যায়। এভাবেই বেড়ে উঠবে আত্মবিশ্বাস– একটি ছোট ও সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে।
*
(৮) কেমন করে শুরু করতে হবে
আপনি পারেন কিংবা পারেন না যাই চিন্তা করেন না কেন, তাই ঠিক।
– হেনরি ফোর্ড
ফাইভ সেকেন্ড রুল্ল-টি প্রয়োগ করার দ্রুততম উপায় হলো আমি যেভাবে করেছিলাম ঠিক সেভাবে প্রয়োগ করা। আগামীকাল ভোরে উঠে পড়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে আপনি রুলটির ব্যবহার শুরু করতে পারেন। স্বাভাবিক সময়ের ৩০ মিনিট আগে আপনার অ্যালার্মটি সেট করুন, রিং বাজার সাথে সাথে ক্ষণ গণনা করুন ৫-৪-৩-২-১ এবং নিজেকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে তুলে দিন।
পরিবর্তন খুব সাধারণ কিন্তু সহজ নয়।
কেন এই চ্যালেঞ্জটি গুরুত্বপূর্ণ তার কিছু কারণ রয়েছে–
(এক)– এখানে আন্দোলিত হওয়ার কোনো জায়গা নেই। চ্যালেঞ্জটি সহজবোধ্য। এটা শুধু আপনি, অ্যালার্ম ঘড়ি আর ৫-৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনা। আপনি ব্যর্থ হলে তার কারণ ফাইভ সেকেন্ড রুলটিকে ব্যর্থ করে দেওয়ার মতো কোনো সিদ্ধান্ত আপনি হয়তো গ্রহণ করেছেন।
(দুই)– আপনি যদি আপনার সকালের কর্মসূচি পরিবর্তন করতে পারেন, তবে সবকিছুই পরিবর্তন করতে পারবেন। পরিবর্তনের জন্য আপনার অনুভূতি থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে হবে। আপনি যদি জীবনের একটি ক্ষেত্রে এটা করতে পারেন, তাহলে জীবনের যে সব ক্ষেত্রে আপনি উন্নতি করতে চাইছেন, সেসব ক্ষেত্রেও করতে পারবেন।
(তিন) –আমি চাই আপনি সক্রিয়করণ শক্তি ধারণাটির অভিজ্ঞতা অর্জন করুন এবং অনুভব করুন– সাধারণ কিছু করতে নিজেকে ধাক্কা দেওয়া কতটা কঠিন। রসায়নশাস্ত্র মতে সক্রিয়করণ শক্তি হলো– একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় সর্বনিম্ন পরিমাণ শক্তি। রসায়নবিদরা লক্ষ্য করেছেন, এই প্রাথমিক শক্তির পরিমাণটি রাসায়নিক বিক্রিয়াকে চলমান রাখার জন্য প্রয়োজনীয় গড় শক্তির চাইতে অনেক বেশি। কি আছে এর ভেতরে? অনেক কিছু। নিজেকে ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে তুলে আনতে যে পরিমাণ প্রাথমিক শক্তি লাগে তা আপনার উঠে পড়া ও চলমানতা অব্যাহত রাখার জন্য ব্যবহৃত শক্তির চাইতে অনেক অনেক বেশি।
কিংবদন্তিতুল্য মনোবিজ্ঞানী মিহালী সিসাইজেন্টমিহালী এই ধারণাটি মানবিক আচরণের উপর প্রয়োগ করেছিলেন এবং আবিষ্কার করেছিলেন সক্রিয়করণ শক্তি হলো একটি বড় কারণ যার জন্য কোনো পরিবর্তন এত কঠিন। তিনি এর সংজ্ঞা নিরূপণ করতে গিয়ে বলেছেন– এটা হলো পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক শক্তির ধাক্কা যা থেমে থাকা একটি গাড়িকে নাড়াতে কিংবা ভোরবেলা উষ্ণ বিছানা থেকে আপনাকে তুলে দিতে কাজ করে।
ফিলিপাইন থেকে জেরোমি লিখেছেন :
এটাকে অস্বস্তিকর মনে হচ্ছে কারণ আমার দেহ ও মন এই ধরনের শাসনের জন্য প্রস্তুত নয়। কিন্তু আমি এটা অনুশীলন করতে চাই।
সক্রিয়করণ শক্তির প্রথম পর্যায়টি খুব অস্বস্তিকর, কিন্তু আমি চাই আপনি সেই প্রতিরোধটি অনুভব করুন যাতে করে শিখতে পারেন নিজেকে ধাক্কা দেওয়াটা আসলে কি রকম।
আপনি যদি নিজেকে সেই বিশাল ধাক্কা দিতে না পারেন (যেমন ছোটবেলা আপনার মা টেলিভিশনটি বন্ধ করে দিয়ে বলেছেন– কি সুন্দর একটি দিন, বাইরে যাও এবং কিছু একটা কর) তাহলে নিশ্চিতভাবে আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে কিছুই না করার পথে চালিয়ে নিয়ে যাবে। আপনি যখন ৫ ৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনা শুরু করেন তখন একটি শৃঙ্খলিত প্রতিক্রিয়া শুরু হয় যা শুধু আপনার প্রিফ্রন্টাল করটেক্সকেই জাগিয়ে তোলে না বরং পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক প্রাথমিক বিশাল ধাক্কা দিতে আপনাকে প্রস্তুত করে।
আপনি যখন ঘড়িতে অ্যালার্ম বাজার মুহূর্তে উঠে পড়েন, এটি আপনাকে ব্যক্তিগত ক্ষমতা প্রদান করে। উঠে পড়ার এই ছোট্ট কাজটি আপনার ভেতরকার শক্তিকে প্রদর্শন করে। এমা যেমনটি আবিষ্কার করেছেন– এটি আপনাকে নির্দিষ্ট দিনে অধিক পরিমাণে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করবে।
ট্রেসি ঠিক একই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ভোর পাঁচটার মধ্যে ঘুম থেকে জেগে রুটি ব্যবহার করে– বিছানা থেকে ধাক্কা দিয়ে নিজেকে তুলে জিমনেসিয়াম পাঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ট্রেসি একটি ইতিবাচক দিন শুরু করতে পেরেছিলেন।
আপনি যদি বিছানা থেকে নিজেকে তুলে আনতে না পারেন তাহলে আপনার জীবনে আর যে পরিবর্তনগুলো আপনি আনতে চান তা কখনোই আসবে না। আর আপনি যদি সকালগুলোর নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করার জন্য সেই ছোট্ট পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে পারেন, তবে তা শৃঙ্খলাবদ্ধ ঘটনার অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে যা আপনার জীবনের সর্বত্র পরিবর্তন নিয়ে আসবে।