এ ব্যাপারে উইলসন পরিষ্কারভাবে সম্মত। তিনি বলেন– আমাদের মস্তিষ্ক বোকা নয়। এটা এমন নয় যে আপনি আপনার মস্তিষ্ককে বলবেন ইতিবাচক চিন্তা কর আর তা জেগে উঠবে। আমি বিশ্বাস করি আপনাকে এর চাইতে বেশি কিছু করতে হবে। আপনাকে অবশ্যই আপনার অভ্যাসগুলো যা আপনাকে থামিয়ে দেয়, ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে হবে। আপনাকে অভ্যাসগুলো ভাঙতে হবে যা আপনাকে পেছনে টেনে ধরে রাখে। অতঃপর আপনার প্রত্যেকটি ধ্বংসাত্মক অভ্যাস এক একটি সাহসী অভ্যাস দ্বারা প্রতিস্থাপন করতে হবে। পরবর্তী সভায় ক্রিস্টিন-কে প্রাত্যহিক মনোবল অনুশীলন করতে হবে। তাকে কিছু বলতে হবে এবং তিনি অনিশ্চিত ও অস্বস্তিবোধ করবেন। যখন তিনি তার ধারণাগুলো শেয়ার করতে যাবেন, নিজের প্রতি তার সন্দেহ জাগবে এবং দ্বিধাবোধ করবেন। তিনি প্রতিহত অনুভব করবেন। এটাই ধাক্কা দেওয়ার প্রকৃত সময়। এটা সেই মুহূর্ত যখন আপনার মূল্যবোধ ও লক্ষ্য একটি রেখায় এসে দাঁড়াবে কিন্তু আপনার অনুভূতি আপনাকে না বলবে। কথা বলার জন্য নিজেকে ধাক্কা দিতে ক্রিস্টিন-এর ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে।
রুলটি তিনি যত বেশি ব্যবহার করবেন, কর্মী সভায় তার চুপ করে থাকার অভ্যাসটি তত বদলাবে এবং মনোবল নামক নতুন একটি অভ্যাস প্রতিস্থাপিত হবে। ক্রিস্টিন যত বেশি তার নিজেকে প্রকাশ করতে ও অন্তর্গত ধারণাগুলোকে বাইরে নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন, ততবেশি প্রাণবন্ত, সংযুক্ত ও ক্ষমতায়িত হতে থাকবেন।
ন্যাট জানেন এটি ঠিক কতটা ক্ষমতায়নজনিত অনুভূতি। তিনি এখন ব্যবসার প্রবৃদ্ধির জন্য নিজের ধাক্কা দিতে প্রতিদিনই রুলটি ব্যবহার করছেন। তার ভাষায়–
হ্যাঁ, রুটি এখন আমি প্রতিদিনই ব্যবহার করছি। আজকে যেমন করলাম। আমি যে হাসপাতালে কাজ করি সেখানে একজন ভদ্রমহিলা রোগী হিসেবে অপেক্ষা করছিলেন এবং আমি সেখানে একটি সম্ভাব্য বাজার দেখতে পেলাম। আমি ভদ্রমহিলার কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করলাম, একটু আন্তরিক হলাম এবং তার কাছ থেকে যোগাযোগের তথ্যাদি সংগ্রহ করলাম যাতে করে আমরা সংযুক্ত থাকতে পারি এবং পরবর্তী কোনো সময়ে ব্যবসায়িক লেনদেন করতে পারি।
রুটি ব্যবহার করার মাধ্যমে ক্যারল একটি পেশাদার সম্মেলনে তার সেবিকা সহকর্মীদের সামনে বক্তব্য উপস্থাপন করার মতো মনোবল খুঁজে পেয়েছিলেন যা ছিল তার নিজেকে ধাক্কা দিয়ে নিজের আরামদায়ক এলাকা থেকে বাইরে বের করে এনে জীবনের একটি লক্ষ্য অর্জন করার মতো।
আলেকজান্ডার-কে যখন তার কর্মস্থলে একটি উপস্থাপনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলো, তার মাথায় এসে অসংখ্য অজুহাত ভর করল। ৫-৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনার মাধ্যমে তিনি সবকিছু বদলে দেয়া একটি মুহূর্তের সন্ধান পান যা তাকে একটি স্নাতকোত্তর ক্লাসে শিক্ষা দেওয়ার মতো আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল।
ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির ব্যবহার এত স্বাধীন হওয়ার কারণ হলো আপনি এতে শুধু একটি মুহূর্তকেই জব্দ করছেন না বরং আপনার জীবনের মালিকানা ভার গ্রহণ করছেন। আপনি হ্যাঁ এবং নাগুলোকে বদলে দিচ্ছেন। জিম যেমনটি বলেছেন– আপনার নিজের ক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করবেন না। তিনি বিশ্লেষণ অসাড়তা-কে পরাস্ত করতে রুলটি ব্যবহার করেছিলেন, আর পেয়েছিলেন একটি অবিশ্বাস্য বছর।
উলসন বলেছিলেন– ভালো করুন, ভালো হোন। সর্বপ্রথম আপনার আচরণ বদলান কারণ আপনি যখন তা করবেন নিজেকে উপলব্ধি করার ধরনও বদলে যাবে। ঠিক এটাই রুলটি ব্যবহার করার সময় এ্যানা ক্যাট আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি একজন পেশাদার বিপণন কর্মী যিনি শান্ত থাকা পছন্দ করতেন বিশেষ করে সবাই যখন তাকে লক্ষ্য করছে। তার দুশ্চিন্তা ছিল সহকর্মীরা হয়তো তাকে বোকা ও অনভিজ্ঞ ভাবছে। আমাকে লেখা এ্যানা ক্যাট-এর চিঠি :
প্রিয় মেল,
এই হলো আমার ফাইভ সেকেন্ড রুল সংক্রান্ত গল্প :
আমি যখন সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের আগেই আমার সকালের কাজগুলো শেষ করার জন্য অনিচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে বিছানা থেকে (৫ সেকেন্ডের মধ্যে) টেনে তুলেছিলাম, আমার পেশাজীবন ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি দ্বারা ভীষণভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।
আমি বিপণনে আছি তাই সবসময় নতুন নতুন ধারণার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হয়। প্রত্যেকটি নতুন ধারণা পুরনোটিকে সরিয়ে দিতে পারে এবং একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রচারণার উন্নয়ন ঘটাতে এবং আমাদের ভোক্তাদের জন্য বিশেষ ফলাফল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। হ্যাঁ, ছোট্ট একটি ধারণা। সব একত্রিত করে রাখার জন্য আমি যেখানেই যাই না কেন, আমার ব্যাগে একটি ছোট নোটবই বহন করি এবং তা জরুরি কাজগুলো লিখে রাখার জন্য ব্যবহার করি কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমি আমার ধারণাগুলোই লিখে রাখি।
আমি মনে করি না ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি আমার ধারণাগুলোকে দীর্ঘায়ু করে এবং অনুমোদনের আশায় আমি সেগুলো কোথাও পাঠাইও না। শুধুমাত্র পরবর্তীতে ব্যবহার করার জন্য ধারণাগুলো রেখে দিই। আমি শুধু চাই এগুলো কাগজে লেখা থাকুক। পরে, এগুলোকে আমি আবার দেখি এবং সময় নিয়ে মূল্যায়ন করি যাতে করে এ থেকে কোনো অসাধারণ কৌশল উদ্ভাবন করা যায়।
ধারণা শেয়ার করার সময় অথবা তা লিখে রাখার সময় আমি মেনিমুখো একজন হয়ে যেতাম। মানুষ কি চিন্তা করবে অথবা যদি তারা আমাকে মূর্খ ও অনভিজ্ঞ মনে করে, এই ভেবে আমি সচেতন এবং চিন্তিত হয়ে পড়তাম। ভয়ঙ্কর বিড়াল উপসর্গ দূর হয়ে যাওয়ার পর আমার সৃজনশীলতার উন্মেষ ঘটেছিল। এখন আমি আর মনে করতে পারিনা যে, কেন আমি আগে এতটা উদ্বিগ্ন ছিলাম।