দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল আমার সবকিছু বদলে দিয়েছিল এটা শেখানোর মাধ্যমে যে– কেমন করে বদলে যেতে হয়। এই রুলটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমি যে কোনো ছোট কাজ করার ব্যাপারে আমার পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং অতিরিক্ত চিন্তা করার প্রবণতা ছাড়তে পেরেছিলাম। আত্ম তদারকি এবং অধিক উৎপাদনক্ষম হবার লক্ষ্যে আমি রুটি প্রয়োগ করি। এটা আমাকে এই শিক্ষা দিয়েছিল যে, কেমন করে সন্দেহ করা বন্ধ করতে হয় এবং নিজের উপর, নিজের ধারণা ও সক্ষমতার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এবং এই রুলটি অন্যের জন্য নয় বরং আমার নিজের জন্য, আমাকে অধিক উন্নত এবং সুখী মানুষ হতে ভেতর থেকে আমাকে শক্তি জুগিয়েছে।
দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল আপনার জন্য একইভাবে কার্যকর হতে পারে। আর তাই আমি এটি আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে উত্তেজনা বোধ করছি। পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে আপনি এই রুলটির পেছনের গল্প জানতে পারবেন। আপনি আবিষ্কার করবেন যে, কেমন করে আপনার প্রাত্যহিক মনোবল এবং একটি ৫ সেকেন্ড সময়ের সিদ্ধান্ত আপনার গোটা জীবনকে বদলে দিচ্ছে। অবশেষে আপনি জেনে যাবেন কেমন করে সর্বশেষ গবেষণালব্ধ কৌশলের সাহায্যে দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল ব্যবহার করে আপনি হতে পারেন অধিক স্বাস্থ্যবান, সুখী, উৎপাদনক্ষম এবং কার্যক্ষেত্রে সফল। এর ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন যে, কেমন করে দুঃশ্চিন্তামুক্ত হওয়া, উৎকণ্ঠা নিয়ন্ত্রণ, ভয়কে জয় এবং জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া যায়।
এবং এটাই সব নয়। আপনি অসংখ্য প্রমাণ দেখতে পাবেন। এই রুলটি আপনাকে সঠিক সময়ে উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করবে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এটা যা করবে তা হলো– আপনার ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রতিভা, নেতা, সঙ্গীতশিল্পী, ক্রীড়াবিদ, অঙ্কন শিল্পী, এবং আপনার পরিবর্তিত প্রতিনিধিত্ব সমূহকে জাগিয়ে তুলবে।
প্রথম যখন আপনি রুলটি শিখবেন, আপনি আপনার লক্ষ্যে স্থির থাকার জন্য এর ব্যবহার শুরু করতে পারেন। আপনাকে যা করতে হবে তা হলো নিজেকে সামনের দিকে ঠেলে দেওয়া যখন আপনি দেখবেন কোনো কাজ শুরু করার ব্যাপারে আপনার ভেতরে এক ধরনের অনীহা তৈরি হচ্ছে। অথবা আপনি হয়তো আপনার কর্মক্ষেত্রে আরো অধিক প্রভাবশালী হতে চাইছেন। ঠিক এভাবে মালযামে নামক এক ব্যক্তি প্রথমবার তার জীবনে এই রুলটি প্রয়োগ করেছিলেন যা তাকে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে পেশাগত লক্ষ্যস্থিরসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসার সাহস ও মনোবল জুগিয়েছিল। (এটা এমন কিছু যার ব্যাপারে আমাদের অনেকের ভেতর এক ধরনের ভয় কাজ করে)। ধন্যবাদ দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল। এটা সত্যিই অসাধারণ।
এই রুলটির আরেকটি অদ্বিতীয় ব্যাপার হলো– আমি হয়তো এটি উদ্ভাবন করেছি কিন্তু এটা শুধুই আমার গল্প নয়। এই বইটিতে আপনি পৃথিবীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের গল্প জানতে পারবেন যারা ছোট-বড় যে কোনোভাবে তাদের জীবনের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করার জন্য এই রুটি ব্যবহার করেছেন। তাদের বিচিত্র অভিজ্ঞতা আপনাকে এটা বুঝতে সাহায্য করবে যে এই রুলটি ব্যবহারের ফলাফল কতটা ব্যাপক এবং ফলপ্রসূ।
আপনি নিজে অধিক উৎপাদনক্ষম হওয়ার জন্য রুলটি ব্যবহার করতে পারেন। লরা নামক একজন মহিলা রুলটি ব্যবহার করার পূর্বে তার প্রাত্যহিক কার্যতালিকা প্রস্তুত এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রতিনিয়তঃ নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতেন। এখন তার জীবনে আলসেমির আর কোনো জায়গা নেই– এখন শুধুই অ্যাকশন। লরা তার অর্থপ্রবাহ মাসিক চার হাজার ডলারে উন্নীত করেছেন, স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, চার হাজার ফুট পর্যন্ত পাহাড় ডিঙ্গানো শেষ করে এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন একটি ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণ করার। এর সবই তিনি সম্পন্ন করেছেন দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল অনুসরণ করার মাধ্যমে।
আপনি আপনার নিরাপদ এলাকার বাইরে পা রাখতে এবং আরো অধিক যোগাযোগ স্থাপন করতে রুলটি ব্যবহার করতে পারেন। নিম্নে উল্লিখিত ব্যক্তিরা রুটি তাদের জীবনে প্রয়োগ করার মাধ্যমে সফলতা লাভ করেছেন ঠিক প্রথম যখন তারা রুলটি সম্পর্কে অবগত হন–
(১) কেইন– প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর মুভারস অ্যান্ড শেকারস-এ অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে
(২) ম্যাথিও– সি-লেভেল নির্বাহীদের সৌজন্য কল করার মাধ্যমে উত্তর পাওয়ার ক্ষেত্রে।
(৩) এলান– পিজিএ ট্যুর ইভেন্ট-এ এক ডজনের উপর মানুষের সাক্ষাৎকার নেবার ক্ষেত্রে
আত্ম-তদারকি ও আপনার আবেগসমূহ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে এই রুলটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। জেনা নামক একজন মহিলা মা হিসেবে তার সন্তানদের সাথে রূঢ় আচরণ না করে বরং ধৈর্যশীল হওয়ার ক্ষেত্রে এই রুটি প্রয়োগ করেছিলাম। রুলটি তাকে মনোবল জুগিয়েছিল এবং অহেতুক ভাবনা চিন্তা বন্ধ রেখে ব্যবসার কাজে মনোনিবেশ করতে তাকে উৎসাহ জুগিয়েছিল।
পৃথিবীর নাম করা কিছু পণ্যের বিক্রয় নির্বাহীবৃন্দ তাদের ব্যবস্থাপনা, বিক্রয় কার্য, দলবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং উদ্বাবনী শক্তি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে এই রুলটি ব্যবহার করছেন। যেমন ধরা যাক ইউ-এস-এর মি, ক্রিস্টাল, যার পুরো বিক্রয় প্রতিনিধি দলটি দ্য ফাইভ সেকেন্ড রু ব্যবহার করার মাধ্যমে তাদের নির্ধারিত এলাকার বিক্রয়সীমা অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্থান লাভ করেছিলেন। মি. ক্রিস্টাল-এর ভাষায় রুলটি শেখা খুবই সহজ এবং আত্মবিশ্বাস তৈরির ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক যা এই মুহূর্তে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবস্থাপকগণ তাদের কর্মীবাহিনীকে শিখিয়ে চলেছেন।