(১৭) সম্পর্কোন্নয়ন
আত্মশক্তি
*
আনিস কবির
জন্ম– মে, ১৯৭০ইং সালে
বাবা– প্রয়াত গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, মা– জহুরা বেগম। তিন ভাই-বোনের পরিবারে আনিস কবির দ্বিতীয়।
জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকা, বাংলাদেশ-এ। পড়াশোনা করেছেন বিভিন্ন বিষয়ে। বানিজ্য বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করার পর বাবার আগ্রহে চার্টার্ড একাউন্টেন্সি নিয়ে পড়া শুরু, তবে শেষ করা হয়নি। স্নাতোকোত্তর করেছেন ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন এ। হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ে তৃতীয় বারের মতো স্নাতোকোত্তর পর্ব শুরু করে মাঝপথে আবার ছেড়ে দেওয়া। উচ্চতর ডিপ্লোমা করেছেন আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনায়। এছাড়া সম্পন্ন করেছেন প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কোর্স।
এ পর্যন্ত কাজ করেছেন হিসাব, অর্থ, বিক্রয়, তথ্য ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা প্রশাসন, অফিস ব্যবস্থাপনা সহ বিভিন্ন বিভাগে। পড়াশোনা ও কাজের প্রয়োজনে অবস্থান করেছেন দেশ ও দেশের বাইরে। দেখেছেন বিচিত্র সমাজ ব্যবস্থা। পরিচিত হয়েছেন আরো বিচিত্র সব মানুষের সাথে। দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল আনিস কবির এর প্রকাশিত প্রথম অনুবাদগ্রন্থ।
*
মেল (মেলানি) রবিন্স
জন্ম– অক্টোবর, ১৯৬৮ইং সালে
মেল একজন আমেরিকান নারী টেলিভিশন ধারাভাষ্যকার, উপস্থাপক, লেখক এবং প্রেরণাদানকারী বক্তা। বড় হয়েছেন মিশিগান অঙ্গরাজ্যের উত্তর মুস্কাগান শহরে। ১৯৬৮ইং সাল থেকে ১৯৯০ইং সাল পর্যন্ত মেল ডাটর্মাউথ কলেজ-এ ইতিহাস, ছায়াছবি এবং নারী বিষয়ের উপর পড়াশোনা করেছেন। ১৯৯৪ইং সালে বস্টন কলেজ ল স্কুল থেকে তিনি আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
১৯৯৬ইং সালে বিয়ে করেন ক্রিস্টোফার রবিন্স-কে, যিনি একজন উদ্যোক্তা, রেস্তোরাঁ মালিক এবং যোগ (ইয়োগা) শিক্ষক। বিবাহিত জীবনে তাদের তিন সন্তান– সয়্যার, কেন্ডাল এবং ওকলে।
২০১৪ইং সালে মেল তার অসাধারণ টেলিভিশন উপস্থাপনার জন্য গ্রাসি এওয়ার্ড এ ভুষিত হন। ২০১১ইং সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম বই– স্টপ সেয়িং ইউ আর ফাইন। ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০১৭ইং সালে প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় বই– দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল। প্রকাশিত হওয়ার পর এর অডিও সংস্করণ-টি ছিল সর্বাধিক শ্রুত এবং ২০১৭ইং সালে আমাজন-এ ষষ্ঠ সর্বাধিক পঠিত বই।
*
প্রাত্যহিক মনোবল
মনোবল হলো এক প্রকার সক্ষমতা যা আমাদেরকে কঠিন, ভীতিকর অথবা অনিশ্চয়তাপূর্ণ কাজ করার শক্তি জোগায়।
মনোবল হলো জন্মগত বিষয়। এটা আমাদের সবার মাঝে বিদ্যমান। এবং এটা অপেক্ষা করে থাকে আপনার একে আবিষ্কার করবার আশায়।
এক মুহূর্তের মনোবল আপনার একটি দিন বদলে দিতে পারে। একটি দিন আপনার গোটা জীবনকে বদলে দিতে পারে। এবং একটি জীবন বদলে দিতে পারে গোটা পৃথিবী।
এটাই হলো মনোবলের প্রকৃত শক্তি, যা আপনাকে প্রকাশ করে। যা আপনার সর্বোৎকৃষ্ট সংস্করণ।
আবিষ্কার করুন আপনার মনোবল শক্তি যা আপনাকে আপনার সকল স্বপ্ন সত্যি করতে সাহায্য করবে, এবং যা বদলে দেবে সমস্ত পৃথিবী।
*
প্রথম পর্ব – দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল
(১) আপনার জীবন বদলে দেয়া ৫ সেকেন্ড সময়
আপনি কি এমন কাউকে খুঁজছেন যে আপনার জীবন বদলে দিতে পারে? তাহলে আয়নায় দেখুন।
আপনি এখানে এমন কিছু শিখতে চলেছেন যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এটা মাত্র ৫ সেকেন্ড সময় যা আপনার জীবন বদলে দেবে। উদ্ভট শোনাচ্ছে, তাই নয় কি? মোটেও তা নয়। এটা বিজ্ঞান। আমি আপনাকে প্রমাণ করে দেব। একটি ৫ সেকেন্ড সময়ের সিদ্ধান্তে আপনি বদলে নেবেন আপনার জীবন। বস্তুতঃ এটাই একমাত্র উপায় যা আপনাকে বদলাতে পারে।
এটা হলো ফাইভ সেকেন্ড রুল (৫ সেকেন্ড সময় বিধি) সংক্রান্ত সত্যি গল্প। এটা কী, কেন এবং কেমন করে মাত্র ৫ সেকেন্ড সময়ে এর ব্যবহারের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর মানুষ তাদের জীবন বদলে নিতে পারে, আমরা সেটাই দেখব। এটা শেখা অত্যন্ত সহজ কিন্তু এর প্রভাব অত্যন্ত গভীর। যে কোনো কিছুকে বদলে দেবার এটা হলো গোপন সূত্র।
তাৎক্ষণিকভাবে আপনি এর ব্যবহার শুরু করতে পারেন ঠিক যেই মুহূর্তে আপনি রুটি শিখে যাবেন। এটি প্রত্যহ আপনাকে আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করতে, ভালোবাসতে এবং কথা বলতে সাহায্য করবে। একটিবার এর ব্যবহার করুন অতঃপর দেখুন সারাজীবন যখনই আপনার প্রয়োজন হবে, এটি আপনার কাজে লাগবে।
ফাইভ সেকেন্ড রুলটি আমি আমার জীবনের এমন একটি সময়ে প্রণয়ন করি যখন আমার চারদিকে সবকিছু ভেঙে পড়ছিল। সবকিছু বলতে আমি বোঝাতে চাইছি সবকিছুই। আমার বিবাহ, অর্থ, পেশা এবং আত্মমর্যাদা। সবকিছুই গর্তে পড়ে গিয়েছিল। আমার সমস্যাগুলো নিজের কাছে এত বড় মনে হতে লাগলো যে প্রতিদিন ভোরবেলা বিছানা থেকে উঠতে আমাকে নিজের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হতো। ঠিক এখান থেকেই শুরু। আমি আমার অভ্যাসগুলো এবং আলসেমির তালা ভাঙতে উদ্ভাবন করলাম দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল।
জীবনে প্রথমবার আমি যখন এই রুলটি প্রয়োগ করেছিলাম, এক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিল যেন বোকামি করছি। তখন কি আর আমি জানতাম যে উদ্ভাবন করে ফেলেছি এমন একটি শক্তিশালী আত্মবিনির্মাণ পদ্ধতি যা আমার জীবন, কর্ম এবং মানসিকতা সম্পূর্ণ বদলে দেবে?
দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল আমি যখন আবিষ্কার করলাম, আমি দেখতে পেলাম এর শক্তি অবিশ্বাস্য। আমি শুধু উঠেই দাঁড়ালাম না, বরং এটা আমার গোটা জীবনকে একটা ঝাঁকুনি দিল। আমি আমার টাকা-পয়সা, বিবাহ, পেশা, অভিভাবকত্বসহ সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নের জন্য আত্মবিশ্বাসের সহিত এই রুটি প্রয়োগ করেছিলাম। ব্যাংক থেকে চেক ফেরত আসাসহ আমার বিবাহের বিশ বর্ষপূর্তি উদ্যাপন নিয়ে পর্যন্ত আমাকে যুদ্ধ করতে হয়েছিল। নিজেকে দুঃশ্চিন্তামুক্ত করতে আমি আমার নিজহাতে গড়া দুটি ক্ষুদ্র ব্যবসা বিক্রি করে দিয়েছিলাম। অতঃপর আমি সি-এন-এন ও সাকসেস ম্যাগাজিন এর সহিত যুক্ত হই এবং বর্তমানে আমি সারা পৃথিবীতে পরিচিতি একজন সফল প্রেরণাদানকারী বক্তা। আমি এখন অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত। সুখী এবং মুক্ত। দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল ব্যতীত এর কোনো কিছুই আমার পক্ষে করা সম্ভবপর ছিল না।