আমার রুলটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো শারীরিকভাবে নড়া বা মুভ করা কারণ আপনি যখন নড়বেন, আপনার শরীরবৃত্তীয় পরিবর্তন হবে এবং আপনার মন তা অনুসরণ করবে। সম্ভবত নামটি শুধু সংশ্লিষ্টই নয় বরং অনেক নিখুঁত, কারণ এটা জীবনের অন্যান্য ৫ সেকেন্ডের জানালাগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং এটাই রুলটিকে অনেক বেশি পরিচিতি দিতে, বৈশ্বিক ও সত্য হিসেবে অনুভব করতে সাহায্য করে।
রুলটি শুনতে নাইকির ট্যাগলাইনের মতো –শুধু কাজটি করুন
শুধু কাজটি করুন এবং দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল-টির মধ্যকার পার্থক্যটি খুব সহজ। শুধু কাজটি করুন হলো একটি ধারণা– এটা হলো যা আপনাকে করতে হবে। দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল হলো একটি হাতিয়ার– এটা হলো কাজটি করতে আপনি নিজেকে কেমন করে তৈরি করেছেন। শুধু কাজটি করুন বিশ্বের সবচাইতে বিখ্যাত ট্যাগলাইন হওয়ার কারণ হলো এটা পৃথিবীর সব সংস্কৃতিকেই অনুরণিত করে। আপনি কি জানেন এই ট্যাগলাইনটিকে কে শক্তিশালী করে? সেটি হলো একটি শব্দ– শুধু।
শুধু কাজটি করুন স্বীকার করে যে, আমরা ভালো হতে, ভালো কিছু করতে এবং নিজেদেরকে একটু সামনে ঠেলে দিতে সংগ্রাম করছি। ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে আমরা সকলেই দ্বিধাবোধ করি এবং আমাদের অনুভূতিগুলোর সাথে লড়াই করি। শুধু শব্দটি আমাদের এই কথা বলে যে– আমরা একা নই, সকলের ভেতরই এই সমস্ত ছোট ছোট দ্বিধা রয়েছে।
এটা অনেকটা সেই মুহূর্ত– যখন কোনো চলমান খেলায় অংশগ্রহণ করার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে আপনি প্রশ্ন করা শুরু করেন অথবা যে মুহূর্তে আপনি চিন্তা করেন তৃতীয় প্রস্থ খ্যাতি অর্জন করার জন্য কাজ করবেন কিনা অথবা আপনি যখন প্রশ্ন করেন যে বৃষ্টির মধ্যে দৌড়ানোর জন্য দরজা খুলে বের হবেন। কিনা।
ট্যাগলাইনটি স্বীকার করে যে আপনার ভেতরে অজুহাত ও ভয় দুটিই রয়েছে এবং নাইকি আপনাকে এগুলোর চাইতে অনেক বড় হতে অনুপ্রাণিত করে। চলুন, এটা নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই। শুধু কাজটি করুন। আমি জানি আপনি ক্লান্ত– শুধু কাজটি করুন। আমি জানি আপনি ভীত– শুধু কাজটি করুন।
নাইকির ট্যাগলাইন আপনাকে সন্দেহের বাইরে যেতে এবং খেলায় অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করে থাকে। নাইকি জানে আপনার ভেতরে রয়েছে মহত্ত্ব এবং এটা আপনার অজুহাতের অন্য একটি দিক। এটা গভীরভাবে আমাদেরকে অনুরণিত করে কারণ আমাদের সকলেরই এমনকি একজন অলিম্পিক ক্রীড়াবিদেরও একটি ধাক্কার প্রয়োজন পড়ে। এখানেই দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি চলে আসে। এটি হলো আপনি নিজেকে কেমন করে ধাক্কা মারছেন যখন আপনাকে ধাক্কা মারার জন্য নেই কোনো প্রশিক্ষক, প্রতিদ্বন্দ্বী, অভিভাবক, সমর্থক বা দলের কোনো খেলোয়াড়। শুধু রুলটি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি ক্ষণ গণনা করবেন ৫-৪-৩-২-১।
সবার জন্যই কি পাঁচ সেকেন্ড সময় সংক্রান্ত সুযোগের জানালা রয়েছে?
হ্যাঁ, পরিবর্তনের জন্য আপনার প্রবৃত্তি এবং আপনার মন সেই প্রবৃত্তিটিকে মেরে ফেলার মাঝখানে একটি জানালা রয়েছে। যখন সেকেন্ডের ভগ্নাংশ পরিমাণ সময়ের মধ্যে আপনার মস্তিষ্ক আপনার বিরুদ্ধে কাজ করতে শুরু করে, তখন কয়েক সেকেন্ডের জন্য মনে হয় আপনার চিন্তা এবং অজুহাতগুলো পূর্ণোদ্যমে সচল হচ্ছে না এবং আপনাকে থামিয়ে দিতে পারছে না। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে ৫ সেকেন্ডের জানালাটি সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
ব্যক্তিগতভাবে আমি লক্ষ্য করেছি যে, যত দীর্ঘ সময় আমি আমার প্রাথমিক আবেগগুলো কাজ করা এবং শারীরিকভাবে সচল হওয়ার মধ্যে অবস্থান করি, আমার অজুহাতগুলো ততটাই উচ্চকিত হতে থাকে এবং নিজেকে সচল করা তখন আরো অনেক বেশী কঠিন হয়ে পড়ে। অ্যানজেলা যেমন খুঁজে পেয়েছিলেন যে, তার ভয় যখন গভীরতর পর্যায়ে ছিল তখন ৫ সেকেন্ড সময়ের সিদ্ধান্তগুলোই ৫০ সেকেন্ড এবং তারপর ৫০০ সেকেন্ডে পরিণত হয়েছিল। এখন তিনি রুলটির সঙ্গে এমন আচরণ করেন, যেমন তার চিন্তাশক্তি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে শূন্যের কোঠায় চলে আসলে তিনি করবেন।
জানালাটি খর্ব কিংবা দীর্ঘ করার জন্য এবং যাতে করে এটি আপনার জন্য কাজ করে তা নিশ্চিত করার জন্য আপনি রুলটিকে ব্যক্তিগত (পারসোনালাইজড) করুন।
ম্যাট, যে আমার ও আমার স্বামীর একজন ভালো বন্ধু, তার প্রথম শ্রমসাধ্য ও কর্দমাক্ত একটি দৌড়ের জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। সে নিউজার্সিতে বসবাস করত এবং ভয়ঙ্কর ঠাণ্ডা আবহাওয়ার মধ্যে সে আমার স্বামীকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিল। সে জানালাটি ৩ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে সংকুচিত করেছিল কারণ সে লক্ষ্য করেছিল কতটা দ্রুত তার মস্তিষ্ক তাকে থামিয়ে দিতে পারে। বার্তাটি ছিল :
তোমার বান্ধবী মেলকে বল যে ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি এখানে কাজ করছে। আমি এটাকে ৩ সেকেন্ডে নামিয়ে এনেছি। যখন আমি ৩ সেকেন্ড পরই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছি তখন শুধু শুধু কেন জীবনের জটিলতাগুলোকে নিয়ে ভাবা। ৫ সেকেন্ড সময়ের মধ্যে আমি অন্তত দুটি অজুহাত তৈরি করে ফেলতে পারি। আজ ভোরে আমি যখন উঠি, ভুলক্রমে থার্মোমিটারটি পরীক্ষা করেছিলাম যা আমার ২ সেকেন্ড সময় নিয়েছিল, কিন্তু ৩য় সেকেন্ডেই আমি জুতা পায়ে দিতে শুরু করে দিয়েছিলাম।