৫-৪-৩-২-১ এবং হুইস্কির বোতলটি নামিয়ে দূরে সরে যাওয়া।
• নিজেকে যদি ক্রীস-এর প্রতি খুব বিদ্বেষপূর্ণ মনে হয়, তাহলে আমাকে যা করতে হবে–
৫-৪-৩-২-১ এবং নিজের স্বর সংশোধন করে আরো বিনয়ী হওয়া।
• নিজের ভেতরে আমার যদি খুব বেশি গড়িমসি ভাব চলে আসে, তাহলে আমাকে যা করতে হবে–
৫-৪-৩-২-১ এবং জীবন বৃত্তান্তের উপর কাজ শুরু করতে বসে যাওয়া।
আমি যা আবিষ্কার করেছিলাম তা ছিল শক্তিশালী। সহজ কর্মকাণ্ডে নিজেকে একটু ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে আস্থা ও উৎপাদনশীলতার মধ্যে একপ্রকার শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। জীবনকে আগে বাড়াতে, নিজেকে একটু সামনে ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি যে মুহূর্তের সৃষ্টি করবেন এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার যে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন তা ভাষায় বর্ণনা করা একটু কঠিন। র্যাচেল যেমন সঠিক সময়ে উঠে পরার একটি সহজ পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে দেখেছিলেন অনেকগুলো ঘটনার সূত্রপাত, যেমন– নিজের ৩০ পাউন্ড ওজন কমা, প্রথম বাড়ি কেনা এবং তার বৈবাহিক সম্পর্কের পুনরুজ্জীবন।
র্যাচেল পুনরুজ্জীবন শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন এবং দ্য ফাইভ সেকেন্ড রু ঠিক এই কাজটিই করে থাকে। রেবেকা নামক একজন ভদ্রমহিলার এই একই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছিল। রুলটি ব্যবহার করে নিজেকে একটু সামনে ঠেলে দেওয়ার মাধ্যমে তিনি মানসিক কারাগার ভেঙে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। পক্ষপাতদুষ্ট বিশ্লেষণ দ্বারা বন্দি থাকা আর নয়, রেবেকা তাঁর ৪৭ বৎসর বয়সে প্রথমবার অনুভব করেছিলেন যে– তিনি স্বাধীন।
১৯৫৪ সালে জুলিয়ান রোটর একটি গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক ধারণা দিয়েছিলেন। এটিকে বলা হয়– নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। আপনি যতটা বিশ্বাস করবেন যে আপনার জীবন, কর্ম এবং ভবিষ্যৎ আপনার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আপনি ততটাই সুখী এবং সফল হবেন। আপনার জীবনের নিয়ন্ত্রণ-অনুভূতি বৃদ্ধির একটি নিশ্চিত উপায় রয়েছে, আর তা হলো– কাজের প্রতি আপনার পক্ষপাত।
এটি একটি পৌরাণিক ঘটনা। আপনি যখন নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু আপনার ধারণার মধ্যে জড়ো করবেন তখন অবশ্যই আপনাকে আগ্রহ অথবা প্রেরণা অনুভব করতে হবে, ব্যাপারটা এমন নয়। এটা নিজেকে সোজাসুজি বলবার মুহূর্ত। আপনি প্রেরণা অনুভব করবেন না। সত্যি বলতে কি, আপনি কোনো কিছু করছেন বলেই অনুভব করবেন না। আপনাকে যেটা করতে হবে তা হলো– নিজের পশ্চাঙ্গ উঠিয়ে নিজেই নিজের পাছায় লাথি মারা। আমি যাকে বলি– ধাক্কার শক্তি।
ফাইভ সেকেন্ড রুল-টি শক্তিশালী হওয়ার এটা একটা অন্যতম কারণ, কেননা এটা আপনাকে এমন এক ব্যক্তিত্বে রূপান্তর করবে যে কিনা পক্ষপাতমূলক কার্য দ্বারা পরিচালিত। আর আপনার যদি প্রতি পদক্ষেপে অতি চিন্তার ঝোঁক থেকে থাকে তাহলে আপনি দেখতে পাবেন– চিন্তাশক্তি বন্ধ করে দেওয়া এমনকি অচল করে দেওয়া উদ্যম ও আস্থার প্রকাশ। রুলটি ব্যবহার করে আপনার বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে আপনি নিজের ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা অর্জন করবেন।
জেনী শেষ পর্যন্ত তার স্বাস্থ্যের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যখনই ডিনারে কৌটাভর্তি রাভিওলি, ব্যাগভর্তি চিপস এবং প্রচুর সোডা গ্রহণ করবেন, তার ওজন বেড়ে যাবার নিশ্চিত অভিযোগ উঠবে। ৫-৪-৩-২-১ ক্ষণ গণনার মাধ্যমে তিনি তার ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে হতাশ করেছিলেন। জেনী রুলটি ব্যবহার করার মাধ্যমে নিজের পশ্চাৎদেশে লাথি মারতে সক্ষম হয়েছিলেন যা তার প্রয়োজন ছিল।
ডোনা প্রথম যখন আভেদা ইনস্টিটিউট কনফারেন্স-এ রুলটি সম্পর্কে জানতে পারেন, তার মনে হয়েছিল রুলটি সে ব্যবহার করে দেখবে কিন্তু এতে তার জীবন বদলে যাবে না। রুটি সম্পর্কে আমিও ঠিক এভাবেই ভেবেছিলাম– আমি হয়তো ঘুমিয়ে পড় অ্যালার্মটিকে পরাজিত করার একটি কৌশল হিসেবে এর ব্যবহার করছি। কিন্তু এটি ছিল আমার ভুল চিন্তা। ডোনারও তাই। এটা তার জীবন ও ব্যবসাসংক্রান্ত সবকিছুই বদলে দিয়েছিল। ডোনা বুঝতে পেরেছিল– আমরা শুধু আমাদের নিজেদেরকে পেছনে টেনে ধরে রাখি। এটা দেখা আশ্চর্যজনক যে, আমি কতটা ভয়ংকরভাবেই না নিজেকে ভয়ের কাছে জিম্মি করে রেখেছিলাম, আর আজ আমি কোথায় আছি। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সামনের বছরগুলোতে আমি কোথায় থাকবো সেটাও দেখতে পাচ্ছি।
আপনি এই রুলটি যত বেশি ব্যবহার করবেন ততবেশি নিজের ভেতর মনোবল, আত্মবিশ্বাস, গর্ব ও আত্মনিয়ন্ত্রণ অনুভব করবেন। আমি প্রায়ই মানুষকে বলি– রুলটি ব্যবহারের একটি পরিণতি হলো এটি আপনাকে তাড়া করে ফিরবে। ভালো অর্থেই বলছি। এবং আমি ঠিকই বলছি। আপনি ডেরিল-কে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। আপনি বুঝতে পারবেন ঘুমের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে আপনি হাঁটছেন। এটা কখনো সহজ, সাধারণ ও কার্যকর, কখনোবা সংক্রামক। ডেরিল যেমন বর্ণনা করেছেন– দ্য ফাইভ সেকেন্ড রুল আমাকে তাড়া করে ফিরছে, প্রত্যহ, ভালোভাবেই, আর তাই আমার জীবন সামনে এগিয়ে চলেছে।
রুলটি সম্পর্কে আমি প্রথম যাকে বলি সে হলো আমার স্বামী। ক্রীস আমার পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করেছিল, বিশেষ করে আমার জঘন্য আচরণের পরিবর্তন। মানসিকভাবে সে যে একটি গোপন অস্ত্র ব্যতীত জীবন-যাপন করছিল তাকে সেটা বোঝাতে আমার বিশেষ কোনো বেগ পেতে হয়নি।