প্রকৃতি ও প্রকৃতির সূত্র অন্ধকারে ছিল: ঈশ্বর বললেন, নিউটন হও, আর পরিমাপে সুবিধা হয়ে গেল।
এই মনোভাবে মহত্ত্বের অভাব আছে বলেই মনে হয়। স্পিনোজা যখন কিছুতে বিশ্বাস করতেন, তিনি মনে করতেন ঈশ্বরের আলোকিত ভালোবাসা উপভোগ করছেন। কিন্তু আধুনিক মানুষ মার্ক্সের সঙ্গে সহমত পোষণ করে মনে করে যে অর্থনৈতিক অভীষ্টই তাকে পরিচালিত করে কিংবা ফ্রয়েডের প্রভাবে মনে করে নির্দিষ্ট যৌন তাড়নার জন্যই সে কোনো তত্ত্বে আস্থা রাখছে কিংবা যৌন-তাড়নার জন্যই লোহিত সাগরে প্রাণীকুলের প্রকারভেদে বিশ্বাস করে। তবে কোনো ক্ষেত্রেই সে স্পিনোজার মতো পুলক অনুভব করতে পারে না।
এতদূর আমরা বুদ্ধিবাদী ভঙ্গিতে সিনিসিজমের বিচার করেছি, মনে করেছি সিনিসিজমের বুদ্ধিগত কারণ রয়েছে। যাহোক, আধুনিক মনস্তত্ত্ববিদরা বলতে কখনো ক্লান্তি বোধ করেন না যে, বিশ্বাস কদাচিৎ ন্যায়সঙ্গত অভিলাষ দ্বারা নির্ধারিত হয়, অবিশ্বাস সম্পর্কে একই কথা খাটে, যদিও সংশয়বাদীরা এ ব্যাপারটা প্রায়শই উপেক্ষা করে চলেন। ব্যাপক সংশয়বাদীতার কারণ সম্ভবত সমাজতাত্ত্বিক, বুদ্ধিগত নয়। প্রধান কারণ ক্ষমতাহীন স্বাচ্ছন্দ্য। ক্ষমতার অধিকারীরা সিনিক হন না, কারণ তারা তাদের ধ্যান-ধারণা অপরের উপর চাপিয়ে দিতে পারেন। নিপীড়িত জনগণও সিনিক হন না, যেহেতু তাদের মন ঘৃণায় পূর্ণ, আর ঘৃণা, অন্য যে কোনো সবল ভাবাবেগের মতো, প্রচণ্ড বিশ্বাস বয়ে আনে। শিক্ষা, গণতন্ত্র এবং ব্যাপক উৎপাদন অভ্যুদয়ের আগ পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহ বুদ্ধিজীবীরা প্রভাবিত করেছেন, তাদের গলা-কাটা গেলেও এই প্রভাব কোনো সময় খর্ব হয়নি। আধুনিক বুদ্ধিজীবীরা কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতির সম্মুখীন। আধুনিক বুদ্ধিজীবীরা যদি নির্বোধ ধনীদের প্রচারক কিংবা রাজবিদূষক হিসেবে কাজ করতে রাজি থাকে তবে তাদের বড় চাকরি লাভ এবং মোটা টাকা উপার্জনে কোনো মতেই অসুবিধা হয় না। ব্যাপক উৎপাদন এবং প্রাথমিক শিক্ষার ফল দাঁড়িয়েছে যে, নির্বুদ্ধিতা এখন অনেক গভীরে প্রোথিত। সভ্যতা উন্মেষের পর থেকে নির্বুদ্ধিতা এত বেশি গভীরে প্রোথিত হয়নি। জার সরকার লেনিনের ভ্রাতাকে হত্যা করলে প্রতিক্রিয়াস্বরূপ লেনিন কিন্তু সিনিকে পরিণত হয়ে যাননি, তাঁর মধ্যে জন্ম নিয়েছে ঘৃণা, এবং আজীবন এই ঘৃণার অনুপ্রেরণায় কাজ করে শেষ পর্যন্ত সফল হন। কিন্তু সমধিক দৃঢ় পশ্চিমা দেশগুলোতে ঘৃণাবোধ করার সুযুক্তি কদাচিৎ মেলে। এত ব্যাপক জিঘাংসা সাধনের সুযোগ ঘটে না। বুদ্ধিজীবীদের কাজের আদেশ দেয় এবং অর্থ যোগায় সরকার কিংবা ধনীরা, যাদের উদ্দেশ্য সংশ্লিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের জন্য ক্ষতিকর না হলেও হাস্যকর বলেই মনে হয়। কিন্তু সিনিসিজমের একটু ছোঁয়া থাকার দরুন তারা পরিস্থিতির সঙ্গে বিবেকের সাযুজ্য ঘটাতে সমর্থ হয়। তবে এটা সত্য যে ক্ষমতাসীনরা আশা করে কোনো কোনো কর্মকাণ্ডে সম্পূর্ণ প্রশংসনীয় কাজ হোক, এইসব কাজের মধ্যে প্রধান হলো বিজ্ঞান; পরবর্তী হলো আমেরিকায় গণস্থাপত্যশিল্প। কিন্তু একজন মানুষের শিক্ষা যদি কেবল সাহিত্যগত হয়, যা এখনও প্রায় দেখা যায়, তাহলে বাইশ বছর বয়সে সে দেখতে পায়, সকল দক্ষতা নিয়ে যা-কিছু তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় তার জন্য সে কিছুই করতে পারছে না। এমনকি পাশ্চাত্যের দেশগুলোতেও বিজ্ঞান-সাধকরা সিনিসিজমে ভোগেন না; কারণ সমাজের অনুমতিক্রমেই তাদের বুদ্ধি কাজে লাগাতে পারেন। তবে আধুনিক বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে এরা ব্যতিক্রম এবং ভাগ্যবান।
যদি এই নিদান সঠিক হয় তাহলে আধুনিক সিনিসিজম কেবলমাত্র প্রচার দ্বারা কিংবা তরুণদের সামনে উন্নততর কোনো আদর্শ উপস্থাপন করে দূর করা যাবে না। ধর্মযাজক এবং জরাজীর্ণ কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্ম থেকে নির্গত আদর্শ থেকে উন্নততর বলেও প্রমাণিত হবে না। এই রোগের প্রতিবিধান তখনই মিলবে যখন বুদ্ধিজীবীরা এমন কাজ পাবে যা তাদের সৃষ্টিশীল ঝোঁক বাস্তবায়নের সহায়ক হবে কিংবা বাস্তবায়ন করতে পারবে। ডিসরেলি যে ব্যবস্থাপত্রের পক্ষে বলে গেছেন তা ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা আমি দেখতে পাচ্ছি না; আগে তোমাদের প্রধান শিক্ষকদের শিক্ষিত করো। এই শিক্ষা হবে আরো বাস্তব শিক্ষা, সাধারণভাবে সর্বহারা শ্রেণিকে কিংবা ধনিক শ্রেণিকে যে শিক্ষা দেয়া হয় তার থেকে আলাদা হতে হবে। এই শিক্ষা সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ বিবেচনায় রাখবে। উপযোগীবাদী এষণা থেকে শুধু সামগ্রীর পাহাড় গড়বে না, যা কারো সময়ে কুলাবে না উপভোগের। মানব দেহ সম্পর্কে কিছু জ্ঞান না থাকলে কাউকে ডাক্তারী পেশায় নিয়োজিত হতে দেয়া হয় না অথচ একজন অর্থলগ্নিকারী যদি তার কাজের বিচিত্র দিক সম্পর্কে অজ্ঞ হন তবু তাকে নির্বোধে কারবার চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়, কেবল ব্যতিক্রম করা হয় যদি তার ব্যাংকের খাতায় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। জগণ্ডা কী সুখকরই না হতো যদি অর্থশাস্ত্র এবং গ্রিক কবিতা বিষয়ে পরীক্ষায় যিনি পাস করেননি তাকে স্টক এক্সচেঞ্জে কাজ করার অনুমতি প্রদান করা না-হতো, কিংবা রাজনীতিকরা ইতিহাস এবং আধুনিক উপন্যাসের জ্ঞান রাখতে বাধ্য হতেন। কল্পনা করুন একজন বড় শিল্পপতি এই প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন: আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে গম মজুদ করেন, তার প্রতিক্রিয়া জার্মান কবিতায় কী হবে? আধুনিক বিশ্বে হেতুবাদ যে কোনো সময়ের চেয়ে সমধিক জটিল এবং এর শাখা-প্রশাখা সুদূর বিস্তৃত, বৃহৎ সংগঠনের সংখ্যা বৃদ্ধিই এর কারণ; কিন্তু এই সংগঠনগুলো যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তারা মূর্খ, তারা তাদের কাজের ফলাফল এক শতাংশও বোঝে না। রাবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি হারানোর ভয়ে তার বই নিজের নাম গোপন করে ছাপতেন। আধুনিকরা বলে ঐ ধরনের বই লিখতেই যাবেন না। কারণ আজকের দিনের প্রচারণার নিখুঁত পদ্ধতি লেখকের নাম ঠিকই খুঁজে বের করবে। জগতের শাসককুল সর্বকালেই নির্বোধ ছিল। কিন্তু বর্তমান কালের শাসকদের মতো তাদের এত ক্ষমতা ছিল না। এই শাসকদের কীভাবে বুদ্ধিমান করে তোেলা যায় তার উপায় খুঁজে বের করা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সমস্যার সমাধান কি সম্ভব নয়? অসম্ভব আমি মনে করি না, তবে কাজটা যে সহজ তাও আমার মনে হয় না।
১০. আধুনিক প্রকৃতিগত সমরূপতা
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমেরিকায় ইউরোপীয় পর্যটকগণ দুটি বিশেষত্ব দেখে চমকে ওঠেন; প্রথমত, গোটা যুক্তরাষ্ট্রের (পুরাতন দক্ষিণাঞ্চল বাদে) সর্বত্র দৃষ্টিভঙ্গির একেবারে অনুরূপতা, দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক লোকালয়ের আসক্তিপূর্ণ অভিলাষ এটা প্রমাণ করা যে তাদের এলাকা বিশিষ্ট এবং অন্য যে কোনো এলাকা থেকে ভিন্ন। অবশ্য দ্বিতীয়টির কারণ প্রথমটি। প্রত্যেক জায়গা স্থানীয় গরিমা বোধের কারণ থাকুক এই বাসনা পোষণ করে। সুতরাং ঐতিহাসিক কিংবা ঐতিহ্যগত বিশিষ্টতা থাকলে তারা সেটা খুব যত্নের সঙ্গে লালন করেন। বাস্তবে সমরূপতা যত বেশি হয়, বিভিন্নতা খোঁজার আগ্রহ হয় তত প্রবল ঐ সমরূপতা কিছুটা লঘু করার জন্য। পুরাতন দক্ষিণাঞ্চল বস্তুত অবশিষ্ট আমেরিকা থেকে একেবারে আলাদা, এত আলাদা যে একজনের বোধ হয় সে অন্য কোনো দেশে এসেছে। এই অঞ্চল কৃষিভিত্তিক, আভিজাতিক এবং ভূতাপেক্ষ (retrospective)। অথচ বাকি আমেরিকা শিল্পায়ন, গণতান্ত্রিক এবং ভবিষ্যত্মখীন। যখন আমি বলি যে পুরাতন দক্ষিণাঞ্চলের বাইরে আমেরিকা শিল্পায়ত তখন আমি এমন অঞ্চলের কথাও ভাবি যে অঞ্চল প্রায় সামগ্রিকভাবে কৃষিকর্মে নিবেদিত, কারণ মার্কিন কৃষিজীবীদের মানসিকতা শিল্পপতির। তারা অত্যন্ত আধুনিক যন্ত্রপাতি কাজে লাগায়; রেলওয়ে এবং টেলিফোনের উপর তারা খুব বেশি নির্ভরশীল। এই কৃষক দূরের বাজার-ঘাট সম্পর্কে খুব সচেতন, কারণ এসব বাজারে তার পণ্য যায়; সে আসলে পুঁজিবাদী, এমন হতে পারত যে সে অন্য কোনো ব্যবসায় নিয়োজিত। ইউরোপ বা এশিয়ায় আমরা যে ধরনের কৃষক দেখি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার অস্তিত্ব নেই। এটা আমেরিকার জন্য বিরাট আশীর্বাদ। এবং সম্ভবত ওল্ড ওয়ার্ল্ডের তুলনায় এক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শ্ৰেষ্ঠতা, কারণ অন্যান্য অঞ্চলের কৃষকরা নির্দয়, লোভী, রক্ষণশীল এবং অদক্ষ। আমি সিসিলি এবং ক্যালিফোর্নিয়ার কমলালেবুর কুঞ্জ দেখেছি; বৈসাদৃশ্য দুহাজার ব্যবধানের প্রতিনিধিত্ব করে। সিসিলির কমলালেবুর কুঞ্জ রেল স্টেশন কিংবা নদী-বন্দর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত, গাছগুলোতে বার্ধক্যের ছাপ, গাঁটযুক্ত, দেখতে সুন্দর; আবাদের পদ্ধতি একেবারে পুরাকালীন। লোকগুলো অজ্ঞ ও অর্ধ-বর্বর, রোমক ক্রীতদাস এবং আরব্য আক্রমণকারীদের সংকরজাতীয় উত্তরসূরি; গাছ সম্বন্ধে তাদের বুদ্ধিমত্তায় ঘাটতি তারা পুষিয়ে নেয় জীবজানোয়ারের প্রতি নির্দয় আচরণ করে। নৈতিক অধঃপতন এবং আর্থিক ব্যাপারে অযোগ্যতার সহযোগী হয় সহজাত সৌন্দর্যজ্ঞান যা সব সময় একজনকে মনে করিয়ে দিচ্ছে থিওক্রিটাস এবং হেসপিরাইডিসের উদ্যান সম্পর্কিত উপকথা। ক্যালিফোর্নিয়ার কমলালেবু কুঞ্জে এলে হেসপিরাইডিসের উপকথাকে সুদূর অতীতের মনে হয়। সবগুলো গাছ দেখতে একই রকম লাগে। যত্নের ছাপ সুস্পষ্ট, প্রতিটি গাছ সমান দূরত্বে লাগানো। সবগুলো কমলার আকৃতি সমান নয়। কিন্তু যন্ত্র দিয়ে অতি যত্নে বাছাই হবার পর দেখা যায় একটি বাক্সের সবগুলো কমলালেবু সমান আকৃতির। এগুলো উপযুক্ত জিনিসের সঙ্গে উপযুক্ত স্থানে আনা হয়, অতঃপর উপযুক্ত রেফ্রিজারেটর-গাড়িতে ওঠে এবং উপযুক্ত বাজার এদের শেষ গন্তব্যস্থল। যন্ত্র এদের গায়ে Sunkist কথাটা ছাপ মেরে দেয়। অন্যথায় এমন কোনো লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে ওদের উৎপাদনে প্রকৃতির কোনো হাত ছিল। উপরন্তু আবহাওয়া পর্যন্ত কৃত্রিম, কারণ যখন উদ্যান কুয়াশায় ছেয়ে যায় তখন উষ্ণ রাখা হয় ধোঁয়ার আবরণ সৃষ্টি করে। এই ধরনের কৃষিকর্মের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা পূর্বকালের কৃষিবিদদের মতো অনুভব করে না যে তারা প্রাকৃতিক শক্তিসমূহের দাস; বরং তারা নিজেদের প্রভু মনে করেন, প্রাকৃতিক শক্তিই তাদের ইচ্ছার কাছে নত হয়। ফলে ওল্ড ওয়ার্ল্ডে শিল্পপতি এবং কৃষিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে যে তফাত রয়েছে আমেরিকায় সে ধরনের তফাত লক্ষ্য করা যায় না। মার্কিনী পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ মানবিক; তুলনায় অ-মানবিক অঙ্গ তাৎপর্যহীনতায় তলিয়ে যায়। আমাকে সব সময় দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বলা হতো যে আবহাওয়া লোকগুলোকে পদ্মাভুকে পরিণত করেছে। কিন্তু আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে আমি এর কোনো প্রমাণ পাইনি। আমার কাছে তাদের মিনিয়াপলিস এবং ইউনিপেগের লোকদের মতোই মনে হয়েছে। যদিও দুটি অঞ্চলের মধ্যে আবহাওয়া, দৃশ্যাবলি এবং প্রাকৃতিক অবস্থায় প্রভেদ যতটুকু হওয়া সম্ভব তার কম নয়। নরওয়ে এবং সিসিলির লোকদের পার্থক্য বিষয়ে একজন যখন বিবেচনা করেন এবং এর সঙ্গে তুলনা করেন (ধরুন) উত্তর ডাকোটার একজন লোকের সঙ্গে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার। একজন লোকের প্রভেদের ঘাটতি, তখন একজন উপলব্ধি করেন ভৌত পরিবেশের দাস না হয়ে প্রভু হয়ে তারা মানবিক ব্যাপারে কতটা বিপ্লব সাধন করেছে। নরওয়ে এবং সিসিল, উভয়ের প্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে; তাদের প্রাক-খ্রিষ্টীয় ধর্ম ছিল, যে ধর্মে আবহাওয়ার প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া বাস্তব রূপ নেয়। তারপর খ্রিষ্টধর্ম আসে এবং অনিবার্যভাবে দুটি দেশে দুই ভিন্নরূপ পরিগ্রহ করে। নরওয়েবাসীরা ভয় করত বরফ ও তুষার; সিসিলির লোকদের ভয় ছিল লাভা ও অগ্নিগিরির প্রতি। নরক উদ্ভাবিত হয়। দক্ষিণাঞ্চলীয় আবহে; নরক যদি নরওয়েতে উদ্ভাবিত হতো, তাহলে সে নরক হতো। হিমশীতল। কিন্তু উত্তর ডাকোটা কিংবা দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় নরক আবহাওয়াগত ব্যাপার নয়; উভয় অঞ্চলে এটা টাকার বাজারে গুরুতর চাপ। এতেই বোঝা যায় আধুনিক জীবনে আবহাওয়ার গুরুত্বহীনতা।