অনেক বিখ্যাত মানুষের জীবন অগ্রগতি আর খ্যাতি মুলে রয়েছেন তাঁদের স্ত্রীরা। এসব মহিলারা অবলা গৃহবধূদের জীবনধারাকে নতুন অর্থ আর গৌরবে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। উদাহরণ হিসাবে একজন অবলা গৃহহ বলবো। প্রে
তিনি হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইস্ট ডি, আইজেন হাওয়ারের স্ত্রী। টুডেজ উইমেন’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রবন্ধে মিসেস আইজেন হাওয়ার গৃহবধু হিসাবে তার দৃষ্টিভঙ্গি আর অনুভূতির এক চমৎকার বর্ণনা করেছেন। তাঁর অভিমত হল এই যে, একজন মহিলা জীবনে যা কিছু দেয় তার মধ্যে সবেচেয়ে সেরা বস্তু হল কোনো গৃহবধূর জীবনের গৌরবময় ভূমিকা। কেননা, এটা অত্যন্ত বিবেচনা-প্রসূত আর মহত্ত্বের পরিচয় যে বাড়তি লোভ ত্যাগ করে একজন গৃহবধূ স্ত্রী হিসাবে সংসারের কাজ করাকেই অনেক বেশি প্রয়োজন বলেই ভাবেন। আর এটাই সংসারকে আনন্দময় করে তোলে তাতে সন্দেহ নেই। এর মধ্যে দিয়ে একজন স্ত্রী অনায়াসেই পেতে পারেন নিবিড় এক প্রশান্তি আর রামধনুর স্পর্শ।
একজন অবলা গৃহবধূ হিসাবে মিসেস আইজেন হাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এক সুখী আর সমৃদ্ধ কর্মময় চমৎকার গৃহাঙ্গন রচনা করতে। তিনি তাঁর স্বামীকে আমেরিকার সর্ব বৃহত্তম রাষ্ট্রীয় প্রাসাদ হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করতে সাহায্য করেছেন। স্ত্রীর সহায়তায় মি. আইজেন হাওয়ার হন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
২৭. ঘরের টান একান্তই মধুর
সারাদিন পরিশ্রমের পর আপনার স্বামী কী ধরনের পরিবেশে ফিরে আসেন বলুন তো? কোন্ ধরনের পারিবারিক পরিবেশ আপনার স্বামীকে সাংসারিক কাজে প্রেরণা যোগায় আর প্রত্যেকদিন সকালে নতুন উদ্যোগে কাজকর্ম সুন্দরভাবে করতে সহায়তা করে? এই প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় আপনি যা ভাবছেন তা কিন্তু ঠিক নয়-বরং তার নিজের সাফল্য আর ব্যর্থতার উপরেই সেটা বেশির ভাগ নির্ভর করে।
অবশ্য স্বামীর অবদান অনেকটা নির্ভর করলেও গৃহিণী হিসাবে আপনার অবদান ও ভূমিকাই প্রধান। হয়ে ওঠে। মনে রাখতে হবে, সবার উপরে আপনি যে উদাহরণ স্থাপন করবেন তার উপরেই প্রধানভাবে নির্ভর করবে আপনার গৃহের সুন্দর পরিবেশের সামগ্রীক রূপটি। একজন গৃহস্বামীকে উল্লেখযোগ্য দক্ষতার সঙ্গে সংসারের দায়িত্ব পালন করার জন্য পরিবারের কাছ থেকে তার কিছু মৌলিক চাহিদা পূরণ হওয়া চাই।
মনে রাখা দরকার যে, একজন সুগৃহিণী ও স্ত্রী হিসাবে এগুলো হচ্ছে স্বামী সংরক্ষণ ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধির পূর্ব শর্ত। এই শর্তগুলি কী এবারে আমরা আলোচনা করবো:
১। বিনোদন : আমরা যদি একজন মানুষকে লক্ষ্য করি তবে দেখতে পাবো যে, সে কাউকে যতই পছন্দ করুক না কেন, কর্মব্যস্ততার মুখে তার মধ্যে কিছু না কিছু স্নায়ুবিক উত্তেজনা দেখা দেবেই। স্নায়ুর উপরে যে চাপ পড়তে চায়, তা দূর করা সম্ভবপর হলে দেখা যাবে তার দেহ আর মন ও অনুভূতির সূক্ষ্মতন্ত্রতে নতুন নতুন প্রাণের শক্তি জন্ম নেয়। পরের দিন অদ্ভুতভাবেই তার দেহ হয়ে ওঠে সজীব, সতেজ আর কর্মক্ষেত্রে তা আনবে নতুন প্রেরণা।
সব মহিলারই কম বেশি বাসনা থাকে যে, তিনি হয়ে উঠবেন একজন অতি নিপুণ গৃহিণী। মনে রাখতে হবে, একজন পুরুষের জন্য এটা তখনই প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে যখন কোনো স্ত্রী ভেবে বসেন তিনি একজন আদর্শ গৃহিণী হয়ে উঠবেন।
জর্জ কেলি নামের একজন নাট্যকার ‘ক্রেগস ওয়াইফ’ নামে একটি নাটকের জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। এই নাটকটির আশ্চর্য জনপ্রিয়তার প্রধান আর অন্যতম কারণ হল এই যে, হ্যারিয়েট ক্রেগের মতো বহু মহিলাই পৃথিবীতে আছেন। হ্যারিয়েট ক্রেগ খুবই ঝকঝকে তকতকে ভাবের পরিবার পছন্দ করতেন। যেসব মানুষ তাদের জিনিসপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখতেন তাদের তার পছন্দ হত না বলে অভ্যর্থনা জানাতেন না। এমন কী নিজের স্বামীকেও যেন অনধিকারীর মতো ভয় করতেন। কারণ স্বামী সাজানো জিনিস ওলোট-পালোট করে ফেলতেন।
একটা কথা কী কারোর ওপর বিরক্ত হওয়ার আগে নিজের লঘু কোমল মনটাকে উন্মুক্ত করা উচিত। অবসাদ ও উত্তেজনা দমন করার প্রকৃষ্ট উপায় হল ব্যাপারটা সহজভাবে মেনে নেওয়া।
২। আরাম আর আয়েস : সাধারণত গৃহিণীরাই ঘর সাজানের কাজটি করে থাকেন। সুতরাং ঘর সাজানোর সময় তাদের মনে রাখতে হবে যে, সবরকম সাজসজ্জার ভিতরের কথাটি হল অনেক বেশি রকম স্বাচ্ছন্দ্য আর স্বাভাবিক বোধ করা। তাছাড়া স্বাচ্ছন্দ্য আর আরাম হচ্ছে পুরুষের কর্মক্ষম থাকার জন্য অন্যতম প্রধান প্রয়োজন।
যে কোনো স্ত্রীর উচিত কোনো পুরুষের সাজানো-গোছানো ব্যাপারটা কোন ধরনের হলে ভালো লাগে সেটা একবার যাচাই করে দেখা। কোনো অবিবাহিত পুরুষকে একবার ভালো করে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে।
একজন অবিবাহিত লোকের কথা আমার মনে পড়ছে। ভদ্রলোকের নাম ওয়াল্টার লিঙ্ক। তিনি আমেরিকার নিউ জার্সির স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানীর প্রধান ভূতাত্ত্বিক। চাকরির জন্য তাকে দেশের নানা দূর-দূরান্তে ভ্রমণ করতে হয়। তার বাড়ির ঘরটিকে অত্যাধুনিক বলা যায়। চাকরি উপলক্ষে নানা দেশের ভ্রমণ করার সময় তিনি যেখান থেকে যা পেয়েছেন তাই সগ্রহ করে এনে ঘর সাজিয়েছেন। মি. লিঙ্কের ঘরখানায় ঢুকলেই মন প্রসন্ন হয়ে যায়-যেন আরাম আর আয়েসেরই আলোয় তা ঝলমল করে। আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে, এই মানুষটি এখনও অবিবাহিতই রয়ে গেছেন। মজার ব্যাপারটা হল এই, তারা নিজেদের যেরকম আরামে রেখে দিতে পারেন পৃথিবীতে তেমন কম মহিলাই আছেন যারা তাদের এই আরাম আর আয়েস দিতে পারবেন।