নিশ্চয় নিশ্চয়।
বলে উঠল এমা। লুসির দিকে তাকালো সে।
–আমার সঙ্গে আসুন।
মিসেস ম্যাকগিলিকার্ডিকে নিয়ে লুসি চলে গেল।
এই তো কুইম্পার এসে গেছেন। বলল ব্রায়ান।
বাইরে গাড়ি থামার শব্দ হল। ঘরে ঢুকলেন হাস্যমুখ ডাঃ কুইম্পার।
-হ্যালো, এমা, কেমন আছ? সদাশয় ঈশ্বর, এসব কি
–আপনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে জমানো কেকটা তৈরি করেছি, বলল এমা, আজকে আপনার জন্মদিন বলেছিলেন
-আশ্চর্য, আমি তো ভাবতেই পারিনি, গত একযুগ কেউ আমার জন্মদিনের কথা মনে করেনি।
মিস মারপলের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, আপনার সঙ্গে সেদিন পরিচয় হয়েছিল, আশা করি সুস্থ আছেন?
মিস মারপল মাথা নেড়ে স্মিত হেসে জানালেন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।
–তুমি এ কদিন আমাকে দেখতে আসনি ডাক্তার। বৃদ্ধ ক্রাকেনথর্প ডাঃ কুইম্পারকে উদ্দেশ্য করে অনুযোগ করলেন। এসো, চা খাওয়া যাক–সবই তৈরি।
-হ্যাঁ, সকলে আরম্ভ করুন। আমার বন্ধু না হয় অস্বস্তি বোধ করবেন। বললেন মিস মারপল।
চায়ের টেবিলে গোল হয়ে বসে সকলে চা ও খাবারের সদ্ব্যবহারে মন দিলেন।
মিস মারপল মাখন রুটি শেষ করে স্যান্ডউইচ হাতে নিলেন।
–এটা মাছের, নিন, বলল ব্রায়ান, এটা বানাতে আমি লুসিকে সাহায্য করেছি।
–ওহ, এ বাড়ির খাবার সাবধান, বৃদ্ধ ক্রাকেনথর্প বলে উঠলেন, আমার দুই ছেলেকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। কে এসব করেছে জানা গেল না।
-ওঁর কথায় ভয় পাবেন না, বলল কেড্রিক, আমিও একখানা নিচ্ছি।
গোটা একখানা স্যান্ডউইচই সে মুখে পুরে দিল।
স্যান্ডউইচ চিবোচ্ছিলেন মিস মারপল। হঠাৎ তিনি হাঁসফাঁস করে উঠলেন। তার সমস্ত মুখ লাল হয়ে গেল। শ্বাস নিতে কষ্ট হতে লাগল। কোনো রকমে বলার চেষ্টা করলেন, গলায় কাঁটা ফুটেছে।
ডাঃ কুইম্পার উঠে এলেন। মিস মারপলকে জানালার দিকে মুখ করে বসালেন। তাকে মুখ খুলতে বললেন।
পকেট থেকে একটা কেস বের করলেন, তার ভেতর থেকে ছোট্ট একটা চিমটা বেছে নিলেন।
হাঁ মুখ হয়ে বসেছিলেন মিস মারপল। কুইম্পার সামান্য ঝুঁকে পেশাগত দক্ষতার সঙ্গে তার গলার ভেতর পর্যন্ত দেখার চেষ্টা করতে লাগলেন।
সেই মুহূর্তে দরজা খুলে মিসেস ম্যাকগিলিকার্ডি ঘরে ঢুকলেন। তার পেছনে লুসি।
সামনেই জানালার ধারে মিস মারপল চেয়ারের পেছনে হেলান দিয়ে বসে আর ডাঃ কুইম্পার তার গলা ধরে মাথাটা ওপরের দিকে কাত করে দিচ্ছেন। এই দৃশ্যটার দিকে চোখ পড়তেই মিসেস ম্যাকগিলিকার্ডি থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন। তারপর হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠলেন, এই তো সেই লোকটা-ট্রেনের সেই লোকটা।
তৎক্ষণাৎ এক ঝটকায় ডাক্তারের হাত ছাড়িয়ে উঠে দাঁড়ালেন মিস মারপল। দ্রুতপায়ে এগিয়ে এলেন বন্ধুর দিকে।
–লোকটাকে তুমি ঠিক চিনতে পারবে আমি জানতাম, বললেন মিস মারপল, এখন আর কিছু বলল না।
ডাক্তার কুইম্পারের দিকে তাকিয়ে তিনি বললেন, ডাক্তার, আপনি সেদিন যা ভাবতে পারেননি, তাই ঘটেছিল। ট্রেনে যখন একটি স্ত্রীলোকের গলা টিপে আপনি হত্যা করছিলেন, আপনার সেই কাজ পার্শ্ববর্তী ট্রেন থেকে এই বন্ধু দেখেছিলেন।
খুনে শয়তান, মিসেস ম্যাকগিলিকার্ডি তোমাকে দেখেছিল, বুঝতে পেরেছ?