নার্স হপকিন্সকে লেখা নার্স ও’ব্রায়ানের পোস্টকার্ড :
আজ সকালে চিঠিটা পেলাম। একেবারে কাকতালীয় ব্যাপার।
এলিনর কার্লিসলকে লেখা রডারিক ওয়েলম্যানের চিঠি :
১৫ই জুলাই
প্রিয় এলিনর,
এইমাত্র তোমার চিঠি পেলাম। না, ইন্টারবেরী বিক্রি করার ব্যাপারে আমার কোন মতামত নেই। এখানে বেশ ভালো গরম পড়েছে। তুমি ছাড়া আর সব মানুষকেই আমার কেমন যেন লাগে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে ডালমেশিয়ান উপকূলে যাব ঠিক করেছি। ২২ তারিখ থেকে আমার ঠিকানা হবে কেয়ার অফ টমাসকুক, বোভনিক। আমার তরফ থেকে যে কোন রকম সহযোগিতার প্রয়োজন বোধ করলে লিখতে কুণ্ঠা করো না। শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি।
-রডি।
মিস এলিনর কার্লিসলকে লেখা মেসার্স সেলডন, ব্রোদারউইক এণ্ড সেলডন কোম্পানীর মিঃ সেলডনের চিঠি :
১০৪, ব্রুস বেরী স্কোয়ার,
২০শে, জুলাই
প্রিয় মিস কার্লিসল,
হান্টারবেরীর জন্য মেজর সামারভিলের বারো হাজার পাঁচশো পাউণ্ড অফার আমার মতে যথেষ্ট ভালো। আজকাল বিশাল বাড়ি বিক্রি করা বেশ কষ্টসাধ্য। অতএব ওর প্রস্তাবটা মেনে নিতে পরামর্শ দিচ্ছি।
মেজর সামারভিল তিন মাসে জন্যে এখুনি নিতে চাইছেন, তার মধ্যে আইনের কাগজপত্র –লেনদেন সব পুরো হয়ে যাবে।
ড. লর্ড বলেছেন বুড়া জেরার্ড বোধহয় আর বেশীদিন বাঁচবে না। প্রবেট যদিও পাওয়া যায়নি তবে মিস মেরী জেরার্ডকে ১০০ পাউন্ড অগ্রিম দিয়ে দিয়েছেন।
ইতি
আপনার বিশ্বস্ত
এডমণ্ড সেলডন
মিস এলিনর কার্লিসলকে লেখা ড. লর্ডের চিঠি :
২৫শে জুলাই
প্রিয় মিস কার্লিসল,
বুড়ো জেরার্ড আজ মারা গেছে। এ ব্যাপারে আপনাকে কোনভাবে সাহায্য করতে পারি কি? আপনার বিশ্বস্ত
লিটার লর্ড
মেরী জেরার্ডকে লেখা এলিনর কার্লিসলের চিঠি :
২৫শে জুলাই
প্রিয় মেরী,
তোমার বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে অত্যন্ত দুঃখিত। মেজর সামারভিল বলে এক ভদ্রলোক হান্টারবেরীর বাড়িটা কিনতে চাইছেন। ওখান থেকে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি তোমার বাবার জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলা কি তোমার পক্ষে সম্ভব হবে? আশা করি তুমি ভালো আছ।
—এলিনর কার্লির্সল নার্স
হপকিন্সকে লেখা মেরী জেরার্ডের চিঠি :
২৫শে জুলাই
প্রিয় নার্স হপকিন্স,
বাবা সম্বন্ধে যা লিখছেন তার জন্য ধন্যবাদ। শেষকৃত্যের জন্য গেলে আপনার ওখানে কয়েকদিন থাকা সম্ভব হবে কি? যদি হয়, তবে উত্তর দেবার দরকার নেই।
আপনার স্নেহের
মেরী জেরার্ড
.
১.৭.১
২৮শে জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে কিংস আর্ম, হোটেল থেকে বেরিয়ে মেডেনস ফোর্ডের বড় রাস্তায় এসে এলিনর দেখতে পেল মিসেস বিশপকে।
এলিনর জানাল, মেজর সামারভিলকে বাড়িটা সে বিক্রি করেছে। মিসেস বিশপ বললেন, হান্টারবেরী অন্য লোকের হাতে চলে যাচ্ছে সেটা ভাবতেও খারাপ লাগে।
এলিনর বলল, সেটা ঠিক। কিন্তু এত বড়ো বাড়িতে একলা থাকা সম্ভব নয়। এরপর মিস এলিনর হান্টারবেরীর বাড়ির কোন পছন্দসই ফার্নিচার তাঁকে নিতে বলল। খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে মিসেস বিশপ ড্রইংরুমের দেরাজ লাগানো লেখার বড় টেবিলটা এলিনরের কাছ থেকে চেয়ে নিলেন।
এরপর এলিনর তাকে টেবিলটার সঙ্গে ম্যাচিং করা কিছু চেয়ার নিতে অনুরোধ করলেন, এবং দারুণ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে মিসেস বিশপ ওগুলো নিতে সম্মত হলেন।
মিসেস বিশপ এলিনরকে জানাল মেরীর বাবাকে গতকাল কবর দেওয়া হয়েছে। মেরী এখন নার্স হপকিন্সের বাড়িতে উঠেছে। হান্টারবেরীতে মালপত্র সরাতে আজ সকালেই তারা যাবে।
এলিনর মিসেস বিশপের সঙ্গে হ্যাঁণ্ডশেক করে এগিয়ে গেল দোকানের দিকে।
.
১.৭.২
হান্টারবেরীর বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে এলিনর কার্লিসল ঢুকলো। বাগানে এক সারি সুইট পী ফুলের পাশ দিয়ে হাঁটতেই ছোটমালী হরলিক সেলাম জানাল এবং চিঠি পেয়েছে জানাল।
এলিনর এগিয়ে যেতেই মালী তাকে ডেকে বলল, আপনি যদি দয়া করে মেজর সামারভিলকে একটু বলে দেন, ওঁরও তো মালীর দরকার হবে?
এলিনর জানাল সে আগেই একথা ভেবে রেখেছিল। এলিনর চিন্তা করতে লাগল রডি আর ও হান্টারবেরীকে ভালোবাসত। ছোটবেলায় তারা অনেকবার হান্টারবেরীতে এসেছে। মনের কোণে একটা প্রচ্ছন্ন বাসনা বাসাও বেঁধেছিল, ভবিষ্যতে কোনদিন এখানে ও থাকবে। মালির ছোট ছোট কথাবার্তা থেকেও সেরকম একটা ধারণা মনের গড়ে উঠেছিল। রডিও হয়তো দুজনে একসাথে এখানে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখত।
আজ এই মুহূর্তে রডি আর ও এই বাড়িতে থাকত। বাড়ির মালিকের অহংকার নিয়ে বাগানে, বারান্দায় গর্ব ভরে ঘুরে বেড়াতে পারত। সুখের সংসার হত কিন্তু কোত্থেকে বুনো গোলাপের সৌন্দৰ্য্য নিয়ে একটা মেয়ে ওদের সুখের আকাশে ধূমকেতুর মতো উদয় হল।
এলিনর মনে মনে ভাবতে লাগল, মেরী জেরার্ডের কতটুকু জানে রডি? কি দেখল ওর মধ্যে রডি? মেরী জেরার্ড যদি মরে যায়, তাহলে কি রডি একদিন স্বীকার করবে ভালোই হয়েছে, আমাদের মধ্যে কোন মিল ছিল না……হয়তো বিষাদের সুরে বলবে।
খুব মিষ্টি ছিল মেয়েটা..তাই হোক ওর কাছে, সুখের স্মৃতি হয়ে থাকে…সৌন্দর্য সব সয়মই সুখকর।
..মেরীর যদি কিছু হয় তবে রডি নিশ্চয়ই তার কাছে ফিরে আসবে। রডি তারই হবে। এ বিয়ের কোন সন্দেহ নেই।
বাড়িতে ঢুকে এলিনরের মনে হল কে যেন বাড়ির মধ্যে ওঁৎ পেতে বসে আছে ওর জন্যে…। ভাড়ার ঘরে রুটি, মাখন, মাছের কৌটো আর দুধের বোতল নামিয়ে রেখে এলিনর দোতলায় গেল মিসেস ওয়েলম্যানের ঘরে। বড়ো আলমারীর ড্রয়ারটা খুলে কাগজপত্র, জামা কাপড় আলাদা আলাদা করে সাজিয়ে রাখতে লাগল।