তিনি বললেন, অবশ্য এ ব্যাপারে ওর পক্ষে নিশ্চিত করে কিছু বলা অসম্ভব। কারণ উনি তো চোখে দেখতে পান না।
ভদ্রলোকের ছবি তাকে দেখানো হলে তিনি বললেন যে, এই ভদ্রলোককে তিনি আগে দেখেননি। তবে ভদ্রলোককে দেখলে বেশ সম্মানীয় বলা যায়।
হার্ড ক্যাসেল বললেন, মৃত্যু যেন একটা শান্তিপূর্ণ ব্যাপার। আমার মনে হয় না কি হতে চলেছে, সে সম্পর্কে ভদ্রলোকের কোনোরকম ধারণা ছিলো। মিস ওয়াটারহাউসকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, তিনি সেদিনের কথা যদি মনে করতে পারেন যে, তিনি বাইরে বা বাগানে গেছিলেন কিনা।
উনি একটু ভেবে বললেন, একটা বাজার মিনিট দশেক আগে তিনি বাগান থেকে ফিরে আসেন। তার ধারণা পেবমার্স তখন বাড়ি ফিরেছিলেন। কারণ তিনি দরজা খোলার আওয়াজ শুনেছিলেন। তখনই ওনার স্কুল ছুটির সময়।
হার্ড ক্যাসেল বললেন, ওর নিজের বিবৃতি অনুযায়ী মিস পেবমার্স দেড়টা নাগাদ আবার বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আর তিনটের সময়, তিনি বললেন যে, তাকে তিনি গেট দিয়ে যেতে দেখেছেন। মিস ওয়াটারহাউস বললেন, হার্ড ক্যাসেল ঠিক বুঝতে পারলাম না মিস। আপনি একটু আগে বললেন উনি গেট দিয়ে…।
তিনি বললেন তিনি বসার ঘরে ছিলেন ওখান থেকে রাস্তা ভালোই দেখা যায়। জানলার সামনে বসার ঘরে বসে চেয়ার নিয়ে টাইমস পড়ছিলাম। ওটার পাতা ওলটাবার সময় দেখা যায় পেকমার্স গেট দিয়ে ঢুকেছেন।
হার্ড ক্যাসেল বললেন, এটুকু শুধু বুঝলাম যে, মিস পেবমার্স শপিং করতে আর পোস্টঅফিসে যাবার জন্য বাইরে যাচ্ছিলেন। ওগুলোয় যেতে হলে ক্রিসেন্ট ধরে অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। সে সম্পর্কে অবশ্য আমারও একটা ধারণা ছিল। তিনি বললেন, কোনো সময় মিস পেবমার্স বেরিয়ে গেছিলেন আর কোনোদিকেই বা গেছিলেন। সে ব্যাপারটা একেবারেই মনে নেই। তিনি বললেন, প্রতিবেশীর ওপরে কোনোভাবে নজর রাখার অভ্যাস আমার নেই। তিনি তার নিজের ব্যাপার নিয়েই বেশি ব্যস্ত। আচ্ছা পেবমার্স কি আপনার সদরের গেট দিয়ে বেরিয়ে টেলিফোন করতে যাচ্ছিলেন, ওখানেই তো পাবলিক ফোন আছে।
হ্যাঁ, তেরো নম্বরের উল্টোদিকে। মিস ওয়াটারহাউস বললেন ঐ লোকটিকে তিনি দেখেননি। দেড়টা থেকে তিনটে পর্যন্ত প্রথমে তিনি টাইমস-এর ক্রসওয়ার্ড পাজল নিয়ে সময় কাটান। তারপর ঘর থেকে বেরিয়ে রান্নাঘরে যান। লাঞ্চের বাসনপত্র পরিষ্কার করতে বেশ কিছুক্ষণ সময় লাগে, মিস ওয়াটারহাউস ইনসপেক্টরের দিকে তাকিয়ে বললেন (একটু ভেবে নিয়ে)। তারপর তিনি চিঠি লেখেন। তারপর বিলের টাকা দেবার জন্য কয়েকটা চেক কাটি। এরপর গিয়ে হাজির হই ওপরে। এরপর সম্ভবত শোবার ঘর থেকে পাশের বাড়ির একটা গোলমালের শব্দ আমার কানে আসে। তিনি মেয়ের আর্তনাদ শুনেছিলেন। সে কারণে তিনি স্বাভাবিকভাবে জানলার কাছে হাজির হয়েছিলেন। তার চোখে পড়ে গেটের কাছে একজোড়া যুবক-যুবতী পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে আছে। তার মনে হচ্ছিল যুবকটি কোনো ব্যাপার নিয়ে মেয়েটির সঙ্গে তর্ক করছে। তারপর ঐ যুবকটি মেয়েটিকে গেটের পার্কের কাছে বসিয়ে দিলো। তারপর লম্বা লম্বা পা ফেলে ঢুকে গেলো বাড়ির ভেতরে, মিস পেবমার্সকে তিনি দেখতে চাইতেন না যদি না মেয়েটির চিৎকার তিনি দেখতেন। তিনি এসব ব্যাপারে তেমন একটা নজর দেন না। যখন পুলিশের গাড়ি এসে পৌঁছালো তখন ভাবলেন অস্বাভাবিক কিছু ঘটেছে।
এই ঘটনা দেখে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলো। তারপর ঘুরে হাজির হলেন পেছনের বাগানের দিকে। ওখান থেকে কিছু নজরে এলো না। যখন ওখান থেকে সামনের দিকে এগোন তখন দেখলেন যে ছোটোখাটো একটা ভিড় জমেছে। তার খুবই অদ্ভুত লাগছিলো।
গম্ভীরভাবে হার্ড ক্যাসেল বললেন, আর উল্লেখযোগ্য বলার কিছু নেই?
তিনি বললেন, নেই। সাম্প্রতিক তিনি ইনসিওরেন্সের ব্যাপারে বললেন তারা দুজনে মিউঁচুয়াল হেলথ অ্যাসিওরেন্স সোসাইটি থেকে ইনসিওরেন্স করিয়েছে। তিনি কারী নামটা জানেন না। তিনি মনে করেন, তার প্রকৃত নাম ওটা নয়।
অবশ্য প্রমাণ ছাড়া এটা বলা যায় না। তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। তার ভাই এসম্পর্কে কিছু জানে না। ও সাধারণত লক্ষ্য করে কিছু সেখানে। সেদিন সে লাঞ্চ করতে আসেনি। তার ছেড়ে দেওয়া হলো। দরজার কাছে একটা গলফ ছিলো। সেটা হাতে করে একবার তুলে দেখলো কলিন ল্যাম্ব। সেটা ভারী ছিলো। তাকে বললেন যে কোনো ঘটনার জন্য তিনি কেন প্রস্তুত, তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না, এটা এখানে কি করে এলো। কথাটা শেষ করে তিনি কলিন ল্যাম্বের হাত থেকে ওটা নিয়ে ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখলেন।
হার্ড ক্যাসেল বললেন যে, এইরকম মহিলার সঙ্গে তোষামুদ ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তা সঠিক নাও হতে পারে। মিস পেবমার্স পোস্টঅফিস আর শপিং-এ যাবার জন্য বেরিয়ে ছিলেন। তবে বেরিয়ে ডান দিকের বদলে বাঁ দিকে গেছিলেন। আর টেলিফোনের ব্যাপারটা। মিস মার্টিনডেলের কথা অনুযায়ী দুটো বাজতে দশে করা হয়েছিলো। তিনি বললেন, মিস পেবমার্স কেন ফোন করেন তা ভাবাটা অর্থহীন। তিনি যদি ফোন করেন তাহলে তিনি মেয়েটিকে ওখানে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। খুনী যদি অন্য কেউ হয় তাহলে কেন সে মিস পেবমার্সকে জড়াতে চাইছে। তিনি এখন এ পর্যন্ত কিছু জানেন না। যদি মিস মার্টিনডেল ওকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন তাহলে উনি অবশ্য বলতে পারতেন কণ্ঠস্বরটা মিস পেবমার্সের কিনা। ১৮ নম্বর বাড়ি থেকে এখনও কিছু পাওয়া যায়নি। দেখা যাক ২০ নম্বর থেকে তেমন কিছু পাওযা যায় কিনা।