ডিক সগর্বে বলে ওর দিকে তাকালো, ভালো নয়। একটা ছোটো ব্যাপার আমাকে চমকে দিয়েছিলো। কথাটা বলে আমি আমার ওয়ালেটটা বের করলাম। ওর ভেতর থেকে একটুকরো চিরকুট বের করলাম তারপরে। হোটেলে ব্যবহৃত একটুকরো কাগজ ওটা। তাতে একটা স্কেচ অংশ। হার্ড ক্যাসেলের হাত দিয়ে বললাম, হ্যাঁন বিউরি নামে এক যুবকের ওয়ালেট ছিলো না। লারকিনের মামলায় হ্যাঁন বিউরি অনেক কাজ করেছিলো। যুবক বেশ ভালোই ছিলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় ও লন্ডনে গাড়ি চাপা পড়ে। গাড়িটার নম্বর কেউ লক্ষ্য করেনি। এই স্কেচটার অর্থ কি তা আমি জানি না। কারণ হ্যান বিউরি গুরুত্বপূর্ণ না হলে স্কেচটা করতো না। কোনো একটা ভাবনা নিশ্চয়ই ওর মনে এসেছিলো। কিংবা কিছু শুনেছিলো অথবা দেখেছিলো! একষট্টি আর ওর নিচেশব্দটা লেখা। তার তলায় একটা মুন অথবা ক্রিসেন্ট। এর কি কোনো যোগ আছে; হ্যাঁন বিউরির দায়িত্বটা সে নিয়েছে। সে নিশ্চিত একটা কিছু আছে যা আমাকে খুঁজে বের করতে হবে। আমি এখনও জানি না একষট্টি সংখ্যার মানে কি কিংবা ঐ এম-এর অর্থ। তারপর বললাম, আমি পোর্ট লিবিউরিকে মাঝখানে রেখে তার বাইরে বৃত্তাকারে কাজ করে চলেছি। এই হলো ব্যাপার। এখানে মাত্র একটা ক্রিসেন্ট আছে। সেটা হলো উইলিব্রাহাম ক্রিসেন্ট। আমি সেজন্যই ঐ একষট্টি নম্বরটা খুঁজে বের করার জন্য ওখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। দেখতে চেয়েছিলাম যা ভেবেছি তা সত্যি কিনা। কিন্তু ঐ জায়গাটা শেষপর্যন্ত খুঁজেই পেলাম না।
কলিনকে বলা হলো, আগামীকাল উনিশ নম্বর দুদিকের দুটো বাড়িতে অনুসন্ধান করবো। বাড়ির কেউ উনিশ নম্বরে ঢুকতে দেখেছে কিনা তা-ও জিজ্ঞেস করে দেখবো। উনিশ নম্বরের একেবারে পেছনের বাড়িটাও এর সঙ্গে থাকবে। এই বাড়িটার যার সঙ্গে বাগান যুক্ত। তার ধারণা ঐ বাগানটা ঐ উনিশ নম্বরের পেছনটায় হবে। যদি চাও তবে তোমাকে আমি সঙ্গে নিতে পারি।
ল্যাম্বকে বলা হলো, তিনি তোমার সার্জেন্ট হবে। তুমি শর্টহ্যান্ড নোট নিও। পরের দিন নটা নাগাদ আমি পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হবো।
কদিন পর ডিক বললো যে, ঘড়িগুলোর মধ্যে চামড়ার ট্রাভেলিং ক্লক যেটায় রোজমেরী লেখা আছে। ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত।
ডিক বললেন, অনেকেই ভীষণ বোকা ধরনের, তাদের মধ্যে আমি একজন। ঘড়িগুলো কাল বসার ঘরেই ছিলো। আমি মিস পেবমার্সকে ছুঁয়ে দেখতে বলেছিলাম। যদি ঘড়িগুলো তার পরিচিত হয়। অবশ্য উনি চিনতে পারেননি, এরপর পুলিশের লোকেরা এসে পৌঁছেছিলো লাশটা নেবার জন্য। ব্যাপারটা দেখাশোনা করার জন্য তিনি গেটের কাছে গেলেন। তারপর আবার ভেতরে গিয়ে ঐ মিস পেবার্স-এর থেকে ঘড়ি আনতে চেয়েছেন। ভদ্রমহিলা বললো, যেহেতু ঘড়িগুলো তার নয় সেহেতু রসিদ নেবার কোনো প্রয়োজন নেই। এর পর তিনি তার কাছে গেলেন। তার সঙ্গী এডওয়ার্ডকে ঘড়ি নিয়ে আসতে বলা হলে সে ঐ কাকাতুয়া ঘড়ি, গ্র্যান্ডফাদার ক্লকটা ছাড়া ওখান থেকে তিনটি ঘড়ি আনে। প্রকৃতপক্ষে চারটি ঘড়ির কথাই উল্লেখ করা উচিত ছিল। কাজটা করতে বেশি সময় লাগেনি। মানে আমি বলতে চাইছি, মিস পেবমার্সও এটা করে থাকতে পারেন। আমি চলে আসার পরেই উনি ঘড়ি দুটো নিয়ে রান্নাঘরে চলে গেছিলেন।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, জানতে চাইলাম, এটা সে করবে কেন। এই বলে আমি বললাম, মেয়েটি তার গ্লাভস নিতে ভেতরে যেতে চাইছিলো সে-ই একমাত্র জানে কোথায় সে তার গ্লাভস রাখে। সম্ভবত সে ভেতর থেকে মেয়েটার গ্লাভস তার ব্যাগে পুরে এনেছিলো।
হার্ড ক্যাসেল বললেন যে, মেয়েটির প্রেমে তুমি পড়েছে, নারীরা যে কোনো পুরুষকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহার করে, এখন শুধু তোমাকে ওকে নিরাপত্তা দেওয়াটা বন্ধ করতে হবে। তুমি নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝতে পেরেছো ঐ মেয়েটি খুনের সঙ্গে জড়িত।
তিনি কাজ করার সময়ে কি দেখেছি তা শুনলে তুমি রীতিমতো অবাক হয়ে যাবে। আমি গম্ভীর হয়ে বললাম। জীবনে আমি দেশ বিদেশের লোকেদের সঙ্গে অনেক চমকপ্রদ কাজ করেছি। আমি নারীর প্রলোভন থেকে মুক্ত।
হার্ড ক্যাসেল বললেন, শীলা ওয়েব সম্ভবত তোমার ধরনের মানুষ। হার্ড ক্যাসেল বললেন, শীলা যাতে সন্দেহ না হয় সেই জন্য সে মৃতদেহের কাছে গেছিলো। মৃতদেহটা পেবমার্সের বাড়ি থেকে পাওয়া গেছে। তাই ঐ দুজনকে সন্দেহের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যায় না।
আমি বললাম যে, ঐ ঘরে আমি গেছিলাম। তিনটে বাজার পর গেছিলাম। কারী সম্পর্কে ক্যাসেল কিছু জানেন না। হার্ড ক্যাসেল নিস্পৃহভাবে ওর কোনো অস্তিত্ব নেই। আসলে এইরকম কোনো ব্যক্তি নেই।
ঠিক আছে। মেট্রোপলিটন ইনসিওরেন্স কোম্পানি থেকে কি জেনেছো। কেননা ওরকম নামের কোনো অস্তিত্ব নেই। এমন কি কারী যে ডেনভার স্ট্রিটে থাকে তার কোনো অস্তিত্ব নেই। অতএব সাত নম্বর কি অন্য কোনো নম্বরের অস্তিত্বের কথা বলাই বাহুল্য। ক্যাসেল বললো, লোকটা ভুয়ো পরিচয় দিয়ে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। এ ভাবেই বিভিন্ন বাড়িতে নিজেকে পরিচিত করে তুলেছে। এরপর প্রতারণা করা খুব সোজা। ওর আঙুলের ছাপ পাওয়া গেছে। দেখতে হবে লোকটার কোনো রেকর্ড আছে কিনা। যদি তাই হবে তবে তা হবে আমাদের অনুসন্ধানের পক্ষে বড়ো একটা পদক্ষেপ। যদি তা না হয় তাহলে ব্যাপারটা জটিল হবে।