পোয়ারো দেখলেন একবার, বললেন যেমন চারটে ঘড়ি। প্রতিটি ঘড়ির সময় সঠিক সময় থেকে এক কাটা এগিয়ে রয়েছে। মালিকের অমতেই সেগুলোকে আবার ঘরের মধ্যে এনে রাখা হয়েছে। অন্তত ঘরের মালিক মিস পেবমার্সের বক্তব্য সেটাই। তবে আমরা পরীক্ষা করে দেখার আগে পর্যন্ত কোনো কিছু বিশ্বাস করতে পারি না। মোটামুটি দশটা বাজতে মিনিট কয়েক আগে সেক্রেটারিয়াল এজেন্সির একটি ফোন বেজে ওঠে। শীলা যখন গেল মৃতদেহ দেখতে পেল। এরপর তার যুবকের সঙ্গে দেখা হলো।
পোয়ারো বলে উঠলেন, কলিন যখন ঘটনাটা বলে তখন আমি থ্রিলারের গন্ধ পেয়েছিলাম। একজন মহিলা তার সৌন্দর্যের লুকানো একমাত্র মেকআপ দিয়ে। সে জানে লোকে তার পোশাক দেখবে। সুতরাং কলিনকে আমি বলতে পারি একজনের থেকে দৃষ্টিটা সরালে এতদূর ঘটনার সমাধান ঘটবে। যে লোকটা খুন হয়েছে একজন ব্ল্যাকমেলার হতে পারে। তবে শোনা কথার পরেই বলা যেতে পারে ভদ্রলোক খুবই সাধারণ ব্যক্তি।
হার্ড ক্যাসেল বললেন, ঠিক তাই। এর মৃত্যু আরো কারো সুবিধা করে দিতে পারে।কলিনকে বলেছিলাম যে প্রতিবেশীদের কাছে যাও যাতে পেবমার্সের সম্পর্কে জানা যায়। অতীত ব্যাপারগুলো জানতে পারলে সুবিধা হয়। সাধারণভাবে কথাবার্তা বললে সে সবরকম সতর্ক থাকে না। তিনি বললেন ঐ বাড়ির পাশাপাশি হেমিং, ব্ল্যাণ্ড দম্পতি, ম্যাকনটন বা মিস ওয়াটারহাউস এদের মধ্যে যে কেউ খুনী হতে পারে। তবে আরো গুরুত্বপূর্ণ যারা ঐ সময় ওখানে হাজির হন। যেমন শীলা ওয়েব। সে আগে থেকেই ভদ্রলোকের সঙ্গে কৌশলে দেখা করার পর ও সেইসময় লোকটাকে খুন করে। পোয়ারো কলিনকে খুনী সন্দেহ করেন না। ঐ ব্যক্তিকে নিশ্চয়ই কেউ খুন করতে চেয়েছিল। উনি যদি ব্ল্যাকমেলার হতেন তাহলে দেখতে হত কে তার শিকার ছিল। যদি ধনী ব্যক্তি হত তাহলে তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে খুঁজে দেখতে হত। যদি লোকটার পরিচয় জানতে না পারি তাহলে আশেপাশে এমন একজনকে খুঁজতে হবে যার ওকে খুন করার পেছনে একটা উদ্দেশ্য আছে। কাজটা বেশ কঠিন।
পোয়ারো বললেন, মিঃ কারী কোথা থেকে এসেছেন সেটা প্রথমেই জানা দরকার। এরপর জানতে হবে তিনি কিজন্য সেখানে এসেছিলেন। মিসেস হেমিং অন্যদের ব্যাপার বোঝার একটা ক্ষমতা আছে।
মিঃ কারীর থেকে একটা কার্ড ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায়নি। ওর আসল পরিচয় জানা যায়নি। লোকটার কেউ পরিচিত পাওয়া যায়নি। তার মতে লোকটি ইংরেজ নন আর আগন্তুক। এই অপরাধ বেশ পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।
অনেক ব্যক্তিই মিঃ কারীকে খুন করতে পারে। এডনা মেয়েটির কথাই ধরা যাক। ক্যাভেনডিসে আটজন মেয়ে কাজ করে। চারজন সেদিন দূরে চলে যায়। ওদের লাঞ্চের সময় ১২.৩০-১.৩০ পর্যন্ত এটা প্রথম সময়। দ্বিতীয় সময় বাকি চারজন মেয়ে গেছিল। এডনা, শীলা, জ্যানেট, মাউরিন। গর্তে পড়ে এডনার হিল খুলে যায়। ও অফিসে এরপর ফিরে আসে। এডনা পরে শীলার সঙ্গে দেখা করতে চায়। কিন্তু এতে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ নেই।
মিস মার্টিনডেল ব্যুরোতে ফোন করে ব্যাপারটা উল্লেখ করেছিল। মিস পেবমার্স নামে কেউ ফোন করেনি। এটা মার্টিনডেলের অনুমান। মিস মার্টিনডেল জানতেন না এডনা ফিরে এসেছে। যতটুকু তার প্রয়োজন তাছাড়া ঠিক ১.৫৯ মিনিটে একটা ফোন এসেছে। এরপর শীলা ওয়েবকে বলা হয়। সে অ্যাপার্টমেন্ট কথা শুনে চলে গেল। মিস পেবমার্স ফোনের ব্যাপারে অস্বীকার করেন। মিস মার্টিনডেল, এডনা জানত ফোনটা ১.৫০ মিনিটে এসেছিল। তাই ঘটনাটা নিয়ে এডনা ভাবছিল এবং এ বিষয়ে সে শীলার সঙ্গে কথা বলবে।
ইনকোয়েস্টের দিন মিস পেবমার্সের কথা শুনে এডনা ইনসপেক্টরের সঙ্গে দেখা করতে চায়। সে যাইহোক ব্যাপারটা মিস মার্টিনডেলের কানে পৌঁছায়। তিনি তখন এডনাকে উইলিব্রাহাম ক্রিসেন্ট পর্যন্ত অনুসরণ করেন। এডনা মার্টিনডেল অভিনয়ের আশ্রয় নেন। মিস মার্টিনডেল এডনাকে ফোন করার জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকে। সেই সময় ওড়নার ফাস দিয়ে তাকে তিনি খুন করেন। এটা একটায় ঘটে। হার্ড ক্যাসেল বুঝতে পারছেন না এটা কেন তিনি করবেন।
পোয়ারো মনে করেন তিনি অত্যন্ত জ্বর ও বাস্তববাদী।
পোয়ারো বললেন, মিঃ ব্লাণ্ড বলেছেন যে তার বোন এখানে থাকে বলে তিনি ক্রাউডিয়ানে থাকতে ভালোবাসেন। আসলে তার কোনো বোন ছিল না। কাকার সম্পত্তি তিনি পেয়েছেন। আসলে ধরা যাক একদিন অসহায় উকিলের চিঠিতে মিঃ ব্ল্যাণ্ড অনেক সম্পত্তির অধিকারী হলেন। আসল চিঠি আসল লোক না পেয়ে নকল তোক পেলো। কে জানে উনি কি জন্য আপোস করেছিলেন। পোয়ারো তার রহস্য বই থেকে যা পেয়েছেন এই কাহিনী থেকে মার্টিনডেল আইডিয়া নিয়েছিল। তার কাছ থেকে নোটটা নিল হার্ড ক্যাসেল। পোয়ারো বললেন, তিনি যদি কোনো কাজে আসতে পারেন খুশী হবেন।
পোয়ারো বললেন, খুনের কেসটি সহজ ও ব্যাখ্যা সহজ।
.
২৮.
আরো একবারের জন্য আমি ক্রিসেন্টে এলাম। পশ্চিম দিক বরাবর এগোতে লাগলাম। পেবমার্সের বাড়িতে ঢুকলাম। সম্ভবত খুনের ঘটনায় আমার দৃষ্টি অন্য জায়গায় পরে।
আমি বললাম, আমি হেড-কোয়ার্টারের আশ্বাস পেয়ে গেছি। সেখানে সমস্ত পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আপনি ব্রেল পদ্ধতিতে সমস্ত রেকর্ড রাখেন।