ডেডবডি দেখে তিনি বললেন, এটি হলো হ্যারি। অনেক বুড়িয়ে গেছে, সে ভুল করেনি। তিনি নিশ্চিত এটি তার স্বামী। তাকে তার বরাবর ভালোমানুষ বলে মনে হত। এখনও সেরকম আছে। এই ভদ্রলোকটির মধ্যে একটা খানদানি অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে সবসময় ফিটফাট পোশাকে থাকতো। সব কিছুর মধ্যে একটা বিশেষত্ব ছিল। মেয়েদের পেছনে সে বেশ সময় দিত। তাকে তার স্ত্রী এইজন্য সন্দেহ করতেন। তার স্ত্রীর মনে হয় মেয়ে নিয়ে তার কোনো ব্যাবসা ছিল।
মিসেস রাইভ্যাল বললো, একবার একটা দরকারে ও বাইরে গেছিল, তারপর কাজ শেষ করে ফিলে এলো। এসে আমাকে বললো খুব তাড়াতাড়ি ওখান থেকে চলে যেতে হবে। কোনো মেয়ের ব্যাপারে নাকি বিপত্তিতে পড়েছে। মেয়েটি নাকি একজন স্কুল শিক্ষিকা। ব্যাপারটার মধ্যে কোনো অশালীনতা থাকতে পারে
রাইভ্যাল পত্নী বললেন, মেয়েরা খুব তাড়াতাড়ি ওর প্রেমে পড়ে যেত। তারপর এনগেজমেন্ট। তারপর হ্যারি সবার কাছে অর্থ চাইতো। পেয়েও যেত খুব সহজে। তিনি এবার যে মেয়েটির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন সে সন্তানের মা হতে চলেছিলো। তাই তাকে প্রতারণা করা সহজ হয়নি। তার স্ত্রী তার প্রতি দুর্বল হয়ে তাকে বিয়ে করেন।
তিনি যখন তাকে বিয়ে করেন তখন তার নাম ছিলো হ্যারি ক্যাসলটন। ওর আসল নাম কিনা তা জানা যায় না। তারপরে এখনই চলে যেতে হবে বলতে তিনি বললেন যে তিনি যেতে চান না। তার হাতে বিন্দুমাত্র অর্থ ছিল না। শেষপর্যন্ত তার সঙ্গে দেখা হয়নি। তার আসল নাম ক্লোসিয়্যাপ ফ্লোরেন্স। তবে লোক তাকে ক্লোসি বা ফ্লো বলে ডাকে। তিনি এখন মাঝে মাঝে অভিনয় করেন। এছাড়া টুকিটাকি কাজকর্ম এদিক ওদিক করে বেড়ান। মিঃ ক্যাসলটন ক্রিসেন্টে কেন এসেছিলেন এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। সে এতবছর কি করেছে ফ্লো কিছু জানে না।
তার মতে হ্যারি খুব বুদ্ধিমান। সে এমন কিছু করতে চায় না যাতে ওর বিপদ ঘটে। তার ধারণা। সে মেয়েদের নিয়ে কোনো জালজোচ্চুরি করত। মিসেস রাইভ্যালকে পেরমার্সের বাড়ির ঘড়িটা দেখানো হলে তিনি দেখলেন এবং না বললেন। তার স্বামীর সঙ্গে রোজমেরীর সম্পর্ক সম্বন্ধে জানানো হলে তিনি বললেন ওর নাম রোজমেরী। তবে উনি কারো কথা ভাবতে পারছেন না। হার্ড ক্যাসেল তাকে বিদায় নিতে বললেন। এবং বলতে বললেন যে ইনকোয়েস্টে শনাক্তকারিণী হিসেবে সাক্ষী দিতে। এবং কয়েকটা মামুলি কথা আর হার্ড ক্যাসেল বিদায় নিলেন।
.
২১.
কলিন ল্যাম্বের বিবৃতি
এরকুল পোয়ারো বললেন, তাহলে তুমি সাফ হতে পারলে। পোয়ারো গম্ভীরভাবে বললেন যে, একজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দ্বারা কৌশলে খুন।
হ্যারি ক্যাসলটনকে তার স্ত্রী শনাক্ত করেছেন। ভদ্রমহিলার কথা বলে পোয়ারোর কিছু মনে পড়ে যাচ্ছিলো। আমি বললাম যে, লন্ডন থেকে ফিরে মেরলিনা সম্পর্কে জানাব। তিনি বললেন তার প্রয়োজন নেই। পোয়ারো তার ব্যাপারে উৎসাহী নয়।
এডনা সম্পর্কে পোয়ারো বললেন তার জুতোর হিল কোথায় কিভাবে ছিঁড়েছিল এ সম্পর্কে তাকে জানানো হোক। সেটা যত অকিঞ্চিৎকর হোক। অফিসের সামনে ঘটেছে। পোয়ারো এবারে জিজ্ঞাসা করলেন ও কিভাবে বাড়ি গেছিল। আমি তাকে ক্রাউডিয়ান যেতে বললাম। আসলে তার তখন মাথায় অন্য চিন্তা ঘুরছিলো বলে তিনি ঐ দিকে মন দিতে পারছিলেন না। হার্ড ক্যাসেলের বাড়ি গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলাম।
হার্ড ক্যাসেল বললো যে, লোকটিকে প্রত্যেক নারী বিশ্বাস করতো তারপর অর্থলগ্নীর ব্যাপারে নানা পরামর্শ দিতো। ধনী মহিলাদের সঙ্গে বিয়ে করে সে এই টাকার খেলা খেলতো। তারপর একদিন হাওয়ায় মিলিয়ে যেত। নিজের নাম পাল্টাতে ও ওস্তাদ ছিলো। যে সব মেয়েরা ওর কাছে আটকে যেত তারাও বলতো না। লোকটা কোনোদিন কামরার সামনে দাঁড়াতাম। পনেরো বছর আগে একবার অদৃশ্য হয়ে গেছিল তখন অনেকেই ধরে নিয়েছিলো ও মারা গেছে। অবশ্য গুজব ছিল ও জেলে।
একজন মহিলা তাকে ভুলতে পারেনি। মহিলার স্মৃতিশক্তি খুব ভালো। আর এরকমই কোনো মহিলা তাকে এখনও ভুলতে পারেনি এরকম কোনো মহিলা যদি অন্ধ হয়ে যায়।
মৃতের স্ত্রী দেহপসারিণী। তবে সে কোনো অপরাধমূলক ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েনি। ঘড়ির ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না করলেও হার্ড ক্যাসেল ওর ইঙ্গিতটা বুঝতে পারলেন।
.
২২.
স্টেশনের কাছেই একটা হোটেলে ছিলাম। ঠিক দশটা নাগাদ অন্য একটা নামে ক্যাভেনডিস ব্যুরোতে ফোন করে শীলাকে ডাকা হল। আমাকে দেখামাত্রই চমকে উঠলো, আপনার এটা করা উচিত হয়নি।
শীলা ওয়েব সোজা হোটেল এসে উপস্থিত হলো। তাকে নিয়ে বাটার ক্যাফে এসে উপস্থিত হলাম।
শীলার দুচোখে কালো ছাপ। তাকে আমি বললাম, আমি বাইরে আবার ফিরে যাচ্ছি। হার্ড ক্যাসেল সম্পর্কে আমি জানালাম যে, ওটা সন্দেহের চোখে দেখা ডিটেকটিভের অভ্যাস। কেউ হয়তো ঘটনাক্রমে শীলাকে খুনে জড়িয়ে দিয়েছিলো। শীলার কণ্ঠস্বর ফোনে ছিলো না কেননা সে ফোন করেনি।
শীলাকে যখন আমি সত্যি কথা বললাম সে বললো যে, হয়তো কোনো সাধারণ কারণে তুমি সেদিন ফোন করতে পারো। যখন সে দৌড়ে আমার কাছে এসেছিল সে কি মৃতদেহ ছাড়া আর কিছু দেখেছিল তা আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
শীলা বললো, আর কিছু সে দেখেনি। সে রোজমেরী লেখা ঘড়িটা স্পর্শ করেনি। আসলে শীলা গ্লাভস আনার ভঙ্গি করে ভেতরে গিয়ে রোজমেরী ঘড়িটা তুলে আনে। সেদিন গ্লাভস পরার কোনো কথা ছিল না। শীলা এই কথার সম্মতি নিয়ে বলল, রোজমেরী নামটা তার।