মিস ওয়াটারহাউসকে বললেন হার্ড ক্যাসেলকে যেন তিনি সঠিক উত্তর দেন। যে মেয়েটি খুন হয়েছে তাকে হয়তো অনেকবার তিনি দেখেছেন কিন্তু মনে করতে পারছেন না। কোনো মেয়েকে তার দরকার লাগেনি। খুন হবার আগে তার সঙ্গে তার কোনো দরকার হয়নি। তার গেটের কাছে কেউ আসেনি। তিনি বললেন তার পোস্টবক্সে যদি কেউ কোনো কাগজ ফেলে যান তার জন্য তিনি দায়ী নন।
হার্ড ক্যাসেল বললেন, টেলিফোনের ব্যাপারটা আগে বলা যায়। তিনি বলেছিলেন তার টেলিফোনটা খারাপ হয়ে গেছে। তার এক্সচেঞ্জ অনুযায়ী তা ঠিক নয়।
হার্ড ক্যাসেল মনে করেন মেয়েটি এখানে এসেছিলো এবং ক্রিসেন্টে কারো সঙ্গে দেখা করতে গেছিল।
পেবমার্স একটা টাইপিস্ট মেয়েকে ডেকে পাঠিয়েছেন। তবে ওয়াটারহাউস এটা মনে করেন না মিস পেবমার্স খুনটা করেছেন। অনেকেই ফোন করে অর্ডার করে এবং পরে তার অস্বীকার করে। নিছক মজা করার উদ্দেশ্যে হবে এটা।
এরপর ডিটেকটিভ হার্ড ক্যাসেল ক্যাভেনডিস ব্যুরোতে এসে পৌঁছলেন। মার্টিনডেলকে জিজ্ঞাসা করে কিছুই পাওয়া গেল না। ওর অনুমতি নিয়ে মাউরিন নামে মেয়েটিকে জেরা করার সময় জানা গেল যে ও কাজকর্মের মধ্যে কিছু গুলিয়ে ফেলতো। এছাড়া খুব মন্থর স্বভাবের ছিলো। মেয়েটি বাইরে আসে কেনার জন্য। বাইরে গিয়ে জানতে পারে মেয়েটি খুন হয়েছে। জ্যানেট নামের মেয়েটি বুঝতে পারছে না তার খুন হওয়ার ব্যাপারটা। মেয়েটির সঙ্গে তার কোনো বিশেষ বন্ধু ছিল না। মিস ওয়েব যে কারফিউ হোটেলে মিঃ পার্ডির কাছে কাজ করছে, তারা বললো। হার্ড ক্যাসেল বিদায় নিলেন।
তিনি কারফিউ হোটেলে প্রফেসার পার্ডির কাছে এসে পৌঁছলেন। শীলা ওয়েব খুনের ব্যাপারটা শোনেননি। শুনে সে আতঙ্কিত বোধ করলো। সে এমন কিছু বলতে পারলো না যে খুনের ব্যাপারে সাহায্য হতে পারে।
.
১৯.
কলিন ল্যাম্বের বিবৃতি
আমি লন্ডনে গিয়ে প্রথমেই দেখা করলাম কর্নেল বেকের সঙ্গে। সবকিছু রিপোর্ট করলাম ওকে। তাকে বললো যে কাগজপত্র উদ্ধার করতে পারলে যোগাযোগ করবেন। আর মিঃ র্যামসে সম্পর্কে যতটা পারেন খোঁজ নিন।
কর্নেল বললেন, ডায়না লজকে আমার ঘাঁটি বলে মনে হয়। ম্যাকনটনের ব্যাপারে তেমন উৎসাহ পাচ্ছি না। উনি একজন রিটায়ার্ড প্রফেসর। বেশ ব্রিলিয়ান্ট বলা যায়। তিনি তার পুরানো বন্ধুদের থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। আমার কাছে সব ব্যাপারটা সন্দেহজনক। তার দিকে তাকিয়ে কর্নেল বললেন, এরপর আপনাকেও সন্দেহ করতে পারি। আমি ওর কথা শুনলাম। তারপর ওর কাছ থেকে চলে এলাম।
আমি প্রথমে এরকুল পোয়ারো সঙ্গে দেখা করেছিলাম। কলিন তোমাকে যেন হতাশ মনে হচ্ছে। আমি ক্লান্ত ছিলাম। আমি বললাম, ক্রাউডিয়ানের খুনের খবর কি আপনি চোখ বুজে প্রশ্নের জবাব দেবেন। পোয়ারো সব কিছু উৎসাহের সঙ্গে পড়েছেন। এরকুল পোয়ারো বললেন, তোমার একমাত্র কাজ হলো প্রতিবেশীদের সঙ্গে আরো বেশি কথা বলা। কেউ কেউ সবসময়েই কিছু না কিছু দেখতে পায়। এটা স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার।
আরো একটা খুন হয়েছে তাকে বলা হলে তিনি বললেন যে এত তাড়াতাড়ি ব্যাপারটা ঘটলো। এছাড়া তিনি নানাভাবে প্রশ্ন করে খুঁটিনাটি জেনে নিলেন। উনি বললেন, মনে রাখবে চার তিন শূন্য বা চারশো তিরিশ। এটা একটা প্যাটার্ন।
পোয়ারো বললেন যে, ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবেই আরো পরিষ্কার করে যাচ্ছে যে খুনী একথা বলতে পারে না।
পোয়ারো বললেন যে, তুমি যখন এখান থেকে চলে যাবে তখন আমি কয়েকটা জিনিস চেষ্টা করতে চাই। তুমি কি অনুমতি দেবে।
আগামীকাল আমি মিস লেমনকে নির্দেশ দেবো পুরানো আইনজীবী বন্ধুকে চিঠি লিখতে। নাম মিঃ এনডার বাই। এছাড়া ওকে আমি সামারসেট হাউজের ম্যারেজ রেকর্ডটা দেখতে বলবো। নিশ্চয়ই ও আমাকে একটা বিশেষ ওভারসীজ কেবল পাঠাবে।
আমি আপত্তি জানালে ব্যাপারটা ভালো হবে বলে আমার মনে হচ্ছে না। আপনি নিশ্চয়ই শুধু বসে বসে ভাববেন না। পোয়ারো হেসে বললেন, তোমাকে যেটা করতে হবে তা হলো আমার জবাবটা ঠিকমতো পৌঁছেছে কিনা দেখা। আমাকে থামিয়ে দিয়ে পোয়ারো বললেন, আমি জানি।
পোয়ারো বললেন যে লোকটি প্রাইভেট ডিটেকটিভ। পোয়ারো ভাবগম্ভীর গলায় বলে উঠলেন আবৃত্তির ঢঙে
এসো, এসো এসে
খুন হও, শেষে।
বলে পোয়ারো আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন একবার।
.
২০.
ডিটেকটিভ ইনসপেক্টর হার্ড ক্যাসেল ডেস্কের ক্যালেন্ডারের দিকে তাকালেন। ঠিক তিনটে দিন অতিক্রান্ত হয়ে সেপ্টেম্বরের কুড়ি তারিখ। যতটা ভাবা গেছিল ততটা এগোয়নি। লোকটার পোশাক-আশাক থেকেও কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি।
খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেবার পরে চিঠি এসেছিলো অনেক, অবশ্য কোনোটাই কাজের চিঠি নয়। তারই মধ্যে একটা হার্ড ক্যাসেলের কৌতূহল জাগিয়েছে। ওর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তার আজ আসার কথা।
অবশেষে তিনি এসে পৌঁছলেন, মিসেস রাইভ্যাল। তিনি বললেন, বিব্রত হওয়ার কিছু নেই মিসেস রাইভ্যাল। এই দিক থেকে আমরা আপনার সাহায্য চাই।
ভদ্রমহিলাকে বললেন তিনি, আপনি তাহলে বলছেন বছর পনেরো হলো ওর সঙ্গে আর দেখা হয়নি।
মিসেস রাইভ্যালের সঙ্গে তার তিন বছর আগে বিয়ে হয়। তিনি সাদেকের বলে একটা এলাকায় থাকতেন। তিনি বলেছিলেন তিনি ইনসিওরেন্স এজেন্ট ছিলেন। কিন্তু এটা মিথ্যা কথা ছিল।