মিস পেবমার্স বলেন, ক্যাভেনডিস ব্যুরো মিস শীলাকে ফোন করার ঘটনা তিনি অস্বীকার করেন।
ডিটেকটিভ ইনসপেক্টর জানালেন, তিনি উনিশ নম্বর বাড়িতে গিয়ে একটা মৃতদেহ দেখতে পান। তিনি মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারেননি। সেজন্য তিনি ইনকোয়েস্টের মুলতুবি চান।
পোস্টমর্টেম করেছেন যে ডাক্তার রিগ তিনি বললেন যে, সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি মৃতদেহ পরীক্ষা করেন। তার অনুমান ভদ্রলোক ১.৩০-২.৩০ মধ্যে মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিসেবে তিনি বলেন ভদ্রলোককে পাতলা ধারালো একটা ছোরা দিয়ে খুন করা হয়েছে। এটাকে সম্ভবত বাঁকানো এগুলোকে ফ্রেঞ্চ কুকিং নাইফ বলা হয়। ছোরাটা ডগায় ঢুকে গেছিল। ছোরাবিদ্ধ হবার কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা গেছেন। ভদ্রলোকের দেহ পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন খুন হবার আগে ভদ্রলোক বিশেষ কোনো ড্রাগের প্রভাবে কোমায় ছিলেন। এটি অ্যালকোহল জাতীয় সম্ভবত ক্লোরাল হাইড্রেট, খাবার পরে ভদ্রলোক মাটিতে পড়ে অচেতন হয়ে যান।
তারপর সম্ভবত অচেতন অবস্থাতেই তিনি ছুরিবিদ্ধ হন। ডাঃ রিগ, অজ্ঞান হবার কত পরে তিনি খুন হন এটা সম্পর্কে সঠিক বলতে পারেননি। ওটা নির্ভর করছে ভদ্রলোকের মানসিক চেতনার উপর। আধঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিত ওর চেতনা ফেরেনি। লাঞ্চের কথা বললে উনি তা খাননি। কমপক্ষে অন্তত ঘণ্টাচারেক ভদ্রলোক কিছু খাননি।
এরপর আদালত মুলতুবি হয়ে গেলো।
ক্যাভেনডিস ব্যুরোর এডনা বেন্টও যথারীতি ওখানে উপস্থিত ছিল। সকালের দিকে ক্যাভেনডিস ব্যুরো বন্ধ হয়ে গেছিল। এডনাকে দেখামাত্রই মাউরিন বলে উঠলো, কি ব্যাপার এডনা, লাঞ্চের সময় আমরা কি ব্লু বার্ড-এ যাবো?
এডনা, শীলা খুঁজছিলো, মাউরিন বললো যে ওকে আগেই একটা যুবকের সঙ্গে দেখেছি। এডনা তাকে এগোতে বললো। সে এখন কানিং-এ যাবে।
এডনা ভিতরে ইনসপেক্টরের সঙ্গে দেখা করতে চাইলো। সে দেখলো ইনসপেক্টর হার্ড ক্যাসেল গভীরভাবে করোনার আর এলাকার চিফ কনস্টেবলের সঙ্গে পরামর্শ করছেন। পুলিশটি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে খুবই কি প্রয়োজন। এডনা বললেন যে আড়ালে আমি শুধু বুঝতে পারছি না মহিলাটি যা বলেছে তা কিভাবে সত্যি হতে পারে। কেননা আমি বলছি…।
এডনা প্রথমে গেল ফল মার্কেটে তারপর হাই স্ট্রিট ধরে ও এগোতে লাগলো। সে যতই ব্যাপারটা ভাবছিলো ততই যেন কেমন তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছিলো। নিজের মনে সে বললো ওরকম হতে পারে না। মেয়েটা যা বললো সেরকম মোটেই হতে পারে না।
হাই স্ট্রিট থেকে এবারে ফিরতে আরম্ভ করে আলবানি রোডে এসে উইলিব্রাহাম ক্রিসেন্টের দিকে এগোতে থাকলো এডনা। খবরের কাগজে পড়ে উত্তেজনা সারা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়েছে। সবসময়ই ঐ জায়গাটায় কেমন যেন একটা চাপা উত্তেজনা, এডনা বাড়িটার দিকে এগোলো।
বাড়িটার মধ্যে একজন ছুরিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। এটা ভাবতেই কেমন লাগছিল। সবজি কাটার ছুরি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিজন্য এখানে এসেছে সে ব্যাপারে আর কোনো খেয়ালই নেই। হঠাৎ কানের কাছে একটা কণ্ঠস্বর শোনামাত্র চমকে উঠলো ও। ঘাড় ফিরিয়ে দেখে ও রীতিমতো অবাক হয়ে গেল।
.
১৬.
কলিন ল্যাম্বের বিবৃতি
শীলা ওয়েব যখন আদালত থেকে বেরিয়ে এলো তখন ও সাক্ষী ভালোই দিয়েছে। আমি ওর পেছন পেছন বেরিয়ে এলাম। করোনার ভদ্রলোক ভালো।
ও জিজ্ঞেস করলো, এরপর কি হবে। আবার সাক্ষ্যের জন্য ইনকোয়েস্ট মুলতুবি হবে। সম্ভবত, এক পক্ষকাল কিংবা যতদিন না ভদ্রলোককে শনাক্ত করা যায়। আপনি কি মনে করেন লোকটাকে শেষ পর্যন্ত চিনতে পারা যাবে। আমার মনে হয় নিশ্চয়ই। আমি তার টাইপরাইটিং কনসার্ন বন্ধু শুনে তাকে নিয়ে রেস্তরাঁয় যেতে চাইলাম। শীলা তার কেনাকাটা আছে বলে চলে যেতে চাইলে তাকে আমি সমুদ্রের ধারে সেই জায়গায় বসতে যেতে বললাম। আমি সেখানে একা বসে বুঝতে পারলাম আমি মেয়েটাকে মন দিয়েছি।
আমি তার অন্য আকর্ষণের জন্য তাকে ভালোবেসেছি।
দুটোর পর আমি স্টেশনে এসে হাজির হলাম। ডিকের খোঁজ নিলাম। ও কাজ করছিলো। ইনকোয়েস্ট কেমন লাগলো জিজ্ঞাসা করতে আমি বললাম ভালো।
আচ্ছা, আমি কোনো বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ করেছিলাম। হা করেছিলাম। আমাকে ওর অস্পষ্টভাবে মনে আছে। তুমি ওর সঙ্গে দেখা করতে গেছিলে কেন। তুমি পুলিশের মতোই আশাবাতিক। কৌতূহল জিনিসটাকে আমার ভালোই লাগে তবে আমি প্রধানত খুনের ব্যাপারটাই বলেছি।
হার্ড ক্যাসেল এটি সাধারণ খুন শুনে অবাক হয়ে উঠলো। বললেন তার তা মনে হয় না। এখন আরো গুরুত্বপূর্ণ আমার অনুমান ওকে প্রথমে অন্য কোথাও নেশা করানো হয়। তারপর উনিশ নম্বর বাড়িতে এনে খুন করানো হয়।
ডিক বললো, আমরা অস্ত্রটা খুঁজে পেয়েছি। সে জানালো ওটা বাগান থেকে পাওয়া গেছে। খুন করার পর খুনী ওখানেই ফেলে দিয়েছিলো অস্ত্রটাকে। ওটাতে কোন আঙুলের ছাপ পাওয়া যায়নি। ওটাকে খুব সতর্কভাবে মুছে ফেলা হয়েছে। আর ছোরাটা যে কোনো লোকের হতে পারে। এর আগে ব্যবহৃত হয়েছে, নতুন করে ধার দেওয়া হয়েছে।
তাহলে ব্যাপারটা ঐ ভাবেই ঘটেছে। প্রথমে ভদ্রলোককে নেশা করানো হয়েছে। তারপর ওকে নিয়ে আসা হয় উনিশ নম্বরে। যদি তা না হয় তাহলে কিভাবে আনা হয়েছিলো।
হার্ড ক্যাসেল বললেন, এটা করতে গেলে খুনীর প্রতিবেশীদের অভ্যাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা দরকার। এতে লোকের নজরে পড়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকে যায়।