ইনসপেক্টর কাঁচের টুকরো নিয়ে উল্টে-পাল্টে দেখছিলো। এবং সেটা তিনি নিলেন। কলিন কয়েনটা দেখছিলো। ট্রেডের কাছ থেকে কলিন কয়েনটা নিলো। তাদের দুজনের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিলেন যে এই কথাটা যেন কারো কাছে বলা না হয়।
১১. দুরন্ত ছেলেগুলো
১১.
হার্ড ক্যাসেল বললেন, ঐ দুরন্ত ছেলেগুলোকে সামলাতে গিয়ে ভদ্রমহিলা ক্লান্ত। কলিন মনে করেন তিনি তার স্বামী সম্পর্কে কিছুই জানেন না। কলিন বললেন যে, ভদ্রমহিলা মিসেস র্যামসে হতে রাজী হয়েছেন। আসলে এটাও হতে পারে, র্যামসে আমাদের উপর নজর রাখার জন্যই এটা করেছেন। এব্যাপারটা একধরনের দেশপ্রেম হতে পারে।
কলিন বললেন যে, তিনি ঠিক বের করে আনতে পারবেন। তারা তেষট্টি নম্বর বাড়ির সামনে এসে থামলো। এর বাগানটার কিছুটা ১৯ নম্বরকে ছুঁয়েছে।
ম্যাকনটন কয়েক বছর আগে এখানে আসেন। দুজনেই বয়স্ক! একজন যুবতী দরজা খুললো। সে পুলিশ দেখে ভয় পেলো। বললো যে ম্যাকনটন ভেতরে আছে। কথাটা বলে ও ওদের পথ দেখিয়ে ঘরে বসালেন এবং তাকে জানালেন যে, পুলিশ ইনসপেক্টর এসেছেন।
মিসেস ম্যাকনটন বললেন, তিনি খুনের ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনি বললেন, ঘটনাটা এমন সময় ঘটলো যে, অনেকেই যখন বাড়িতে থাকে। তাদের জনাচারেক বন্ধু লাঞ্চের জন্য বেরিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত একটা ফার্নিচার ভ্যান এসে দাঁড়ালো। জিনিসপত্র ঐ লোকেরাই বয়ে ভেতরে নিয়ে এলো। অবশ্য তখন আমরা কেউ ভাবিনি এর মধ্যে কোনো গল্প আছে।
তিনি বললেন, তিনি চিৎকার শুনেছেন, তিনি বললেন, ছবি এঁকে তিনি দেখেন। এ ব্যাপারে তিনি নিশ্চত। ভদ্রলোক সম্ভবত তাকে একটা এনসাইক্লোপেডিয়া বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। তবে তার কিছু দরকার না থাকায় ভদ্রলোককে তিনি আমল না দেওয়াতে তিনি বাগানে তার স্বামীর কাছে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন। তার স্বামী গাছ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তিনি কারো পাত্তা না পেয়ে চলে গেছিলেন।
তিনি কোনো ইনসিওর-এর কেউ বলে মনে করছেন না। ভদ্রলোক একটা ভ্যান চালাচ্ছিলেন বলেই এর ধারণা। তিনি তাকে গতকাল দেখনেনি। তার স্বামী এখন বাগানে আছেন।
তারা দুজন মিসেস ম্যাকনটনের কাছে চললেন। শেষপর্যন্ত বাগানে এসে হাজির হলো সবাই মিলে।
মিঃ ম্যাকনটন ছবিটা নিয়ে ভালো করে দেখলেন। তারপর হার্ড ক্যাসেলকে ফিরিয়ে দিয়ে বলে উঠলেন, এখানে একে কখনো দেখেনি। গতকাল যখন ঘটনাটা ঘটে তখন তিনি বাগানেই ছিলেন। মিসেস ম্যাকটনের পেছনে চললো ওরা। হার্ড ক্যাসেল বললেন, চিৎকারটা নিশ্চয়ই একটা দিক থেকে আসেনি। তিনি কখন চিৎকারটা হয় সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি। তিনি সবসময়েই বাগানে এলে ঘড়ি খুলে রাখেন। মিসেস ম্যাকনটন বললেন যে, সম্ভবত আড়াইটে নাগাদ। তারা লাঞ্চের পর বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।
ওদের বাড়ি আর ১৯ নম্বর বাড়ির বিভাজন রেখা। মিঃ ম্যাকনটন ওকে একটা শেডের তলায় নিয়ে এলেন। এখানে নানান যন্ত্রপাতি সুন্দর করে সাজানো। হার্ড ক্যাসেল তখন ১৯ নম্বর বাড়িটার দিকে তাকিয়েছিলেন। বেড়ার অন্যদিকে গোলাপের ঝাড় একেবারে বাড়ির ভেতর পর্যন্ত চলে গেছে। তিনি যখন সার তৈরি করছিলেন তখন উনিশ নম্বর বাড়িটিকে দেখলেন।
তার স্ত্রী বললেন তার বিশ্বাস উনিশ নম্বর বাড়ির বাগানে একটা মূর্তিতে তিনি লুকিয়ে থাকতে দেখেছিলেন। তার স্বামী এরকম কিছু দেখেননি।
হার্ড ক্যাসেল ওদের কাছ থেকে বিদায় নিলেন। তাদের বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত বোধ করলেন।
হার্ড ক্যাসেল গাড়িতে উঠে বললেন, ব্যাপারটায় তার সন্দেহ আছে যে, ছবি দেখে তিনি চিনতে পেরেছেন। কাউকে দেখেছে এটা তার অনুমান। ওরকম ধরনের অনেক সাক্ষীকেই তিনি জানেন, চেপে ধরলে সঠিক কিছু বলতে পারে না। মিসেস হেমিং খুনের ব্যাপার সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
হার্ড ক্যাসেল বললেন যে, কলিনের এখনকার মতো মুক্তি। হার্ড ক্যাসেল বললেন, এখন আর একটা জায়গায় যাবে তবে একাই যাবে সে। কলিন বললো যে, পরশু এগারোটায় ইনকোয়েস্ট যাবে।
কাল হার্ড ক্যাসেল লন্ডন যাবেন, রিপোর্ট জমা দিতে। কলিন স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের প্রাইভেট ডিটেকটিভ এরকুল পোয়ারার সঙ্গে দেখা করতে যাবেন, যিনি তার বাবা বন্ধু। হার্ড ক্যাসেল বললেন, তার বন্ধু অদ্ভুত। কলিন বললেন যে, তার মধ্যে তিনি একজন।
.
১২.
কলিনকে বিদায় জানিয়ে হার্ড ক্যাসেল তার নোটবুক বার করলেন। তারপর তার কাগজপত্র রেখে দিলেন। তার মধ্যে কিছু ফাইলপত্র জমে আছে।
তিনি সার্জেন্ট-এর কাছ থেকে রিপোর্টগুলো নিয়ে নিলেন। এগুলোতে চোখ বুলিয়ে তার মনে হলো এতে এমন কোনো সূত্র নেই যাতে সমাধানের কোনো সুরাহা হতে পারে।
বেলশিয়াম বা বাসের কেউ মিস্টার কারীর ফটো চিনতে পারেনি।
ল্যাবরেটরিতে লোকটার পোশাক থেকে কিছু পাওয়া যায় না। হার্ড ক্যাসেল ভাবলেন এটা মিঃ কারী নিজেই তুলেছেন, নাকি ওর খুনীই ওদের পরিকল্পনামাফিক অজ্ঞাতনামা করে রেখেছে। দাঁতের ব্যাপারে চিকিৎসকদের সঙ্গে হার্ড ক্যাসেল ভাবলেন হঠাৎ, ভদ্রলোক ফরাসিও তো হতে পারে। অবশ্য ওর পোশাক-আশাক ঠিক তার বিপরীত। তার মনে হলো কাজটা বেশ মন্থর গতিতে এগোচ্ছে। আজ বা কাল মিঃ কারীকে শেষপর্যন্ত শনাক্ত করা যাবেই।
তিনি সাড়ে পাঁচটা অবধি কাজ করলেন। সার্জেন্ট ক্রেশ রিপোর্ট করেছিলেন শীলা ওয়েব ক্যাভেনডিস ব্যুরোতে আবার কাজ করতে শুরু করেছে। এরপর ঠিক পাঁচটা নাগাদ ও কারফিউ হোটেলে প্রফেসার পার্ডির সঙ্গে কাজ করে ওখান থেকে সাড়ে ছটার আগে ওর পক্ষে কোনোমতেই ছাড়া পাওয়া সম্ভব নয়।