হ্যাঁ, হ্যাঁ, ঠিক তাই।
দূরাভাষে লোকটি বলল, আমার কাছে প্রায় দেড় বছর আগে কাজে করে। সে কাজের খুব উপযুক্ত ছিল, এবং সে যদি আরও কিছুদিন থাকত আমি খুব খুশি হতাম। আমার ধারণা এখান থেকে হারলে স্ট্রিটে চলে গেছে। কিন্তু অন্য আর এক জায়গার ঠিকানা আছে আমার কাছে, দাঁড়ান মিঃ এক্স নাম অজানা ঠিকানা। আমি এখানে পেয়েছি ঠিকানা, মনে হচ্ছে ইসলিংটনে কোথাও হবে। আপনার কি ধারণা সেটা সম্ভব?
তার উত্তরে মিসেস অলিভার বললেন, সব কিছুই সম্ভব এবং তিনি মিঃ এক্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঠিকানাটা লিখে রাখলেন।
লোকের ঠিকানা পাওয়া আজকাল বড়ো কষ্টকর ব্যাপার। যাইহোক তিনি ইসলিংটনের নম্বর চেষ্টা করলেন। ভারিকি গলায় একজন উত্তর দিল, বলুন আপনি কাকে চান? সে কি এখানেই থাকে? নাম বলুন।
মিস সিলিয়া র্যাভেন্সক্রফট।
হ্যাঁ, হ্যাঁ, সে এখানেই থাকে। তবে এখন সে বাইরে। ঘরে ফেরেনি এখনও।
সন্ধ্যায় সে ফিরবে তো?
হ্যাঁ, হ্যাঁ খুব শিগগিরই সে ঘরে আসবে এবং পোশাক বদল করেই আবার সে বেড়িয়ে যাবে কারণ একটা পার্টি আছে তার। খবরটা দেওয়ার জন্য মিসেস অলিভার তাকে ধন্যবাদ জানালেন।
তিনি অনেকক্ষণ ধরে ভাবার চেষ্টা করলেন যে, শেষ কবে তিনি তার ধর্মকন্যা সিলিয়াকে দেখেছিলেন? তিনি কিছুতেই খেয়াল করতে পারলেন না। সমস্ত ব্যাপারটাকে আবার তিনি ভাবলেন, এখন নিশ্চয়ই ও লন্ডনে আছে। ওর বয়ফ্রেন্ডও কি লন্ডনে আছে এবং ওর বয়ফ্রেন্ডের মাও কি লন্ডনে আছে, এই ব্যাপারগুলি খালি মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল। তিনি ভাবলেন সত্যিই দেখছি এটা এখন আমার মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াল, এবং মিস লিভিংস্টোনকে দেখে তিনি তার মাথাটা তার দিকে ঘোরলেন।
মিস লিভিংস্টোনের সারা শরীরে ধুলো কালিঝুলি এবং তাকে সেই জন্য খুব বিরক্ত দেখাচ্ছিল এবং সে একগাদা ফাইল নিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিল।
জানি না এগুলোর মধ্যে একটাও আপনার কাজে লাগবে কিনা মিসেস অলিভার। ফাইলগুলোর চেহারা দেখে মনে হয় বহুদিন এগুলি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল। হতেই পারে, বললেন মিসেস অলিভার। আমার মনে হয় না, যাইহোক সোফার এক কোণায় ওগুলো রেখে দাও। সন্ধ্যার সময় আমি দেখব ওগুলো। মিসেস অলিভার বললেন। মিস লিভিংস্টোন তার অসন্তুষ্ট মনোভাব চেপে রেখে বলল, তাহলে তো খুব ভালো হয়। আমি বরং ততক্ষণে ধুলো পরিষ্কার করে ফেলি। মিসেস অলিভার বললেন, সে তো তোমার অসীম দয়া এবং একটু থেমে মেয়েটির দিকে আপাদমস্তক তাকালেন এবং আবার বললেন, তোমার নিজের চেহারার যা অবস্থা হয়েছে নিজেকেও তার সঙ্গে সাফ করে নিও। আর হ্যাঁ, তোমার বাঁ কানে ছছটা মাকড়সার জাল আটকে গেছে, বিদ্যুতের গতিতে তিনি হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ইসলিংটনের নম্বরটা আবার ডায়াল করলেন। দূরাভাষে উত্তর শোনা গেল খাঁটি এ্যাংলো ফ্যাসনের কিন্তু কথাগুলো বেশ ধারালো, যদিও তাতে সন্তুষ্ট হলেন মিসেস অলিভার। মিস র্যাভেন্সক্রফট মানে সিলিয়া র্যাভেন্সক্রফট? হ্যাঁ আমিই সিলিয়া র্যাভেন্সক্রফট বলছি।
আমার ধারণা আমাকে তোমার ভালো মনে আছে। আমি হচ্ছি অ্যারিয়াডন অলিভার। দীর্ঘ দিন ধরে আমরা পরস্পর পরস্পরকে দেখিনি, আমি হলাম তোমার ধর্ম মা।
হ্যাঁ, অবশ্যই আমি সেটা জানি। আর এও সত্যি আমরা কেউ কাউকে অনেক দিন দেখিনি।
তোমাকে দেখার জন্য মনের অবস্থা বুঝতেই পারছ। ভীষণ ছটফট করছে মন, যদি তুমি আমার বাড়িতে আসো কিংবা তুমি যদি মনে করো এক ভোজসভায় কিংবা…।
ঠিক আছে, আপাতত এক্ষুনি একটু অসুবিধা আছে কারণ যেখানে আমি কাজ করি তাদের তরফ থেকে। আচ্ছা আজ সন্ধ্যায় আসতে পারি অবশ্য যদি আপনি পছন্দ করেন, সময় সাড়ে সাতটা অথবা আটটা। তার পরে কিন্তু অন্য জনকে ডেট দেওয়া আছে…
হ্যাঁ, হ্যাঁ তুমি যদি তাই এসো আমি খুবই খুশি হব।
হ্যাঁ, নিশ্চয়ই আমি আসব।
মিসেস অলিভার তার ঠিকানা দিলেন সিলিয়াকে, টেলিফোন প্যাডের ওপর একটা নোট লিখে রাখলেন। এমন সময় বিরাট একটা অ্যালবাম হাতে নিয়ে লিভিংস্টোন ঘরে ঢুকলেন। তাকে দেখেই তার সারা মুখ বিরক্তিতে ভরে উঠল। সম্ভবত এটা হতে পারে। দেখুন তো মিসেস আলভার?
না এটা নয়, এটা হল রান্নার বই।
মিস লিভিংস্টোনকে একটু আহত হতে দেখে মিসেস অলিভার বললেন, ঠিক আছে ওগুলোর মধ্যে থেকে আমার প্রয়োজনীয় অ্যালবামটা দেখে নেব। তিনি বললেন, আর একবার যাও এবং ভালো করে দেখে এসো। লিলেন কাপবোর্ডের কথা আমি যে ভেবেছিলাম সেটা তুমি জানো, বাথরুমের পরের দরজাটা বাথ টাওয়েলের একেবারে ওপরের তাকে কখন কখন বই বা কাগজপত্র আমি রেখে থাকি। দাঁড়াও, তোমার সাথে আমিও যাব এবং নিজের চোখে দেখব।
মিনিট দশেক পরে ফিকে হয়ে যাওয়া একটা অ্যালবাম দেখছিলেন মিসেস অলিভার। কিন্তু তখন মিস লিভিংস্টোন, মানসিক যন্ত্রণায় তার শহীদ হবার মতো অবস্থা।
ঠিক সেই সময় মিসে অলিভার বললেন, এটা ঠিক আছে, তুমি বরং ডাইনিং রুমে গিয়ে সেই পুরানো ডেস্কের ওপর চোখ বুলিয়ে এসো কারণ কম করে দশ বছরের পুরানো যদি কিছু ঠিকানা লেখা বই দেখতে পাও, আজ আর অন্য কিছুর প্রয়োজন হবে বলে মনে হয় না।
মিস লিভিংস্টোন সেখান থেকে চলে গিয়ে একটা সোফার ওপর হেলান দিয়ে বসলেন এবং নিজের মনে মনে বললেন, আঃ কি বিস্ময়! আবার অ্যালবামের পাতাগুলো ওল্টালেন এবং ভাবলেন তিনি নিজে গেলে না কি ওকে আমার এখানে দেখতে পেলে কে বেশি খুশি হবে? যাইহোক সিলিয়া আসুক বা চলে যাক একটা ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে সন্ধ্যাটা আমাকে কাটাতে হবে।