খুন? আপনি বলতে চাইছেন মানে–একটা দুর্ঘটনা? ওহো না! দুর্ঘটনা নয়, সমুদ্রের ধারের বাড়িগুলোর মধ্যে একটিতে তারা থাকত। অথবা আমার মনে হয়, কর্নওয়াল যাইহোক সেখানে কাছাকাছি কোথাও পাহাড় ছিল। এবং সেখানেই তাদের একটা বাড়ি ছিল এবং সেই দুর্গম পাহাড়ের এই পাশে একদিন দুজনকে পাওয়া যায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায়। কিন্তু এই থেকে পুলিশ সত্যিই বুঝতে পারে না যে, হয় প্রথমে স্ত্রী তার স্বামীকে গুলি করে এবং তারপর সে নিজেকে গুলিবিদ্ধ করে অথবা স্বামী তার স্ত্রীকে গুলি করে পরে সে নিজেই নিজেকে গুলি করেছিল কিনা। কিন্তু তারা কতকগুলো প্রমাণ ও তথ্য যাচাই করে দেখে বুঝলেন যে, সেগুলোর কয়েকটি হল বুলেট আর অন্য আরও কয়েকটি জিনিস কিন্তু সেই সব জিনিস দিয়ে সেই হত্যার কিনারা করা খুবই দুঃসাধ্য ব্যাপার। তারা এও ভাবল হয়তো দু-জনে যুক্তি করে আত্মহত্যা করে থাকবে–সেই বিচারে কি রায় বেড়িয়েছিল মনে নেই। সেটা একটা ব্যর্থ অভিযান বা ওই ধরনের কিছু একটা হতে পারে। এবং প্রত্যেকেই অবশ্যই জানত যে, এর একটা অর্থ ছিল আর এই জোড়া খুনকে কেন্দ্র করে বহু গল্প লোকের মুখে মুখে আলেচিত হত
মিসেস অলিভার বললেন, সম্ভবত সই মনগড়া এমনকি তিনি একটা গল্পও মনে করার চেষ্টা করলেন, যদি পারেন।
ওহো মনে পড়েছে হয়তো মনে পড়ছে। তবে কিন্তু এটাও ঠিক যে, জোর করে সেটা বলা শক্ত আমি জানি। হয়তো সেদিন অথবা আগের দিন ওদের দুজনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয়–ফলে অন্য আর একজন পুরুষের কথা ওঠে, এবং তারপর অবশ্যই স্বাভাবিক কারণেই অন্য আর এক নারীর প্রসঙ্গ উঠে থাকবে সেই ঝগড়ার মাঝে, এবং কেউ কখনও জানতেও পারবে না যে, ওদের ঝগড়া কী ভাবে শুরু হয়েছিল। আমার ধারণা ব্যাপারটা বেশ ভালোভাবেই গোপন করা হয়, কারণ জেনারেল র্যাভেন্সক্রফটের পদমর্যাদা ও সামাজিক মর্যাদা ছিল অনেক উঁচুতে। এবং আরও শোনা যায় যে, সেই যে, সেই বছরেই একটা নার্সিংহোমে সে ভর্তি হয় এবং সেখানেই হয়তো সে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে থাকবে যার পরিণাম সে সত্যিই জানত না, সে কী করতে যাচ্ছে?
দৃঢ়স্বরে মিসেস অলিভার বললেন, সত্যিই আমি বিস্মিত। এবং অবশ্যই আমার বলা উচিত যে, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না, এবং আপনিই প্রথম উল্লেখ করলেন বলেই এখন আমার একটু মনে পড়ছে যেন এ ধরনের একটা কেস হয়েছিল বটে তবে নামগুলো আমি খেয়াল করতে পারি এবং এই লোকগুলোকেও আমি চিনি। কিন্তু তারপরে ও ব্যাপারে কী ঘটেছিল সে খবর আমার জানা নেই এবং সত্যিই মনে করি না এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ধারণা আমার আছে যে…
মিসেস অলিভার ভাবলেন যে, তিনি সত্যিই যথেষ্ট সাহসের সঙ্গেই কথাগুলো বলতে পেরেছেন। অবার মিসেস বার্টন কক্সের দিকে তাকিয়ে তৎক্ষণাৎ চিন্তা করলেন এ সব প্রশ্ন করার ধৃষ্টতা আপনার কি করে হল কে জানে!
এই ঘটনা অত্যন্ত জরুরি বলেই আমার জানা উচিত, বললেন মিসেস বার্টন কক্স। তখন তার চোখ দুটো মার্বেল পাথরের মতো কঠিন হয়ে উঠতে দেখা গেল এবং বললেন, দেখুন এটা বিশেষ জরুরি কারণ আমার পুত্র সিলিয়াকে বিয়ে করতে চায় বলে।
মিসেস অলিভার আর বললেন, আমি কিছুই শুনিনি কখনও। তাই আমার আশঙ্কা, আমি আপনাকে হয়তো সাহায্যে করতে পারব না।
কিন্তু আপনি অবশ্যই জানেন মানে আমি বলতে চাই যে, যখন আপনি এই রকম চমৎকার গল্প লেখেন তখন অপরাধ সম্পর্কে আপনি সব কিছুই জানেন। এবং আপনি এও জানেন কে অপরাধ করে থাকে আর কেনই বা তারা করে থাকে এবং আমার বিশ্বাস যে, সব ধরনের মানুষই সেই সব কাহিনির আড়ালে থাকে যে সব কাহিনি তারা আপনাকে হয়তো বলে থাকবে। বললেন মিসেস বার্টন কক্স।
আমি কিছুই জানি না এবার বেশ রুক্ষস্বরেই বললেন মিসেস অলিভার।
অথচ দেখুন, সত্যি কথা বলতে কী, এ ব্যাপারে কাকেই বা জিজ্ঞাসা করতে যাব? এবং কেউ জানেও না ব্যাপারটা। আমি বলতে চাইছি মানে আজকের দিনে কেউ পুলিশের কাছে যেতে পারে না। এবং আমার মনে হয় না যে, তারা আপনাকে কিছু বলবে। কারণ হিসাবে বলা যেতে পারে তারা নিশ্চয়ই এটা গোপন করার চেষ্টা করবে। অথচ আমি মনে করি যে, সত্যকে অস্বীকার করা অত্যন্ত জরুরি।
ঠান্ডা গলায় মিসেস অলিভার বললেন, আমি তো কেবল বই লিখে থাকি। সেগুলো সম্পূর্ণ কাল্পনিক। এবং কারোর ব্যক্তিগতভাবে অপরাধ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না এবং অপরাধতত্ত্বের ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা বা মতামতও জানা নেই, সুতরাং আমার আশঙ্কা আমি কোনোভাবেই আপনাকে সাহায্য করতে পারব না।
কিন্তু আপনি কি আপনার ধর্মর্কন্যাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন না?
সিলিয়াকে জিজ্ঞেস করব? এবার আবার মিসেস অলিভারের চোখ দুটো স্থির হল। এবং বললেন, জানি না কী ভাবে জিজ্ঞেস করব আমার ধারণা যখন এই বিয়োগান্ত ঘটনা ঘটেছিল তখন ও খুবই বাচ্চা ছিল।
হ্যাঁ আমার ধারণা, এ ব্যাপারে সব কিছুই জানে ও। মিসেস বার্টন কক্স আরও বললেন, আমার মনে হয় না আপনি জানেন বলে, ডেসমণ্ড এটা পছন্দ করবে এবং এও জানেন যেখানে সিলিয়া জড়িত সেখানে খুবই স্পর্শকাতর সে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী আমার মনে হয় না যে-না–এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত ও আপনাকে সব খুলে বলবে।