হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন এবং সেও চিনতে পেরে বলে উঠল, আপনি তো মিসেস অলিভার? আপনি এখানে কেনাকাটা করতে এসেছেন শুনলে মেয়েরা উত্তেজিত হয়ে উঠবে।
মিসেস অলিভার বললে ওদের নোলো না
আচ্ছা অটোগ্রাফ চাইতে পারে এই মনে করে কি বলছেন আপনি?
আমি চাই সেরকম ওরা যেন কিছু না করে এবং বলো তুমি কেমন আছ?
মারলিন বলল, মোটামুটি চলে যাচ্ছে।
আমি কিন্তু জানতাম না যে তুমি এখানে কাজ করছা?
আমার মনে হয় অন্য জায়গার মতোই ভালো এটা। আপনার সাথে ওরা বেশ চমৎকার ব্যবহার করবে। আর হ্যাঁ আমি এখন ওই কসমেটিক কাউন্টারের ইনচার্জ।
তোমার মা এখন কেমন, নিশ্চয়ই ভালো আছেন?
মা যদি শুনতে পান যে, আপনার সাথে আমার দেখা হয়েছে, খুবই আনন্দ পাবেন তিনি।
হাসপাতালের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটা চলে গেছে তিনি কি সেখানে ওই বাড়িতেই আছেন?
হ্যাঁ আমরা সেখানেই থাকি। তবে বাবা খুব ভালো নেই। এই সবে হাসপাতাল থেকে এসেছেন। মা ভালোই আছেন, আপনি কি এখানেই কোথাও থাকেন কাছাকাছি?
না, মিসেস অলিভার বললেন। আসলে কি জানো, আমার এক পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম এখানে। ঘড়ির দিকে তিনি তাকালেন। পরে জিজ্ঞেস করলেন, আচ্ছা মারলিন, তোমার মা কি এখন বাড়িতে আছেন? ওঁর সাথে একবার দেখা করে কিছু কথা বলতে চাই। কারণ অনেকদিন তো আর দেখা হয় না।
নিশ্চয়ই উনি খুব খুশি হবেন আপনাকে দেখে, মারলিন বলল। কিন্তু আমার খুব খারাপ লাগছে যে, এখন আপনার সাথে আমি যেতে পারব না বলে।
ঠিক আছে কোনো ব্যাপার নয়। আবার নিশ্চয়ই দেখা হবে। মিসেস অলিভার বললেন, তোমার বাড়ির নম্বর, বা কোনো নাম আছে কি? আমার ঠিক মনে নেই।
মারলিন বলল, হ্যাঁ বাড়ির নাম আছে লরেন কটেজ।
দেখো তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে খুব ভালো হল।
মিসেস অলিভার একটা লিপস্টিক কিনলেন এবং গাড়ি নিয়ে গ্যারেজ এবং হাসপাতাল পেরিয়ে একটা সরু রাস্তায় এলেন।
লরেন কটেজের সামনে গাড়ি রেখে বাড়ির ভেতরে ঢুকলেন এবং দেখলেন, বয়স প্রায় পঞ্চাশ। ধূসর চুল রোগাটে একজন ভদ্রমহিলা দরজা খুললেন এবং তাকে দেখেই চিনতে পারলেন। আরে আপনি মিসেস অলিভার না? কতদিন বাদে দেখা। প্রায় এক যুগ হবে তাই না?
হ্যাঁ সে অনেকদিন হবে।
আরে আসুন আসুন ভেতরে। একটু চা খেয়ে যান।
মিসেস অলিভার বললেন, একটু আগেই এক বন্ধুর সঙ্গে চা খেলাম। এবং সেখানে কেমিস্টের দোকানে কিছু কেনাকাটা করতে যেতেই সেখানে মারলিনকে দেখলাম।
–হ্যাঁ, খুব ভালো একটা চাকরি পেয়েছে।
আপনি কেমন আছেন মিসেস বাকল? আপনার সাথে যখন শেষ দেখা হয়েছিল তার থেকে এখন খুব একটা বেশি বয়স হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না কিন্তু।
না, চুল আমার ধূসর হয়ে গেছে আর ওজনও আমার খুব কমে গেছে?
বাড়ির ভেতর ঢুকতে গিয়ে মিসেস অলিভার বললেন, আমার পুরোনো বন্ধুদের সাথে দেখা হল। আপনার মনে আছে কিনা জানি না মিসেস কারস্টেয়ার্স, মিসেস জুলিয়াকে।
নিশ্চয়ই মনে আছে। তিনি কেমন আছেন?
হ্যাঁ, তিনি ভালোই আছেন। তার সাথে কথা বলতে বলতে পুরোনো দিনের কিছু কথাবার্তা হল। কথা প্রসঙ্গে সেই বেদনাদায়ক ঘটনার কথাও উঠল আমি তখন আমেরিকায় ছিলাম। সেই ব্যাপারে আমার বিশেষ কিছু জানা নেই। তবে লোকেরা বলত র্যাভেন্সক্রফট
হ্যাঁ, আমার বেশ ভালোই মনে আছে।
আচ্ছা মিসেস বাকল এক সময় আপনি না তাদের কাজ করছিলেন?
হ্যাঁ সাতদিনের মধ্যে তিনদিন সকালে ওঁদের বাড়িতে যেতাম। সত্যিকারের মিলিটারি লেডি বলতে যা বোঝা যায় তিনি তাই ছিলেন এবং ভদ্রলোকও খুবই ভদ্র ছিলেন।
সত্যিই সেই ঘটনাটা বড়োই বেদনাদায়ক।
হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন।
আচ্ছা সেই সময় কি আপনি সেখানে কাজ করতেন?
সেই সময় আমি ওখানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম কারণ ঠিক সেই সময়ে আমার এক বৃদ্ধা অন্ধ মাসিমা আমার বাড়িতে থাকতেন। ওঁকে দেখাশুনা করার পর আর বাড়তি সময় ছিল না যে, বাইরে কোথাও কাজ করার। তবে বলতে পারি সেই ঘটনার এক কী দুমাস আগে পর্যন্ত ওখানে আমি কাজ করেছিলাম।
আমি জেনেছি, মিসেস অলিভার বললেন, ওদের ধারণা এটা নাকি একটা আত্মহত্যার চুক্তি।
মিসেস বাকল বললেন, আমি নিশ্চিত ওঁরা কখনও একসঙ্গে আত্মহত্যা করতে পারে না। কারণ–ওঁরা যেভাবে মিলেমিশে থাকতেন, তাঁদের মধ্যে যেভাবে বোঝাঁপড়া ছিল তাতে এরকম অস্বাভাবিক কিছু ভাবাই যায় না। যদিও তারা সেখানে বেশি দিন ছিলেন না।
আমারও তা মনে হয় না, বললেন মিসেস অলিভার, বোরোন মাউমের কাছে ওঁরা যেন থাকতেন, আগে ইংল্যান্ডে এসে যেখানে বসবাস শুরু করেন ওঁরা তাই তো? হ্যাঁ কিন্তু ওঁরা দেখলেন যেখানে ওঁরা ছিলেন সেই জায়গাটা ইংল্যান্ড থেকে অনেক দূর। তাই তাঁরা চিপিং বারট্রামে চলে এলেন। তাদের বাড়িটা ছিল খুব সুন্দর এবং সেই বাড়িতে ছিল একটা সুন্দর বাগান।
ওঁদের বাড়িতে যখন আপনি শেষ কাজ করেন তখন কি ওঁদের স্বাস্থ্য ভালো ছিল?
জেনারেলের একটু হার্টের কষ্ট ছিল। মাঝখানে একবার স্ট্রোক হয়েছিল। ঘুরেফিরেই একটু বেশি চিন্তিত হয়ে পড়তেন। তাই এক এক সময় ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাতেন।
লেডি র্যাভেন্সক্রফট কেমন ছিলেন?
তবে আমার মনে হয় বিদেশের জীবনযাত্রা এখানে এসে তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। যদিও এখানে ওঁদের সমকক্ষ অনেক ভালো পরিবার ছিল। এখানে খুব বেশি লোকদের ওঁরা চিনতেন না। সেখানে ওঁদের অনেক চাকর ও জমকালো পার্টি ছিল।