হ্যাঁ, আগে কিংবা পরে প্রত্যেকে সেটার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠবে। মিসেস অলিভার বললেন, এই বিশেষ পার্টিতে আমার সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেছে, আমার মনে হচ্ছে একজন সম্পূর্ণ অপরিচিত আগন্তুকের নির্দেশে একটা বিস্ময়কর কাজ আমাকে করতে হবে এবং সেই আগন্তুকটি হলেন মিসেস বার্টন কক্স।
আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না কেন তিনি এই বিষয়ে জানতে চাইছেন। আর যখন এটা তার ব্যাপার নয় যদি না…আপনি হয়তো ভেবেছেন ডেসমন্ডকে যদি আমার বিয়ে করার প্রশ্নটা জড়িয়ে না থাকত, হা তা তো বটেই। শত হলেও ডেসমন্ড তাঁর ছেলে।
হ্যাঁ, আমারও ধারণা তাই। তবুও কিছুতেই আমি বুঝতে পারছি না কী করে বা কেমন করে এটা তার ব্যাপার হতে পারে।
সবকিছুই তার কাছে নিজের ব্যাপার বলে মনে হয়। দেখেছেন তো তাঁর নাকটা কতটা উঁচুতে। ওই যে আপনি বলেছিলেন না কী যেন ও হা একজন জঘন্য প্রকৃতির মহিলা।
আমি কিন্তু খবর নিয়েছি যে, ডেসমন্ড জঘন্য চরিত্রের ছেলে নয়।
না, না আমি ডেসমন্ডের খুব প্রিয় এবং ডেসমন্ডও আমার প্রতি অনুরক্ত। কিন্তু তথাপি ওর মাকে আমি মোটেই পছন্দ করি না।
সে কি তার মাকে পছন্দ করে জানো?
খোলাখুলিভাবে সিলিয়া বলল, বিশ্বাস করুন আমি কিছু জানি না। আমার মনে হয় সে তার মাকে পছন্দ করে থাকতে পারে। যাইহোক আমি এখনি বিয়ে করতে চাই না এবং সেরকম কিছু অনুভবও করি না। আর এই বিয়ের পক্ষে ও বিপক্ষে অনেক বাধা বিপত্তি তো থাকবেই, আপনি সেটা জানেন। সিলিয়া আরও বলল যে, এটা আপনাকে কৌতূহলের চেয়ে নিশ্চয়ই অনুভবের খোরাক জোগাবে। কারণ রোজি কক্স কেন আপনাকে বলবেন আমার কাছ থেকে গরম গরম খবর বের করার চেষ্টা করতে। আর সেটা আপনার কাছে ফাস করে দিতে, আমি বলতে চাইছি আপনি কী সেই বিশেষ প্রশ্নটা করবেন।
তুমি কী বলতে চাইছ আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করব তোমার মা কি তোমার বাবাকে খুন করেছিলেন অথবা তোমার বাবা তোমার মাকে খুন করেছিলেন বা এটা জোড়া আত্মহত্যা? তুমিও কি তাই মনে করো?
আমার মনে হয় সেটাই। কিন্তু আমার মনে হয় আপনি আমার কাছ থেকে যে সব খবর পাবেন কিংবা ধরুন যদি-যদি সেই খবরগুলো পান আপনি তাহলে কি মিসেস বার্টন কক্সকে খবরগুলো পাচার করবেন?
না, মিসেস অলিভার বললেন, ওই জঘন্য চরিত্রের মহিলাকে আমি কোনো কিছু বলার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারি না। বরং তাকে বলব এটা তার বা আমার কারোরই কোনো ব্যাপার নয়।
আমিও সেটা ভেবেছি, সিলিয়া বলল। আমার মনে হচ্ছে আপনাকে আমি বিশ্বাস করতে পারি। তাই আমি যতটুকু জানি ঠিক ততটুকুই বলতে আমার কোনো আপত্তি নেই। যেমন ধরুন
আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করছি না আর তোমারও আমাকে বলার প্রয়োজন নেই।
তবে উত্তর আমি আপনাকে দেবই এবং সেই উত্তরটা হল–কিছুই নয়।
কিছুই নয়, চিন্তিত গলায় মিসেস অলিভার জিজ্ঞেস করলেন।
না। সেই সময় আমি সেখানে ছিলাম না। এখন আমি মনে করতে পারছি না ঠিক তখন আমি কোথায় ছিলাম। তবে আমার মনে হয় আমি তখন সুইজারল্যান্ডের একটা স্কুলে ছিলাম অথবা স্কুলের ছুটির দিনগুলিতে আমার স্কুলের এক বন্ধুর কাছে ছিলাম। আমার যেন কেমন সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।
মিসেস অলিভার সন্দেহ প্রকাশ করে বললেন, আমারও ধারণা তোমাকে যে জানতেই হবে তার কোনো মানে নেই, কারণ সেই সময় তোমার বয়সের কথা চিন্তা করলে এরকম একটা ধারণা করে নেওয়া যায়।
সিলিয়া বলল, আমার জানতে খুব আগ্রহ হয় আপনার কি মনে হয় আমি সব কিছু জানি? অথবা জানি না?
কেন, তুমিই তো বলেছ সেই সময় তুমি বাড়িতে ছিলে না। সেই সময় যদি তুমি বাড়িতে থাকতে আমি তখন বলতাম হা, তবুও আমার মনে হয় তুমি কিছু জানেনা, শিশুরা এবং টিনএজাররা জানে। তারা অনেক কিছুই দেখে থাকে। তারা যা জানে তারা সব বলতে চায় না। পুলিশি তদন্তের কথা তুমি শুনবে?
না, আমি জানি আপনার বিবেচনা শক্তি আছে। আমার জানার কোনো দরকার নেই এবং আমি এও ভাবি না যে, আমি কিছু জানি। আমি মনে করি না যে, এ ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা আছে। পুলিশ কী ভাবছে? অবশ্য আমার এই জিজ্ঞেস করার জন্য আপনি যেন কিছু মনে করবেন না। আমি জানতে আগ্রহী কারণ তদন্তের রিপোর্ট বা কোনো কিছু সেরকম আমি কাগজে পড়িনি।
আমার মনে হয় তারা এটাকে জোড়া আত্মহত্যা বলে ভেবে নিয়েছে। কিন্তু আমি মনে করি না। তার কারণ সম্পর্কে তাদের সামান্য ধারণা তাদের আছে।
আপনি জানতে চান আমার ধারণা কী?
তুমি আমাকে বলতে না চাইলে বলো না–বললেন মিসেস অলিভার।
আমার মনে হচ্ছে আপনি জানতে খুবই আগ্রহী। বিশেষ করে অপরাধ কাহিনি যখন লিখে থাকেন। যারা নিজেদের হত্যা করে বা পরপর খুনোখুনি করে মারা পড়ে। অথবা এ-ব্যাপারে যাদের সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে। আমার নিশ্চয়ই ভাবা উচিত যে, আপনি অবশ্যই আগ্রহী হবেন।
হ্যাঁ, আমি অবশ্যই তা স্বীকার করি। মিসেস অলিভার বললেন। কিন্তু একটা খবর জানতে চেয়ে তোমাকে হয়তো আমি অপমান করব যা জানতে চাওয়া আমার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না।
বুঝেছি, সিলিয়া বলল। এক সময় আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই মানে আমি বলতে চাই, বাড়ির পরিবেশ তখন কী রকম ছিল এবং কী কী ঘটনা ঘটত সেখানে। সেই ছুটির আগে আমি কন্টিনেন্টে চলে যাই। সেই সময়ের হাল আমল বলতে যা বোঝায় আমি কিছুই জানি না। আমার স্কুল জীবনে বাবা মা যতদিন জীবিত ছিলেন মাত্র একবার কী দুবার আমাকে আনার জন্য সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন। ওঁদের তখন আমার স্বাভাবিক বলেই মনে হত। মনে হয় বাবা খুব অসুস্থ ছিলেন এবং দিনকে দিন দুর্বল হয়ে পড়ছিলেন। ওঁর হার্টটা হয়তো খারাপ হয়েছিল। আমার মাও যেন স্নায়ুর অসুখে ভুগছিলেন। তবে ওঁরও স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়েছিল। ওঁদের বেশ বন্ধুর মতন সম্পর্কে ছিল আমি অন্তত সেটাই দেখেছিলাম। কোনো কোনো সময়ে কারোর মনে একটা বিরূপ ধারণা হতে পারে। কিন্তু কেউ ভাবতে পারে না সেটা সত্য হোক অথবা প্রয়োজনে সেটা ঠিক হোক। কিন্তু কেউ অবাক হয় যদি