বিবাহিতা নয়?
না। তবে আপাতদৃষ্টিতে বিয়ে করতে যাচ্ছে মিসেস ব্রিটল না বার্টন কক্স-এর ছেলেকে। এবং মিসেস বার্টন কক্স চান না তার ছেলে এই মেয়েটিকে বিয়ে করে কারণ ওর বাবা ওর মাকে হত্যা করেছিল কিংবা ওর মা ওর বাবাকে হত্যা করেছিল।
হ্যাঁ আমিও তাই মনে করি, বললেন মিসেস অলিভার। আমি, একটা জিনিসই খালি চিন্তা করি যেমন ধরুন যদি কারোর অভিভাবকদের মধ্যে কেউ কাউকে হত্যা করে থাকে এবং কোনো ছেলের মায়ের কাছে যাকে মেয়েটি বিয়ে করতে যাচ্ছে, সত্যিই কি সেটা কোনো চিন্তার কারণ হতে পারে?
এই জিনিসটাই সবাইকে চিন্তা করতে হবে, এটা খুবই আগ্রহের ব্যাপার, তবুও আমি মনে করি না যে, স্যার অ্যালিস্টার র্যাভেন্সক্রফট কিংবা লেডি র্যাভেন্সক্রক্টদের সম্পর্কে কেউ এরকম আগ্রহী হবে। কিন্তু মিসেস বার্টন কক্স-এর ব্যাপারটা অত্যন্ত বিস্ময়কর। ওঁর ছেলে কি ওঁর কাছে খুব প্রিয়? তাই সম্ভবত ওঁর মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
মিসেস অলিভার আদৌ চান না তার ছেলে এই মেয়েটিকে বিয়ে করুক।
উনি সেইরকমই কোনো আশঙ্কা করছেন যেমন যদি মেয়েটি জন্মসূত্রে ওর মায়ের ভালো-মন্দ গুণগুলো পেয়ে থাকে, যদি ও ওর মায়ের মতো ওঁর ছেলেকেও খুন করে বসে? বা ওই ধরনের অন্য কোনো অপরাধ?
তা আমি কী করে জানব? মিসেস অলিভার বললেন, তিনি হয়তো ভাবছেন, আমি এর বেশি বলতে পারি, কিন্তু সত্যিই তিনি আমাকে এর বেশি কিছু বলেননি। আপনি কি মনে করেন এ সবের আড়ালে কেউ থাকতে পারে? এবং এর কি কোনো অর্থ হতে পারে?
এগুলো খুঁজে বের করা খুব আগ্রহের ব্যাপার, বললেন পোয়ারো।
মিসেস অলিভার বললেন, হ্যাঁ, এই জন্যই তো আপনার কাছে এসেছি। আপনার কি খুব পছন্দ সেগুলোর সন্ধান করার? কিন্তু প্রথমে আপনি সে সব ব্যাপারের কোনো কারণ খুঁজে পাবেন না, কারণ কেউই তা পায় না।
পোয়ারো জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কি মনে হয় মিসেস বার্টন কক্স-এর বিশেষ কোনো পক্ষপাত আছে?
তার মানে আপনি বলতে চাইছেন স্বামী তার স্ত্রীকে খুন করার চেয়ে স্ত্রী তার স্বামীকে খুন করার পক্ষে তিনি তার মতামত জানতে চান? আমার তা মনে হয় না।
পোয়ারো বেশ সহানুভূতি প্রকাশ করে বললেন, আপনার উভয়সঙ্কটের কথা আমি বুঝতে পারছি। এটা খুবই গোপনীয় ব্যাপার যে, পার্টি থেকে আপনি বাড়িতে এলেন এবং আপনাকে এমন একটা কাজ করতে বলা হয় যা আপনার পক্ষে অসম্ভব বলা চলে এবং আপনি অবাক হয়ে ভাবছেন এরকম একটা ঘটনা ঠিকমতো কী করে মোকাবিলা করা যায়।
হ্যাঁ, এবার বলুন এর সঠিক পথ কোনটা? মিসেস অলিভার জিজ্ঞেস করলেন।
আমার পক্ষে বলা অত সহজ নয় কারণ আমি মহিলা নই। বললেন পোয়ারো। তিনি এমন একজন মহিলা, যাকে আপনি চেনেন না এবং আপনি আজই সেই পার্টিতে প্রথম তার সঙ্গে মিলিত হন এবং যিনি আপনার সামনে এই সমস্যাটা রেখেছেন এবং তিনি আপনাকে এই সমসম্যার সমাধান করতে বলেছেন নির্দিষ্ট কোনো কারণ না দেখিয়েই।
হ্যাঁ ঠিক তাই, স্বীকার করলেন মিসেস অলিভার। তিনি জানতে চাইলেন যে, এখন অ্যারিয়াডন কী করবেন আর ওই বা কী করবে? অপরপক্ষে খুব জানতে ইচ্ছা করছে এ-ধরনের সমস্যার খবর আপনি কি খবরের কাগজে পড়েছেন নাকি?
পোয়ারো বললেন, আমার ধারণা তিনটে জিনিস এ করতে পারে। মিসেস বার্টন কক্সকে একটা নোট পাঠাতে পারে, এ বলতে পারে আমি খুবই দুঃখিত। সত্যিই আমি মনে করি এ ব্যাপারে আমি আপনাকে বাধিত করতে পারব না। অথবা আপনি আপনার ধর্মকন্যার সঙ্গে যোগাযোগ করে ওকে বলুন যে, ছেলেটির মা যা যা জানতে চান, অথবা সেই তরুণটি কিংবা যাকে ও বিয়ে করার কথা ভাবছে, আপিন ওর কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন সত্যি সেই যুবকটিকে বিয়ে করার কথা ভাবছে কিনা এবং তাই যদি হয় মেয়েটির কোনো ধারণা আছে, অথবা সেই যুবকটি কী ওকে কিছু বলেছে? তার মার মাথায় কী মতলব এসেছে, যে যুবকটিকে ও বিয়ে করতে যাচ্ছে তার মার সম্পর্কে মেয়েটি কী ভাবে? তৃতীয় জিনিসটা আপনি নিজেও করতে পারেন। আমি আপনাকে দৃঢ়ভাবে পরামর্শ দিতে যাচ্ছিলাম, সেটা…
আমি জানি, বাধা দিয়ে বলেন উঠলেন মিসেস অলিভার। স্রেফ একটা শব্দ।
কিছুই নয়, বললেন পোয়ারো।
মিসেস অলিভার সায় দিয়ে বললেন, আমি জানি সেটা খুব সহজ সরল। একটি মেয়েকে গিয়ে বলা কে আমার ধর্মকন্যা, আর তার ভাবী শাশুড়ি কী বলছেন এবং লোকদের কী জিজ্ঞেস করছেন। কিন্তু
সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন পোয়ারো, আমি জানি এটা মানুষের কৌতূহল।
মিসেস অলিভার বললেন, আমি শুধু জানতে চাই ওই জঘন্য প্রকৃতির মহিলাটি কেন আমার কাছে এসেছিলেন আর কেনই বা অমন সব অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলেছিলেন। কিন্তু যতক্ষণ না জানতে পারছি…
হ্যাঁ, বললেন পোয়ারো। আপনি কিছুতেই ঘুমাতে পারবেন না। আর ঘুমালেও রাতে আপনি জেগে উঠবেন। আর আমি যদি আপনাকে জেনে থাকি তাহলে বলতে পারি আপনার মাথায় অত্যাধিক বিস্ময়কর সব ধারণা গিজগিজ করছে। সেগুলোকে ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে একটা আকর্ষণীয় অপরাধমূলক কাহিনি তৈরি করতে পারবেন। রহস্যময় গোয়েন্দা থ্রিলার–এ ধরনের আর কি।
বেশ আমি যদি সেইভাবে ভেবে নিয়ে থাকি তো নিশ্চয়ই পারব। মিসেস অলিভার বললেন। এবং এই সময়ে তার চোখ দুটি একটু উজ্জ্বল হয়ে উঠল।