অ্যান্টহুইসল বুঝতে পারলো টিমোথি আশা করেছিল রিচার্ডের পরে সেই সমস্ত সম্পত্তির মালিক হবে।
তাকে রিচার্ড তা করে যায়নি। কি এরকম কথা রিচার্ড প্রথমে ভেবেছিল তারপরে মত পরিবর্তন করেছিল?
বেড়ালের মারামারির একটা শব্দ হল বাইরে। উত্তেজিত টিমোথি জানলায় উঠে গিয়ে একটা বই নিয়ে ছুঁড়ে মারল।
যত সব ফুলের কেয়ারী নষ্ট করে দিচ্ছে।
বসে আবার বদল : অ্যান্টহুইসল একটু মদ খাও।
না-না, আমি এইমাত্র চা খেলাম।
আমি শুনলাম, অন্ত্যেষ্টি থেকে ফেরার পথে ওর গাড়ী নাকি ব্রেকডাউন হয়ে গেছিল।
হা হয়েছিল। এসে টেবিলে একটা কাগজ দেখলাম, ঠিক মেয়েটা লিখে গেছে ম্যাডাম রাত্রে ফিরবেন না।
টিমোথি ভাবতে লাগল দুঃখিতভাবে।
কোরা অন্ত্যেষ্টির দিন একটা কাণ্ড করে গেছে। সে বলেছে রিচার্ডকে খুন করা হয়েছে, তাই না। বোধহয় মড তোমাকে বলেছে। অ্যান্টহুইসল বললেন।
হ্যাঁ, আমি শুনেছি। ও বাচ্চা অবস্থায় কি রকম কথাবার্তা বলত তুমি জান তো? আমাকে ফোন করে আমার খবর নিল, আর উইলের কথাটা জানাল। আমি খুব আঘাত পেয়েছিলাম, জানো। এটা রিচার্ডের আমার প্রতি ঘৃণার ফল। যদিও মৃত সম্বন্ধে কিছু বলা ঠিক নয়।
তারপর ফিরে এসে মড বলল, ডিয়ার, অ্যান্টহুইসল অনেকক্ষণ কথা বলেছেন। এবার তোমার বিশ্রাম দরকার।
হা হয়ে গেছে। যদিও পুলিশের উপর আমার বিশেষ বিশ্বাস নেই। আমাকে নিয়ে যেন টানাটানি না করে। কোরার সমাধির বন্দোবস্ত কর।
আচ্ছা তা আমি দেখব।
অ্যান্টহুইসল পরদিন সকালের ট্রেনে লণ্ডনে ফিরে এলো।
বাড়িতে এসে তিনি তার এক বন্ধুকে ফোন করলেন।
.
সপ্তম পরিচ্ছেদ
০১.
আমি তোমার নিমন্ত্রণ পেয়ে খুব খুশী হয়েছি। বন্ধুর হাতে চাপ দিলেন অ্যান্টহুইসল।
আমি আজ গ্রাম থেকে ফিরলাম, চেয়ারে বসে অ্যান্টহুইসল বললেন।
তোমার কথা ডিনার খাওয়ার পর শুনব।
খাবার নিয়ে এল জর্জের।
মিঃ অ্যান্টহুইসল সামান্য চিন্তা করে আরম্ভ করলেন। জানি না ব্যাপারটা কিরকম দাঁড়াবে। তবে আমি একটা সমাধান চাই। আমি তোমার কাছে সব বলছি? তারপরে তুমি তোমার মতামত জানিও।
বলা শেষ হলে এরকুল বলল : খুব পরিষ্কার মনে হচ্ছে, তুমি বলছ রিচার্ড খুন হয়েছে। এটার ভিত্তি হচ্ছে কোরার কথাটা। অন্ত্যেষ্টির পরের দিনই কোরার মৃত্যু অস্বাভাবিক নাও হতে পারে। রিচার্ড হঠাৎ মারা গেছেন ঠিক। তবে বড় একটা ফ্যামিলি ডাক্তার ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছে। রিচার্ডকে পোড়ানো হয়েছে না সমাধি দেওয়া হয়েছে?
পোড়ানো হয়েছে।
আর এখানে প্রধান ব্যাপার হল, তুমি বিশ্বাস করেছ কোরা সত্যি কথা বলেছে।
হ্যাঁ, আমি করেছি।
কেন?
কেন? অ্যান্টহুইসল যেন একটু হতভম্ব হলো। কারণ হচ্ছে তুমি রিচার্ডের মৃত্যুর ধরনে একটু সন্দেহ করেছিলে।
না না, বিন্দুমাত্র না।
তাহলে কোরার কথায়?
হা কোরা সব সময় অস্বস্তিকর সত্যি কথা বলত। যা সাধারণত কেউ বলতে চায় না।
মিঃ অ্যান্টহুইসল কেঁপে উঠলেন।
এখন বল কোরা যখন কথাটা বলল তখন সবাই কি প্রতিবাদ করেছিল?
হা করেছিল।
তখন একটু ঘাবড়ে গিয়ে মেয়েটা বলল, না না, আমি ঠিক বলিনি। তবে ও যা বলেছিল সে থেকে ধারণা হয়েছিল।
আচ্ছা তুমি কারুর মুখে অস্বাভাবিক কিছু দেখেছিলে?
না। পরদিন কোরা আবার খুন হল, বল দেখি এটা কি কার্য কারণ সম্পর্ক?
আবার অ্যান্টহুইসল শিহরিত হলেন।
তাহলে তুমি মনে করছ এটা একটা খুন।
গম্ভীরভাবে পোয়ারো বলল : হ্যাঁ এটা তদন্তের ব্যাপার, তুমি কিছু করেছ? পুলিশকে জানিয়েছ?
না, যদি রিচার্ডকে খুন করা হয়ে থাকে, তবে আমি সংসারের প্রতিনিধি হিসাবে এগোতে পারি।
ওর মৃত্যুর সময় এখানে কে ছিলো?
একজন পুরোন বৃদ্ধ বাটলার, একজন রাধুনী, আর একটা কাজের মেয়ে।
আবার পোয়ারো বলে চলল, বিষ দিয়ে যদি হয় তাহলে অনেক ধরনের বিষ হতে পারে। বোধহয় নার্কোটিকই হবে। সে যাতে ঘুমের মধ্যেই মারা যায় এবং কারুর সন্দেহ না হয়।
যাই হোক না কেন তা প্রমাণ করা মুশকিল।
হা রিচার্ডের ক্ষেত্রে অসম্ভব হলেও, কোরার ক্ষেত্রে অসম্ভব নয়। কোরার হত্যাকারীকে জানতে পারলে অনেক প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে। তারপর অ্যান্টহুইসল কে বলল, তুমি ইতিমধ্যেই কিছুটা এগিয়েছ মনে হয়?
হা খুব সামান্য, আমি আমার সন্দেহের গণ্ডীটা কমিয়ে আনতে চেষ্টা করেছিলাম। আমি অনুসন্ধান করেছিলাম কোরার মৃত্যুর দিন বিকেলে এবারেনথী আত্মীয়দের মধ্যে বাড়িতে কেউ ছিল না।
কি করছিল?
জর্জ ক্রসফিল্ড হাপার্কের রেসে গেছিল। রোজামণ্ড গেছিল বাজার করতে। সুসান আর গ্রেগরী সারাদিন তাদের বাড়িতে ছিল। টিমোথি পঙ্গু, সে তার ইয়র্ক শায়ারের বাড়িতে ছিল। তার স্ত্রী মড এণ্ডারবি থেকে গাড়ী করে ফিরছিল।
ওদের কথাগুলো সত্যি?
কথাগুলো সত্যি কিনা তা আমি তলিয়ে বুঝিনি। তবে আমার ধারণা হল, জর্জ বোধহয় সেদিন রেস খেলতে যায়নি। আমি জানি, অনেক অপরাধী বেশি কথা বলে তাদের অবস্থা খারাপ করে ফেলে।
আচ্ছা ওর মামার মৃত্যুর সময় জর্জের কি টাকার জরুরী ছিল?
আমার ধারণা ওর টাকার জরুরী দরকার ছিল। যদিও কোনো প্রমাণ নেই। তবে বেশ সন্দেহ হয় যে ও তার মক্কেলের টাকা খরচ করে ফেলেছিল এবং কাঠগোড়ায় যাওয়ার অবস্থায় পৌঁছে গেছিল, আমার ধারণা রিচার্ড খুব ভালো মনুষ্য চরিত্র বুঝত এবং সে জর্জের উপর আস্থা রাখতে পারেনি।