মড এবারেনথী সন্ধ্যাবেলায় অ্যান্টহুইসলকে ফোনে ডাকল। কোরার মৃত্যুর কথা শুনে টিমোথির অবস্থা ভীষণ খারাপ হয়ে পড়েছে। বলল।
মড বলল, আপনি কি মনে করেন এটা খুন?
হ্যাঁ, খুন।
কাগজে লিখেছে একটা কুড়ুল দিয়ে?
হা।
আমি টিমোথিকে নিয়ে বিশেষ চিন্তিত। ওকে আমি শুইয়ে রেখেছি। কিন্তু ও বার বার আপনার সাথে দেখা করতে চাইছে। ও জানতে চাইছে কোরা কোনো উইল করে গেছে কিনা।
হ্যাঁ, একটা উইল করে গেছে এবং টিমোথিকে একজিকিউটার করে গেছে। সে তার ছবিগুলো এবং ক্রমেথি ব্রোচটা তার সঙ্গী গিলখ্রিস্টের জন্য রেখে গেছে, বাকি সবই সুসানের জন্য।
সুসানের জন্য? ওতো বাচ্চা বয়সে ছাড়া সুসানকে চোখে দেখেনি।
মড একটু থেমে বলল, আচ্ছা তাহলে কোরার রিচার্ডের দেওয়া সম্পত্তির ভাগটা সুসান পাবে?
না না। কোরার সম্পত্তিটা সবার মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
কাউকে ধরা হয়েছে?
এখনও না।
আপনি তাহলে আসতে পারবেন না, আপনি এলে আমি খুশি হতাম অর টিমোথি একটু স্বস্তি পেত।
ঠিক আছে, আমি যাব, একজিকিউটর হিসাবে কয়েকটা কাগজপত্রে টিমোথির সইও লাগবে।
খুব ভালো হল। কালকে রাত্রে থাকবেন এখানে। এগারটা কুড়ির ট্রেনই সবচেয়ে সুবিধাজনক।
না না, আমি বিকেলের ট্রেনে যাচ্ছি।
.
০২.
একটু বিস্ময়ের সাথে জর্জ ক্রসফিল্ড অভ্যর্থনা জানালেন মিঃ অ্যান্টহুইসলকে।
অ্যান্টহুইসল বললেন, আমি এইমাত্র লীচেট সেন্ট মেরী থেকে ফিরলাম।
তাহলে অ্যান্ট কোরাই? আমি কাগজে পড়ে বিশ্বাস করতে পারিনি। ভেবেছিলাম ঐখানের আর কেউ হবে।
ল্যান্স কোয়েনেট সাধারণ নাম নয়।
অধিক, তবে নিজের আত্মীয়দের মধ্যে কারুর বিপদের কথা বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না।
আপনি বিশেষ কিছু চিন্তা করছেন?
না, না, তা নয়। সম্পত্তির ব্যাপার ঠিকঠাক হতে সময় লাগবে। তোমার কি আগাম টাকার দরকার?
হা, আমি আজ সকালে ব্যাঙ্কে গেছিলাম। আমি ওদের কাছে আপনার কথা বলেছি, ওরা ওভারড্রাফট দিতে রাজি।
চোখ পিটপিট করল জর্জ। অ্যান্টহুইসল তার অভিজ্ঞতার দৃষ্টি দিয়ে এর অর্থ বুঝলেন।
অ্যান্টহুইসলের নীরবতায় ভুল বুঝে জর্জ ব্যাখ্যা করতে লাগল।
আমার একটু ধারণা সময় যাচ্ছে, যাতে টাকা খাঁটিয়েছিলাম যেটা সফল হল না। আমার কিছু মূলধন দরকার।
অ্যান্টহুইসল বললেন, অন্ত্যেষ্টির পরে আমি তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম, তোমাকে অফিসে পাইনি।
হা কোরার মৃত্যুতে টাকার অঙ্কটা আরও বাড়বে।
দুঃখের ভান করে জর্জ বলল :
বেচারা, যখন একটা নতুন জীবনের পথে পা ফেলতে যাচ্ছিল—
তুমি যে দুটো ঘোড়ায় জিতেছিলে তাদের নাম মনে করতে পারবে?
বলছি। মার্ক আর ফ্রগ। ওদের নাম ভুলব না।
শুষ্ক হাসি হেসে মিঃ অ্যান্টহুইসল বিদায় নিলেন।
.
০৩.
রোজামণ্ড বলল, আপনাকে দেখে খুশী হলাম। তবে এত সকালে।
ব্ল্যাক কফি নিয়ে হাই তুলতে তুলতে মাইকেল এল।
মিঃ অ্যান্টহুইসল দেখলেন, ঘরের চারদিকে পোড়া সিগারেট, বোতল, গ্লাস ছড়ানো, একটা বিশৃংঙ্খল অবস্থা।
এই বিশৃংঙ্খলার মাঝে দুজন সুন্দর যুবক-যুবতী। রোজামণ্ড বলছিল, আমাদের ভাগ্য ভালো। রিচার্ড মামা খুব ভালো।
তাই নাকি?
চুরি করে, ডাকাতি করে, খুন করে পুলিশের তাড়া খায়–কিন্তু শেষকালে একটা বিস্ময়কর কাজ করে।
মাইকেলের মুখ থেকেও বিরক্তিটা মুছে যায়নি। অ্যান্টহুইসল বিরক্ত হয়ে বলল। তুমি তোমার বকবকানি থামাবে।
অ্যান্টহুইসল বললেন, আমি এইমাত্র লীচেট সেন্ট মেরী থেকে ফিরলাম।
তাহলে আন্ট কোরা খুন হয়েছেন। কুড়ুল দিয়ে? আমি ওদের বললাম। ওরা বিশ্বাস করল না।
নীরব মাইকেল।
দুটো খুন একটার পর একটা।
বোকার মত কথা বোল না। তোমার মামা খুন হয়নি।
কোরা বলল, মামা খুন হয়েছেন, অ্যান্টহুইসল হস্তক্ষেপ করলেন।
তোমরা অন্ত্যেষ্টির পর লণ্ডনে ফিরে এসেছিল?
হা।
আমি তার পরের দিনটায় তোমাদের খবরটা চাই।
ডীয়ার আমরা পরের দিন কি করেছিলাম? আমরা বারটা পর্যন্ত বাড়িতে ছিলাম। তারপরে তুমি রোজে হাইসের সাথে দেখা করতে চাইলে এবং অসকারের সাথে লাঞ্চ খেতে গেলে। বিকেলে বাজার গিয়ে খাওয়ার পর আমরা ক্যানটিনে ডিনার খেয়ে দশটার সময় বাড়ি ফিরি।
মাইকেল বলল, আমাদের সম্বন্ধে কি জানতে চাইছো?
এবারেনথীর সম্পত্তি সম্বন্ধে কয়েকটা ব্যাপার আর সই নেওয়ার জন্য।
রোজামণ্ড বলল, টাকা এখন পাওয়া যাবে?
দেরী হবে।
রোজামণ্ড জিজ্ঞেস করল, আন্ট কোরা টাকা রেখে গেছেন নাকি?
সামান্য, সুসানের জন্য।
সুসানের জন্য কেন? কত টাকা?
কয়েকশ পাউণ্ড আর কয়েকটা আসবাবপত্র।
.
০৪.
সুসান ব্যাঙ্কের উজ্জীবিত ভঙ্গীতে কথা বলা লক্ষ্য করেছিলেন অ্যান্টহুইসল। সুসানকে দেখতে অনেকটা রিচার্ডের মত। রিচার্ডের বিচারে সুসানই উপযুক্ত উত্তরাধিকারী হতে পারত। কিন্তু সুসান শুধু একটা ভাগ পেল যা রোজামণ্ডও পেয়েছে।
কারণটা বোধ হয় সুসানের স্বামী। গ্রেগরী ব্যাঙ্ককে ওর স্বামী হিসেবে মোটেই মানায়নি। তবুও সুসান সবার মতের বিরুদ্ধে একেই বিয়ে করেছিল।
সুসান তোড়ে কথা বলে যাচ্ছিল।
পুলিশ কোনো কাজের নয়। কোনো অপরাধীকেই পুলিশ ধরতে পারল না।
অ্যান্টহুইসল ঠাট্টা করে বললেন, তুমি কি খুন নিয়ে গবেষণা করছ?
এসব ভাববার ব্যাপার নয়? আজ আমার আন্ট মরল। এইসব অপরাধী খুনীগুলো নৃশংস খুন করে বেড়াচ্ছে, আর পুলিশের কোনো মাথা ব্যথা নেই।