.
০৩.
সে রাতে মড এবারেনথী এণ্ডারবীতে থেকে গেলেন। তিনি ভাবছিলেন সবই রিচার্ডের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। ব্যক্তিগত চিঠিও থাকতে পারে, তবে গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র সবই অ্যান্টহুইসলের জিম্মায় গেছে মনে হয়। উনি তাড়াতাড়ি টিমোথির কাছে গেলেন, না গেলে টিমোথি রাগ করে। আর রাগলে মাঝে মাঝে জ্ঞানকাণ্ড থাকে না। সে ভাবল ডঃ বার্টনকে একথা বলবে কিনা–টিমোথি ঐ স্লিপের পীলগুলো এখন বেশি মাত্রায় খাচ্ছে। টিমোথি ওষুধের ব্যাপারে ভীষণ অবুঝ।
সে নিশ্বাস ফেলল, তার মনটা তারপর খুশী হয়ে উঠলো। উদাহরণ হিসেবে বাগানটা….
.
০৪.
বসার ঘরে বসে হেলেন এবারেনথী ডিনারের জন্য মডের অপেক্ষা করছিল। এখানে লিও এবং অন্যদের সাথে তার পুরোন দিনের কথাগুলো মনে হল।
এই বাড়ি কে কিনবে? এটাকে সম্ভবত তরুণদের জন্য হোস্টেল করা হবে। সে ভাবতে লাগল যা টাকা পেল তাতে রাখতে পারবে সাইপ্রাসের ভিলাটা। এতদিন যতসব পরিকল্পনা করেছে সে সব কাজে লাগাতে পারবে।
বেচারা রিচার্ড। ঘুমের মধ্যে ওর মৃত্যু হয়েছে বাইশ তারিখে। ওর মৃত্যু নিশ্চয়ই খুন এই কথাটা কোরার মাথায় ঢুকেছে।
হেলেন ভাবল, তবে কি ভাবে সহজে বলে দিলো। ওকে খুন করা হয়েছে,তাই না। এই ছবিটা হঠাৎ পরিষ্কারভাবে তার মনের মধ্যে ফুটে উঠতে, হেলেনের কপালে ভাঁজ পড়ল…একটু গোলমাল আছে ছবিটাতে।
এটা কি কারুর মুখের ভাব? তাই কি? সেই রকম কিছু একটা, কি করে সে এটাকে বোঝাবে? ঐ রকম কিছু থাকা ওখানে উচিত ছিল না…?
.
০৫.
সুইনডন বুফেতে বসে একজন মহিলা চা খেতে খেতে ওর ভবিষ্যতের কথা ভাবছিল।
তারপর সে ঘড়ির দিকে তাকাল। আর পাঁচ মিনিট দেরি আছে ট্রেন ছাড়ার। সে একটা সুখী শিশুর মত হাসল।
সে এতদিন একটু ফুর্তি করতে পারবে, ট্রেনের দিকে যেতে যেতে সে প্ল্যান আঁটছিল।
.
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
০১.
একটা অশান্ত রাত কাটালেন মিঃ অ্যান্টহুইসল।
সে বাড়িটার দেখাশুনা করে তার বোন–ট্রেতে করে নিয়ে এল সকালের ব্রেকফাস্ট।
তার বোন বলল–তোমার মত বয়সের লোকের কারুর অন্ত্যেষ্টিতে উপস্থিত থাকা খুব খারাপ। তুমি যদি নিজের দিকে নজর না দাও তাহলে শীগগিরই তোমার অনেক দিনের বন্ধুর কাছে হঠাৎ চলে যাবে।
সন্ধ্যে পৌনে ছটার সময় টেলিফোন বেজে উঠল। তারের অন্যপ্রান্তে অ্যান্টহুইসল এণ্ড বোলার্ডের দ্বিতীয় পার্টনার মিঃ জেমান প্যারটের গলায় শব্দ শোনা গেল।
প্যারট বলল শোন অ্যান্টহুইসল, আমাকে এইমাত্র লীচেট সেন্ট মেরী নামে একটা জায়গা থেকে পুলিশ ফোন করেছিল।
লীচেট সেন্ট মেরী?
হ্যাঁ, একজন কোরা ল্যান্স কোয়েনেট সম্বন্ধে। ও এবারেনথী এস্টেটের একজন ভাগীদার না?
হ্যাঁ, আমার সাথে পরশুদিন দেখা হয়েছিল, কি হয়েছে ওর?
প্যারেট বলল, ও খুন হয়েছে।
খুন হয়েছে? পুলিশ তোমাকে ফোন করল কেন?
কোরার মিস গিলক্রিস্ট নামে একজন কাজের মেয়ে। পুলিশ ওকে সলিসিটারের নাম জিজ্ঞাসা করতে ও আমাদের নাম বলে দিয়েছে।
পুলিশ কি করে বুঝল খুন হয়েছে?
কারণ খুনি কুড়ুল দিয়ে খুন করেছে।
ডাকাতি?
সেইরকমই মনে হয়।
কখন হয়েছে?
আজ বিকেল দুটো থেকে সাড়ে চারটের মধ্যে।
কাজ করার লোক কোথায় ছিল?
লাইব্রেরীতে বই পাল্টাতে গেছিল। পুলিশ জিজ্ঞেস করল কোরাকে কে আক্রমণ করতে পারে। আমি বলেছি, খুব অস্বাভাবিক। হয়ত স্থানীয় কোনো বোকা চোর চুরি করতে ঢুকে মাথা ঠিক রাখতে না পেরে খুন করে ফেলেছে।
ফোনটা রেখে দিলেন অ্যান্টহুইসল। আবার সত্যি কথাটা আঘাত করল অ্যান্টহুইসলের মনে।
.
০২.
ইনস্পেক্টর মর্টন ও মিঃ অ্যান্টহুইসল এখন সামনাসামনি বসে আছেন।
ইনস্পেক্টর জিজ্ঞাসা করলেন, মিঃ অ্যান্টহুইসল, আপনি তো মিসেস ল্যান্স কোয়েনেটকে অন্ত্যেষ্টির দিন দেখেছিলেন। অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করেছিলেন কি?
অ্যান্টহুইসল বললেন, যে খুন হবে তাকে কি আগে থেকে অস্বাভাবিক হতে হবে?
মর্টন হেসে বললো, আমি কিছু একটা খুঁজে বেড়াচ্ছি।
ও কি সম্পত্তি পেয়েছিল?
হা।
তবে প্রচণ্ড মাথার যন্ত্রণায় ওর ঘুম ভেঙে গেছিল। সে দুটো ঘুমের বড়ি খেয়ে নিয়েছিল এবং গিলফ্রিস্টকে লাইব্রেরীতে বই পাল্টানোর জন্যে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। সেই সুযোগে খুনী জানালা ভেঙে বাইরে থেকে কুড়ুল নিয়ে ঢুকেছিল।
অ্যান্টহুইসল বললেন, যদি মেয়েটা বাধা দেয়–
না, না মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া গেছে ঘুমোনোর সময় খুন করা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হয়নি সুতরাং খুনী যদি গাড়ী করে এসে থাকে তবে বোঝা মুস্কিল।
কিছু চুরি গেছে?
সেও অদ্ভুত ব্যাপার। গয়নার বাক্স থেকে কিছু গয়না নিয়ে গিয়ে বাইরের ঝোঁপের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে গেছে।
হা হতে পারে, গিলফ্রিস্টও খুন করতে পারে। এই দুজন মেয়ের হয়ত কোনো ঝগড়া হয়েছিল। আপনি বলছেন ল্যান্স কোয়েনেটকে মেরে কারুর স্বার্থসিদ্ধি হবে না?
আমি ঠিক সে কথা বলিনি।
মর্টন বলল, আপনি বললেন, ল্যান্স কোয়েনেটের নিজের বলতে কিছু ছিল না। তার ভাইয়ের সম্পত্তি তার একমাত্র উপার্জনের উপায় ছিল?
সত্যি কথা।
আমি বলছি ওর ভাই যে সম্পত্তির ভাগ ওর জন্য রেখে গেছিল, ওর মৃত্যুর পর কারুর পাওয়ার সম্ভাবনা আছে?
না ওর মৃত্যুর পরে ওর ভাগের সম্পত্তি সবার মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে।
ইনস্পেক্টরকে হতাশ দেখাল।