আপনি দেরী করে ফেলেছেন মামা, জর্জ বলল। আমি ওটা আজ সকালেই হেলেনকে আমাদের জন্য রেখে দিতে বলেছি।
না তা হবে না, টিমোথি গজরালেন। মড এবার অংশ নিলেন।
প্লীজ জর্জ, তোমার মামার সাথে কথা কাটাকাটি কোর না। ওর হার্ট খুব দুর্বল। ও যদি স্পোডঠা চায় তাহলে ওটা ওই পাবে। ও বংশের সবার চেয়ে বয়সে বড়। বেছে বেছে নেওয়ার অধিকার ও আগে পাবে।
ও জিনিসটা কিন্তু বাজে দেখতে, সুসান বলল।
চুপ কর সুসান, টিমোথি বলল।
হেলেন বলল, তুমি ওটা তোমার মামাকে দিয়ে দাও জর্জ।
এটা তোমার পক্ষে সম্মানের হবে।
জর্জ মাথা নিচু করে বলল, তোমার ইচ্ছেই আইন। আন্ট হেলেন, আমি আমার দাবী তুলে নিচ্ছি।
তাহলে তুমি চাও না। হেলেন বলল।
জর্জ হেলেনের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে হাসল। তোমাকে যতটা চালাক মনে হয় তুমি তার চেয়েও বেশি চালাক। টিমোথি আঙ্কল ডেটা আপনার। আমি একটু মজা করছিলাম।
শরীর খারাপের জন্য আমি অন্ত্যেষ্টিতে আসতে পারিনি। আস্তে আস্তে টিমোথি বলছিলেন, তবে মড আমাকে বলেছে কোরা কি বলেছে। কোরা সবসময় বোকার মত কথা বলে। তবে এই কথাটার অর্থ ছিল মনে হয় এবং যদি কথাটা সত্যি হয়, তবে আমি জানি কাকে আমি সন্দেহ করব।
টিমোথি ঝড়ের গলায় কঠিন কর্তৃত্বের সুর। আজকে তুমি খুব বাড়াবাড়ি করছ। তোমার স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা কর।
সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নিয়ে মড় ঘরে টিমোথির হাত ধরে বেরিয়ে গেল।
জর্জ নীরবতা ভাঙল ওরা চলে যাওয়ার পর।
গিলফ্রিস্ট এসে আবার অস্থিরতার সাথে বলল, মিসেস এবারেনথী খুব দয়ালু।
ব্যর্থ হল মন্তব্যটা।
হঠাৎ মাইকেল শেন বলল, আমি বেশ উপভোগ করছিলাম। এবার আমাদের দাবীটা পেশ করি। রোজামণ্ড এবং আমি বসার ঘরের স্যালাটীট টেবিলটা চাই।
না না, সুসান চেঁচিয়ে উঠল, আমি ওটা নেব।
এদিকে আবার আরম্ভ হয়েছে। জর্জ সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে বলল।
না আমরা রাগারাগি করব না, সুসান বলল।
আমার এটা দরকার কারণ এটা আমার বিউটি সপে লাগবে। স্যালাটীট টেবিল সাধারণতঃ পাওয়া যায় না।
এই জন্যই ওটা আমাদের দরকার, রোজামণ্ড বলল।
বুঝলাম, সুসান বলল, আমার মত তোমাদের দরকার নেই।
গ্রেগ নার্ভাস গলায় বলল : সুসান ঐ টেবিলটা চায়।
একটা অস্বস্তিকর নীরবতা নেমে এল।
তাড়াতাড়ি হেলেনে বলল : জর্জ তুমি স্পেড় ছাড়া কি চাও?
জর্জ হাসল।
আমার কোনো জিনিসে লোভ নেই। যাক টেবিলের যুদ্ধ আজকের মত থাক। আমি সুন্দরী সুসানের পক্ষ নিলাম।
ইচ্ছাকৃতভাবে হেলেন প্রসঙ্গ পাল্টানোর জন্য বিদেশী অতিথির দিকে ঘুরল।
মিঃ পনটার্লিয়ার এসব নিশ্চয়ই আমার ভালো লাগছে না। আদৌ না এই সাংবাদিক অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে পেয়ে আমি সম্মানিত। পোয়ারো মাথা নিচু করলেন। তবে বাড়িটা আপনাদের হাত থেকে একজন বিদেশীর কাছে চলে যাচ্ছে তাতে আমি দুঃখিত।
না আমাদের বিশেষ দুঃখ নেই, সুসান বলল। পোয়ারো বললেন, বাড়িটাকে ধর্মশালা করলে কেমন হয়? মিস্ গিলফ্রিস্ট তুমি তো নানদের পছন্দ করো না?
না না, তা ঠিক নয়। ওরা স্বার্থহীন মহিলা। ওদের এত একরকম দেখতে হয়, গিলফ্রিস্ট বলল। মিঃ এবারেনথীর বাড়িতে একজন নান চাঁদা নিতে এসেছিল, আমি ওকে দেখে চমকে উঠেছিলাম। লীচেট সেন্ট মেরীতে মিসেস ল্যান্স-কোয়েনেটর মৃত্যুর যেদিন তদন্ত হল সেদিন এক নান এসেছিল ঠিক তার মত। কেন সে আমাকে অনুসরণ করে বেড়াচ্ছে।
আমি ভাবতাম দুজন নান একসাথে চাদা তোলে, জর্জ বলল।
না না, একজন মাত্র নান এসেছিলেন, গিলফ্রিস্ট বলল।
আবার বলল : নিশ্চয়ই ইনি সেই একই নান নন, কিন্তু দুজনেরই একই রকম চেহারা? পোয়ারোর গলায় কৌতূহল।
পোয়ারোর দিকে গিলক্রিস্ট তাকাল।
হ্যাঁ প্রায়, উপরের ঠোঁটে দুজনেরই গোঁফের মত ছিল। আমি সত্যি ভয় পেয়ে গেছিলাম। তবে এরকম ভাবনা সম্পূর্ণ বোকামীর লক্ষণ আমি পরে বুঝতে পেরেছিলাম।
সত্যি ব্যাপারটা হল; জর্জ বলল, কেউ কারুর দিকে মনযোগ দিয়ে তাকায় না। তাই কোর্টে সাক্ষীরা একই লোকের বিভিন্ন বর্ণনা দেয়। ঐ ঠিক বর্ণনাকারী লোককে বেছে নেওয়া মুশকিল।
ম্যাডাম গুডনাইট, কাল সকালের ট্রেনেই চলে যাব। আপনার আদর আপ্যায়নের জন্য অনেক ধন্যবাদ। বাড়ি হস্তান্তরের দিন মিঃ অ্যান্টহুইসলের সাথে ঠিক করে নেওয়া যাবে। অবশ্য আমাদের সুবিধে অনুযায়ী।
আপনি ইচ্ছে করলে ওটা যে কোনো মুহূর্তে করে দেওয়া হবে মিঃ পনটার্লিয়ার। আমি যেজন্য এখানে এসেছিলাম সব হয়ে গেছে।
আপনি এবার আপনার সাইপ্রেসের ভিলায় ফিরে যাবেন?
হা, হেলেনের মুখে একটা মৃদু হাসি ফুটল।
পোয়ারো বললেন : আপনি খুশী তো? কোনো অনুশোচনা নেই?
হা হা, অতীতের সাথে জড়িয়ে থেকে কোনো লাভ নেই। অতীতকে পেছনে ফেলে যেতেই হয়।
অনিশ্চিতভাবে সুসান হাসল। পোয়ারো বললেন : আমি আন্তরিক ভাবেই বলছি।
তাহলে আপনি বলতে চাইছেন মাইকেল, আপনার রিফিউজিরা যখন এখানে বসবাস করবে তখনও তাদের অতীত দুঃখ কষ্টকে সারাতে পারবে না?
আমি রিফিউজিদের কথা বলিনি।
রোজামণ্ড বলল, তিনি আঙ্কল রিচার্ড, আন্ট কোরা, কুড়ুল খুন এসব বলতে চাইছেন।
পোয়ারোর দিকে ঘুরে সে জিজ্ঞেস করল : ঠিক বলিনি?
পোয়ারো বললেন, তোমার একথা মনে হল কেন?
কারণ আপনি একজন রহস্য সন্ধানী, তাই না? সেইজন্যই আপনি এখানে এসেছেন, আপনি ঐসব রিফিউজিদের কথা বলেছেন, ওসব ভুয়ো ব্যাপার।