আমি ভেবেছিলাম আপনার রোদ ভালো লাগবে। আজ রোদ ঝলমলে দিন।
না, আমার ঘর অন্ধকার থাক। ঐ রঙের গন্ধ আমার সহ্য হয় না। আমাকে পাগল করে দিচ্ছে।
মড কোথায়? ঘন্টখানেক হল দেখছি না।
তিনি বিশ্রাম করছেন।
ওকে এখানে এসে বিশ্রাম নিতে বলবে। নিচে নেমে গিলফ্রিস্ট চুপিচুপি ঘরে ঢুকে দেখল মড একটা নভেল পড়ছেন।
আপনাকে মিঃ এবারেনথী ডাকছেন। মড নভেলটা রেখে সঙ্গে সঙ্গে উঠে পড়ল।
ওহ আমি ভুলে গেছিলাম, এক্ষুনি যাচ্ছি। স্ত্রী ঘরে ঢোকার সাথে সাথে টিমোথি ফেটে পড়লেন।
এতক্ষণে আসা হল?
আমি দুঃখিত ডিয়ার, আমি জানতাম না তুমি আমায় ডাকছ।
তুমি যে মেয়েটাকে বাড়িতে ঢুকিয়েছ, আমায় পাগল করে ছাড়বে।
ও তোমায় বিরক্ত করেছে, ও কিন্তু সেবা করতে চায়। তারপর বলল, কেমন আছ?
না ভালো নেই, তুমি কটনকে একবার ডেকে পাঠাও। এই রক্তের গন্ধ আমার হার্টে আঘাত করছে।
কিচেন গিলক্রিস্ট চা খেতে খেতে মিসেস হেলেনের সাথে গল্প করছিল।
আমি সব সময় চেষ্টা করছি মিসেস এবারেনথীর কষ্ট কমাতে। ওই সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা ওর পক্ষে ভীষণ কষ্টকর।
ওর পিছনে লেগে থাকতে হয়, চায়ের কাপে চামচ নাড়তে নাড়তে জোনস বলল।
ওর পঙ্গু অবস্থা ভীষণ দুঃখকর।
হঠাৎ টেলিফোন বেজে উঠল। গিলক্রিস্ট তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেল ফোনটা ধরার জন্য।
মিঃ টিমোথি গিলফ্রিস্টের দিকে রাগতমুখে তাকালেন। সে যখন ট্রে তুলছিল বললেন : কে ফোন করছে?
মিসেস লিও এবারেনথী।
তাহলে ঘন্টা খানেক গল্প চলবে। ফোনে কথা বলার সময় মেয়েদের জ্ঞান থাকে না। বোঝে না ওরা তো টাকা নষ্ট করছে।
তারপর বললেন : পর্দাটা একটু সরিয়ে দাও, ওটা নয় এটা। চোখে আলো পড়লে ভালো লাগে না। তুমি ঐ বইকেস থেকে একটা বই দাও তো। কী হল।
কোনো বইটা আপনি চাইছিলেন?
তোমার জন্য ভুলে গেলাম, যেতে পার।
মড উল গোটাচ্ছিল গিলক্রিস্ট আর কাছে গেল। তারপর মড় কষ্টের সাথে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে লাগলেন।
হেলেন ফোন করছিল বাড়িটা কোনো বিদেশী রিফিউজি প্রতিষ্ঠানকে বিক্রি করা হবে?
টিমোথি কথটা শুনে ক্ষেপে গেলেন।
আর কিছু থাকল না, আমাদের পুরনো বাড়ি, যেখানে জন্মেছি? ওঃ আমি আর চিন্তা করতে পারছি না।
মড বলল : হেলেনও এই কথা বলছিল, বাড়িটা বিক্রি হয়ে যাবার আগে ওখানে যেতে বলল। ও তোমার স্বাস্থ্য সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন। হোটেলে না গিয়ে এণ্ডারবিতে গিয়ে থাকতে বলল। এখনও চাকররা আছে, তোমার কষ্ট হবে না।
দেখি চিন্তা করে। আমি শুনেছি রঙে আর্সেনিক থাকে। আবার কোথাও যাওয়া আমার পক্ষে কষ্টকর। ভেবে পাচ্ছি না কি করলে ভালো হবে।
হোটেলেই ভালো হবে মনে হয় মড বললেন, টাকা খরচ হবে সত্যি কিন্তু সেখানে তোমার স্বাস্থ্যের প্রশ্ন।
বাধা দিল টিমোথি।
ওহ মড তুমি কি বোঝ না আমরা মিলিওনিয়ার নই। হেলেন যখন বলেছে আমরা তো ওখানে গিয়ে থাকতে পারি। যা হোক মরার আগে বাড়িটা একবার দেখার ইচ্ছে আছে।
মড এবার শেষ কৌশলটা প্রয়োগ করল, আমি শুনলাম মিঃ অ্যান্টহুইসল বাড়িটা বিক্রি হয়ে যাওয়ার আগে সমস্ত আত্মীয়দের ডেকে পাঠিয়েছেন, নীলামে যাওয়ার আগে আত্মীয়রা যদি কোনো আসবাব চায়।
আমাকে যেতেই হবে, বাড়ির একমাত্র লোক বংশধর হিসেবে আমার সেখানে উপস্থিত থাকা দরকার। আমরা ওখানে থাকার সময় বাড়ির রঙ করা শেষ হয়ে যাবে। ঐ মহিলা এখানে থেকে বাড়ির দেখাশুনা করবে।
.
০২.
আমি পারব না। বলল গিলক্রিস্ট।
ওর কথায় মড অবাক হলেন। মিস গিলক্রিস্ট কাঁপছিল।
আমিও বাড়িতে একা থাকতে পারব না। যদি কেউ এখানে শুত তাহলেও হত।
মড এবারেনথী বললেন যে এখানে কেউ এমন নেই যে এখানে ঘুমোতে আসবে। গিলফ্রিস্ট বলল : আপনি হয়ত ভাবছেন আমি ভীতু। কিন্তু আমি কোনোদিন ভয় পেতাম না কিন্তু এখন অন্যরকম, একা থাকলে ভয়ে মরে যাব।
স্বীকার করলেন মড :
হা যদিও এর মধ্যে কোনো যুক্তি নেই, এই ঘটনার পরেও আমি এরকম ভয় পেতাম না। ভয়টা আস্তে আস্তে গজিয়েছে। এখানে আসার পর আমার ভয়টা আরও বেড়ে গেছে–কোনো বিশেষ কারণে নয়। সব সময় মনে হয় একটা সাংঘাতিক কিছু ঘটবে…. এই যে নান এসেছিল তাতেও আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম।
তাই নাকি? আমি জানতাম না, ওঃ আমার এত খারাপ লাগছে। আপনারা কি ভাববেন
সত্ত্বনা দিল মড : আমরা অন্য ব্যবস্থার কথা চিন্তা করছি।
৪. জর্জ ক্রসফিল্ড
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
০১.
একটা মেয়ের পিঠ দরজা দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যেতে জর্জ ক্রসফিল্ড এক মুহূর্ত থামল। তারপর অনুসরণ করতে আরম্ভ করল জর্জ।
একটা দরজার কাছে এল। দরজাটা একটা দোকান ঘরের। অনেকদিন আগে থেকে দোকানটা বন্ধ হয়ে গেছে। কাঁচের জানালা দিয়ে ভেতরটা খালি মনে হয়। দরজাটা বন্ধ। কিন্তু দরজায় জর্জ শব্দ করল। একজন তরুণ, চোখে চশমা। দরজা খুলল।
ক্ষমা করবেন, জর্জ বলল। আমার মনে হল আমার পিসতুতো বোন এক্ষুনি এখানে ঢুকল।
ঢুকে পড়ল জর্জ।
সে বলল, হ্যালো সুসান।
একটা প্যাকিং বাক্সের উপর সুসান দাঁড়িয়েছিল।
হ্যালো জর্জ, তুমি কোত্থেকে এলে?
আমি তোমার পেছনটা দেখে চিনে ফেলেছি।
তাহলে পেছন দিকের একটা বৈশিষ্ট্য থাকে।
জর্জ বলল, এই খালি দোকানটাতে খুন হলে কেমন হত। রাস্তার লোকেরা ভেতর দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখত একটা সুন্দরী লাশকে।
আমাকে খুন করার তোমার কোনো প্রয়োজন নেই। মামার এস্টেটের চতুর্থ অংশ আমি পেয়ে যাব। কারুর খুব টাকার আকাঙ্খা থাকলে এই কারণেই খুন করতে পারে।