অনেক ধন্যবাদ। আমি ইতিমধ্যেই কোরার সুন্দর ছবিগুলো এবং এমেথির ব্রোচ পেয়েছি। মনে হয় ওগুলো তোমাকে দিয়ে দেওয়া উচিত।
না না।
তুমি ওর জিনিসপত্র দেখবে না? তদন্তের পরে দেখবে?
ঠিক করেছি এখানে কয়েকদিন থেকে এইসব জিনিসপত্র বিক্রি করে যাব।
এখানে রাত্রে থাকবে?
হ্যাঁ।
আন্ট কোরার একটা ঘর ছিল না? ওখানে ঘুমোব।
তোমার কিছু মনে হবে না?
কেন? উনি ওঘরে খুন হয়েছেন বলে, না না। তাতে আমার কিছু হবে না। সব ঠিক করা হয়েছে?
হা কম্বল ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমি ও পেন্টার ঘরটাকে ঘসে ঘসে সব দাগ মুছে দিয়েছি। ঘরে আরও কম্বল আছে। তুমি চল উপরে নিজে গিয়ে দেখবে।
সুসান উপরে গেল, এখন কোরার ঘরটা ঝকঝকে তকতকে। এ ঘরেও নানারকম ছবি ভোলোনো। ছবিগুলো মিসেস ল্যান্স কোয়েনেটের স্বামীর আঁকা, গিলক্রিস্ট বলল।
আন্ট কোরার আঁকা ছবি কোথায়?
আমার ঘরে। তুমি দেখবে?
গর্বের সাথে মিস গিলক্রিস্ট তার সম্পত্তি দেখালো।
ছবিগুলো দেখে সুসানের মনে হচ্ছিল কোনো ছবির পোষ্টকার্ড থেকে আঁকা।
ঘড়ি দেখে সুসান বলল : তদন্তের সময় হয়েছে, গাড়ী আনবো নাকি?
না, হাঁটা পথে মাত্র পাঁচ মিনিট।
ওরা একসাথে বেরোল, রাস্তায় মিঃ অ্যান্টহুইসলের সাথে দেখা হয়ে গেল, সবাই মিলে ভিলেজ হলে ঢুকল।
শুরু হল তদন্ত। নানারকম খুঁটিনাটি ব্যাপার সম্বন্ধে আলোচনা করা হোল। শেষে জুরি বললেন, এটা কারুর দ্বারা খুন।
ওরা তদন্তের শেষে বেরিয়ে এলেন, হাফ ডজন ক্যামেরা ক্লিক করল। তারপর ওরা কিংস আর্মে লাঞ্চ খেতে ঢুকল।
অ্যান্টহুইসল খেতে বসে বললেন : সুসান তুমি আজ আসছ বললে না তো? তাহলে আমরা একসাথে আসতে পারতাম।
আমি হঠাৎ চলে এলাম।
তোমার স্বামী এল না?
গ্রেগ ব্যস্ত তার ঐ বাজে দোকান নিয়ে। সুসান বলল, আমার স্বামী কেমিস্টের দোকানে কাজ করেন।
ও কীটসের মত?
আমার স্বামী কিন্তু কবি নন।
সুসান তারপরে বলল : আমরা একটা প্ল্যান করেছি, একদিকে থাকবে ল্যাবরেটরি আর একদিকে প্রসাধন ও বিউটি পার্লার।
খুব ভালো হবে, গিলফ্রিস্ট বললেন, এলিজাবেথ আর্ডেনের মত। আবার বলল, ফার্মেসী সাধারণ দোকানের মত নয়।
আপনার একটা চায়ের দোকান ছিল না?
হ্যাঁ, উইলো টি। গিলফ্রিস্টের মুখ উজ্জ্বল।
সুসানকে সে দোকানের কথা বলতে লাগল। অ্যান্টহুইসল টিমোথির সম্বন্ধে চিন্তা করছিলেন।
সুসান বলল, আঙ্কল টিমোথি? উনি তো পঙ্গু। এ ব্যাপারের সাথে কোনো যোগাযোগ থাকতে পারে নাকি?
না না, আমি ভাবছি মিসেস টিমোথির কথা, সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে পা মচকেছে।
অ্যান্টহুইসল কিংস আর্ম থেকে বেরিয়ে দুই মহিলাকে বিদায় জানিয়ে আবার কিংস আর্মে ঢুকলেন, এখনেই তিনি একটা ঘর নিয়েছেন, কালকে অন্ত্যেষ্টি অনুষ্ঠান হবে।
আমার গাড়ীটা কেয়ারীতে আছে, সুসান বলল। আমি সেটার কথা ভুলে গেছিলাম, আমি পরে ওটাকে গ্রামের মধ্যে নিয়ে আসবো।
মিস্ গিলক্রিস্ট বললেন : দেরী করো না। অন্ধকারের পর বাইরে বেরিয়ো না।
ওর দিকে তাকিয়ে সুসান বলল : আপনি কি ভাবছেন খুনী এখনো এখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে?
না না, তা নয়? গিলফ্রিস্টের অস্বস্তি হয়।
কিচেনের দিকে যেতে যেতে মিস্ গিলফ্রিস্ট বললেন, তোমার আধঘন্টার মধ্যে চা দরকার মনে হয়?
কেউ সাড়ে তিনটের সময় চা খায়। তবুও মিস গিলক্রিস্টকে খুশী রাখা দরকার ভেবে সুসান উত্তর দিল।
যখন ইচ্ছে, মিস্ গিলফ্রিস্ট।
দরজায় কলিং বেল বেজে উঠল কয়েক মিনিট পরেই এবং একটা র্যাট-ট্যাট-ট্যাট শব্দ হল।
উঠে দাঁড়াল সুসান। বেল শুনে গিলক্রিস্ট চলে এসেছিলেন এ্যাপ্রন পরা অবস্থায়
ডাকছে কে বলতো?
সাংবাদিক মনে হয়, সুসান উত্তর দিল।
উঃ, তোমায় জ্বালাল।
না ঠিক আছে, আমি কথা বলছি।
সুসান দরজা খোলার পর একজন বৃদ্ধ ভদ্রলোক বললেন : মিসেস ব্যাঙ্ক, আমার মনে হয়।
হা।
আমার নাম আলেকজান্ডার গাথরী। আমি মিসেস ল্যান্স কোয়েনেটের পুরোন এক বন্ধু। তুমি এবারেনথী বংশের মেয়ে তো?
হ্যাঁ।
গাথরী বসার ঘরের দিকে যেতে যেতে বলছিলেন, খুব দুঃখের দিন, ল্যান্স কোয়েনেটের বিয়ের সময় থেকে আমি এদের সাথে পরিচিত ছিলাম। বেচারা কোরা খুব ভালো মেয়ে ছিল। কোরাও বেশ সমঝদার ছিল।
সবাই সেই কথা বলে। সুসান বলল।
হ্যাঁ, মেয়েটা একটু অদ্ভুত ছিল। কখন যে কি কথা বলবে তার কোনো ঠিক ছিল না। ওর স্বভাব চাল-চলন এখন পর্যন্ত বাচ্চাদের মত ছিল।
বলে চললেন তিনিঃ আমি এখন একটু বিবেকের পীড়নে ভুগছি, কয়েক সপ্তাহ আগে কোরা আমায় আসতে বলেছিল। আমি এসে ওর সাথে দেখা করতে পারিনি। কোরা কিছুদিন হল সেলে ছবি কিনত, আমায় দেখাত। শেষ চিঠিতে আমায় লিখেছিল ও আদিম ইটালীয়ান মানুষের একটা দারুণ ছবি কিনেছে।
ঐ ছবিটা বোধ হয়, সুসান দেওয়ালে ঝোলানো ছবিটার দিকে ইঙ্গিত করল।
গাথরী ছবিটা দেখে বললেন : ভালোই হয়েছে, কোরাকে হতাশ করতে হল না।
সুসান চায়ের ট্রে নিয়ে এল। গাথরীকে অভিনন্দন জানিয়ে বসলেন গিলফ্রিস্ট।
গাথরী বললেন, সত্যিই কষ্টদায়ক।
হঠাৎ প্রসঙ্গ পরিবর্তন করলেন গাথরী : কোরাকে কোনো চোর ডাকাত মারেনি, আমার যা মনে হয়
সুসান বলল, বলুন।
কোরা কোনো কথা চেপে রাখতে পারত না। ও যদি না বলার প্রতিজ্ঞা করত তবুও বলে ফেলত। বোধহয় কোরা কোনো গোপন কথা জানতে পেরেছিল। তবে এইরকম বীভৎস মৃত্যু অপ্রত্যাশিত, কোনো চোর ডাকাত এইসব জিনিস নেওয়ার জন্য কাউকে খুন করবে না। সে বাড়িতে কত টাকা রাখতো?