ন্যাশ মনে মনে ঠিক করে নেয়, সে পাশের বাড়ির ড্রাইভারের সঙ্গে আলাপ জমাবে। তার সঙ্গে এ ড্রাইভারের নিশ্চয়ই দোস্তি থাকতে পারে, সেই সঙ্গে পেয়ে যেতে পারে ঠিকানাটাও। এরপর ডেসটার ফোন করে ন্যাশকে জানালে তাকে এগারোটা নাগাদ স্টুডিওতে পৌঁছে দিতে হবে আর চারটের সময় তুলে নিতে হবে। তারপর ঘরের কোন কাজ না থাকলে ন্যাশের ছুটি।
ন্যাশ বাড়তি কোন কথা না বলে থ্যাঙ্ক ইউ স্যার বলে রিসিভার নামিয়ে রাখল।
হেলেন যাতে সাবধান হয়ে যেতে না পারে তার জন্য ন্যাশ ডেসটারকে হেলেনের কথা কিছু জানাল না।
তারপর নির্দিষ্ট সময়ে ন্যাশ ডেসটারকে প্যাসিফিক স্টুডিও-তে আনতে গেল। ডেসটার নামকরা পরিচালক ছিল একসময়ে, এখন বাতিল হয়ে গেছে।
এরপর ন্যাশ পাঁচটা নাগাদ বাড়ি ফিরে এসে কোন কাজ আছে কিনা জানতে হেলেনের ঘরের বাইরে এসে দাঁড়ায়।
দরজায় টোকা মেরে সে বলে, আসতে পারি?
-কাম ইন, হেলেন বলল।
ন্যাশ ঘরে ঢুকে দেখল হেলেন ছোট্ট প্যান্ট আর ব্রেসিয়ার পরে আয়নার সামনে বসে প্রসাধন করছে। ন্যাশ ঘরে আসতে সে কয়েক সেকেণ্ড একনাগাড়ে তাকে দেখতে লাগল। অনেক ছলাকলা জানে। তার মনের মধ্যে একটা দাবান্ডল ধিকিধিকি করে অনেকদিন ধরেই জ্বলছে।
ন্যাশেরও শরীরের পারদ ক্রমশ চড়ছে। কিন্তু সে নিজেকে সংযত করে বলল, ম্যাডাম, এখন কি কোন কাজ আছে?
–না, কাজ নেই, হেলেন ন্যাশের দিকে তাকিয়ে থাকে।
–তাহলে আমি যাই?
–না থাকবে। আমি বড় নিঃসঙ্গ বোধ করছি।
ন্যাশ ভাবে, হেলেন ভাঙবে তবু মচকাবে না। সে দাঁড়িয়ে থাকে। হেলেন তাকে বসতে বলে, সে হেলেনের বিছানায় বসে পড়ল।
–তোমার আন্তরিকতায় আমি খুশী হয়েছি, তোমাকে তাড়াতে চেয়েছি, তাও তুমি যাওনি, তোমাকে আমার প্রয়োজন, হেলেন বলে।
–আমাকে? বিস্ময়ের সঙ্গে ন্যাশ জিগ্যেস করে।
–মিঃ ডেসটার সারাদিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত। ও আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড়। কি দিতে পেরেছে ও আমাকে? আমারও তো যৌবন বলে একটা জিনিষ আছে, বলে হেলেন ন্যাশের দিকে এগিয়ে আসে।
ন্যাশ কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। হেলেন এগিয়ে এসে ন্যাশকে তপ্ত বুকের মাঝে টেনে নিয়ে বেশ কয়েকটা চুমু খেল এবং তাকে ভীষণভাবে আদর করতে থাকে।
ন্যাশ এখন কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। কোনরকমে হেলেনের বাঁধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে সে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। ঘরের বাইরে থেকে সে শুনতে পেলো হেলেন তার যৌবনের উপেক্ষা সহ্য করতে না পেরে কাঁদছে।
ন্যাশ ভাবে, হেলেন কী তাহলে সত্যিই ভালো? ভালো না হলে কেউ নিজেকে এভাবে বিলিয়ে দিতে পারে? সংযত হয়ে তাহলে মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিছানায় পড়ে কাঁদতে পারতো না।
ন্যাশ ইন্টারকমের জন্যে অপেক্ষা করছিল। হয়তো হেলেন কোথাও বের হলে তার ডাক পড়বে। কিন্তু না, এলো না। এখন তার আর কোন কাজ নেই।
এই সুযোগে আগের ড্রাইভার লরেন্সের খোঁজ পেতে হবে। লরেন্স হেলেনের সবকিছু না জানলেও, এ ব্যাপারে বাড়ির কাজের লোক কাজে আসবে।
কিন্তু বাড়ির বাইরে যেতে গেলে তাকে সবকিছু দেখে সাবধানে বেরোতে হবে। তার আগে ড্রাইভারের মুখ খোলানোর জন্য একটা ছোট মদের বোতল সরাতে হবে।
ন্যাশ সারা বাড়ি, হেলেনর ঘর, বাথরুম সবকিছু দেখে নিল। হেলেনকে কোথাও দেখা গেল না। এবার সে বারে ঢুকে ছোট একটা মদের বোতল জামার ভেতরে ঢুকিয়ে নিল।
যাক, এবার ন্যাশ বাড়ি থেকে বের হয়ে বাঁ পাশের বাড়িটার কাছে এসে দাঁড়ায়। পাশের বাড়িটা একজন ব্যারিস্টারের। দোতলা, সুন্দর বাড়ি। ন্যাশ লোহার গেটের ভেতরে তাকিয়ে দেখতে পেল লনে একজন মাঝ বয়েসী মালী কাজ করছে।
ন্যাশ মালীর কাছে এগিয়ে তার নাম জিগ্যেস করল, সে জানাল তার নাম এনড্রুজ।
–ঐ বাড়ির ড্রাইভার লরেন্সকে তুমি চেনো?
–হ্যাঁ। ওকে তো কদিন ধরে দেখছি না।
–আচ্ছা, ও চাকরি ছাড়বে বলে কিছু বলেছিল?
উঁহু, হঠাৎই ওকে দেখছি না। বেশ ভালো লোক। কোন ঝামেলার মধ্যে সে থাকতো না।
–এ বাড়ির ড্রাইভারের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দাওনা।
–সে এখন সাহেবের চেম্বারে গেছে।–ফিরতে রাত হবে। তুমি বরং একটু রাত করে এসে, দেখা পাবে।
-দেখি সময় পাই কিনা, বলে ন্যাশ বেরিয়ে এসে দক্ষিণের ফ্ল্যাট বাড়িটার কাছে এসে দাঁড়ায়।
ন্যাশ একটা গাড়ির ভেতর ড্রাইভারকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেল। ড্রাইভারের বছর পঞ্চাশ বয়স।
প্রাথমিক আলাপ সেরে ন্যাশ জানতে পারলো ঐ ড্রাইভার বছর চারেক কাজ করছে এখানে।
এবার ন্যাশ তার দিকে মদের বোতলটা এগিয়ে দিল। সে ছিপি খুলে খানিকটা মদ গলায় ঢেলে দিল। ড্রাইভার খুব খুশী।
–আমার আগের ড্রাইভার চাকরি ছেড়ে দিল কেন? ন্যাশ প্রশ্ন করল।
–ও চলে গেছে, তা তো জানি না।
–তুমি ওর বাড়ি চেনো? আমায় নিয়ে যাবে?
দুজনের ঠিক হল, সন্ধ্যের পর সাড়ে সাতটা নাগাদ সামনের কফি হাউসে ড্রাইভারের সঙ্গে ন্যাশ দেখা করবে।
বাড়ি ফেরার আগে ন্যাশ মদের বোতলটা ঝোঁপের মধ্যে ফেলে দিল।
ন্যাশ এবার বেরিলকে ফোন করল।
-হ্যালো, আমি ন্যাশ।
–তোর কথা ভাবছিলাম, কেমন আছিস।
-ভাল না, মনে হয় বিপদে জড়িয়ে পড়তে পারি। শোন, আমার এক ইনস্যুরেন্স এজেন্টের সঙ্গে আলাপ আছে। সে বছরে বহু টাকার কাজ করে আর ডেসটারকে চেনে। এ বাড়িটা ডেসটারের।