–তুমি তার নাম জানো?
–না স্যার।
ম্যাডক্স স্টিভের দিকে তাকিয়ে এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলে। তারপর সে চলে যায়।
ওরা চলে যেতেই ন্যাশ রক্ত মোছা ন্যাকড়া, রক্ত মাখা জামাকাপড় ইত্যাদি স্যুটকেসে ভরে পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে ছোট একটা গলি দিয়ে পুলিশের নজর এড়িয়ে একটা চলন্ত বাসে বিপজ্জনকভাবে উঠে ফায়ারস্টোনের মোড়ে নামে।
তারপর ভিড়ের মধ্যে নিজেকে মিশিয়ে দেয়। সেফ ডিপোজিট লকারের উল্টো দিকে এসে দেখে একটা কালো গাড়ি ও ভেতরে জনাকয়েক শক্তসমর্থ লোক বসে আছে। এরা নিশ্চয়ই পুলিশের লোক, ন্যাশ ভাবে।
এরপর সে ব্যাঙ্কে যায়, সেখানেও পুলিশের গাড়ি আর পুলিশের লোকজন। ন্যাশ বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে।
ন্যাশ বোঝে পুলিশ চারদিকে জাল বিস্তার করে ফেলেছে। না পালালে উপায় নেই। কিন্তু তার হাতে আছে মাত্র পাঁচ ডলার। এ নিয়ে সে কতদূর যাবে?
সামনে একটা রেস্তোরাঁ দেখে ঢুকে সে সলিকে ফোন করে।
ও প্রান্ত থেকে গলার আওয়াজ ভেসে এল, সলি এখন অফিসে নেই।
-কোথায় গেছে?
–ওকে পুলিশে ধরে নিয়ে গেছে। কিছু বলার থাকলে আমাকে বলতে পারেন।
-ন্যাশ কিছু না বলে রিসিভার নামিয়ে রাখে। সে ভাবে, সলি নিজেকে বাঁচাবার জন্যে নিশ্চয়ই পুলিশকে সব বলে দেবে। তা থেকে পুলিশ ধরে নেবে যে, সে হেলেনকে ব্ল্যাকমেইল করছিল।
কফি খাওয়া ন্যাশের মাথায় উঠেছে। সে রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে তার স্যুটকেসটা পাশের মাল রাখার দপ্তরে জমা রাখে। এখানে নিজের আসল নাম সে গোপন করে।
ন্যাশ এখান থেকে বেরিয়ে সানফ্রান্সিসকো যাবার জন্য বাসস্ট্যাণ্ডে গেল। টিকিট কাটার সময় এমন একটা ঘটনা ঘটলো, যার জন্যে সে সত্যিই প্রস্তুত ছিল না। ফলে ন্যাশ রীতিমত হকচকিয়ে গেল।
হঠাৎ যেন মাটি খুঁড়ে বিশাল চেহারার একজন তার সামনে দাঁড়ায়, চলুন মিঃ ন্যাশ। আমরা আপনাকেই খুঁজছি। বলে ন্যাশকে সে থানায় নিয়ে এল।
ঘণ্টা চারেক ন্যাশ একটা নোংরা ঘরে থাকার পর ব্রমউইচ তাকে ডেকে পাঠায়।
ন্যাশ সেখানে গিয়ে দেখে ম্যাডক্সও সে ঘরে হাজির।
ম্যাডক্সই বলে ওঠে, মতলবটা ভালো কেঁদেছিলে ন্যাশ। কিন্তু কাজটা একেবারে কাঁচা করে ফেলেছ। কোথাও আঙুলের ছাপ বা কোন প্রমাণ নেই। সবই পরিষ্কার বুঝিয়ে দিচ্ছে যে এটা একটা আত্মহত্যার ঘটনা সাজানো হয়েছে।
ওদিকে মাল-গুদাম থেকে পুলিশ স্যুটকেস পেয়েছে। তার মধ্যে ওভারকোট, টুপি ও জুতো পাওয়া গেছে।
ঐসব দেখিয়ে ম্যাডক্স ন্যাশকে বলে, এখন আর কোন কৈফিয়েত দিয়ে লাভ নেই আমার কাছে। যা বলার তা জুরীদের বলতে পারো।
ন্যাশ এর কোন উত্তর খুঁজে পায় না। সে দরদর করে ঘামতে থাকল।
–আমার চেনাজানা ভালো উকিল আছে, পাঠিয়ে দেবো। তবে সেও বোধহয় তোমাকে বাঁচাতে পারবে না। যাক, চলি। কথা শেষ করে ম্যাডক্স চেয়ার ছেড়ে উঠে চলে যায়।
ব্রমউইচ এবার ন্যাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তবে ন্যাশ উকিল না আসা পর্যন্ত মুখ খুলবে না। সে এও জানে, তাতে কোন লাভ হবে না। অনিচ্ছাকৃত হলেও হেলেনকে সে খুনই করেছে। ঘূষিগুলো বেশী জোরে হয়ে গেছে।
ন্যাশ ভাবে এখন আর এসব ভেবে লাভ নেই। চোখের সামনে সে ফাঁসির দড়ি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে।
ন্যাশের হঠাৎ জুলিয়ানের কথা মনে পড়ে। তার জন্যে ন্যাশের কষ্ট হতে থাকে। তার মুখ দিয়ে একটা চাপা নিঃশ্বাস বেরিয়ে আসে, আর ন্যাশ ভাবে, কোন শুভক্ষণে তার সঙ্গে ডেসটারের পরিচয় ঘটেছিল। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে ঘটনানুক্রমে আজ তার এই অবস্থা। সবই অদৃষ্ট।