ট্রুপেন্স দোকানটার সামনে দাঁড়াতেই একজন যুবক এগিয়ে এল। এবং এগিয়ে এসে বলল, তাকে কি সে সাহায্য করতে পারে? ট্রুপেন্স তখন বলল, আমি অ্যালবামের খোঁজ করছি। ক্যামেরায় ভোলা ছবির অ্যালবাম। ছেলেটি জানালো সে বুঝতে পেরেছে। ট্রুপেন্স তখন বলল, আমার পুরানো ছবিসহ অ্যালবাম সংগ্রহ করার একটা নেশা আছে।
ও তখন বলল, এইসব পুরানো ছবি কেউ এখন চায় না। কিন্তু সংগ্রহকারী হিসাবে বিশেষ করে এই সব বস্তু সংগ্রহ করার ব্যাপারে আমার দারুণ উৎসাহ।
যুবকটি তখন বলল, তাহলে একটু দাঁড়ান। যদি পাওয়া যায়। এই কথা বলে যুবকটি তখন কাউন্টারের পেছন দিকে গিয়ে একটি ড্রয়ার খুলল।
ট্রুপেন্স বলল, কেউ কি কোন খদ্দের কি এসে বলেছে যে, আমার ঠাকুরমার এখানে বিয়ে হয়েছে এবং তার কোন ছবি যদি আপনার দোকানে থাকে। যুবক দ্যুরেন্স জানালো যে, সেরকমটা এখনও পর্যন্ত হয়নি।
ট্রুপেন্স ওর সাথে অনেকক্ষণ ধরে কথা বলে ভালো সম্পর্ক পাতিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করতে পারল না। তবুও অতটা হতাশ না হয়ে মেরী জর্ডনের নামটা বলল। এবং তার সাথে সেই কেলেঙ্কারীর একটু বর্ণনাও দিল। তারপরেও জানতে চাইল, মেয়েটার ছবি তার দোকানে পাওয়া যাবে কিনা। ছেলেটি না বলল, ছেলেটি ট্রুপেন্সের কাছে জানতে চাইল, সে লেখিকা কিনা অর্থাৎ লেখে কিনা।
ট্রুপেন্স বলল, আমি একটা ছোটদের উপর বই প্রকাশ করতে চাইছি। এটা আমার ইচ্ছা। সেইজন্য বিভিন্ন ধরনের ঘটনা সমেত বইটি প্রকাশ করতে চাইছি। যেমন–অপরাধ এবং নানা রোমাঞ্চকর ঘটনা সমেত। পুরানো ফোটোগ্রাফ বইটিতে যদি তেমন কিছু পাওয়া যায় তাহলে বইটি আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
শেষপর্যন্ত স্যুরেন্সের দোকান থেকে আশাব্যঞ্জক কিছুই পাওয়া গেল না। নিরাশ হয়ে ট্রুপেন্স বাড়ি ফিরল। সোজা বাড়ির রাস্তায় না এসে পাশের রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরল। বাড়ি ফিরেই দরজার কাছে আসতেই তার নজরে পড়ল দরজার সামনে কি যেন পড়ে আছে। প্রায় জোড়ে দৌড়ে দরজার সামনে আসতেই দেখতে পেল আইজ্যাকের দেহটা নিঃসাড় হয়ে পড়ে আছে। ট্রুপেন্স ওর ওপর ঝুঁকে পড়ল। এবং বলতে লাগল হয়ত বুড়ো আইজ্যাক মারা গেছে।
একসময় টমি ও ট্রুপেন্স বলল, কেউ মনে হয় ওকে খুন করেছে?
ট্রুপেন্স বলল, কে খুন করবে ওকে?
টমি জানালো, আমি বলতে পারছি না।
ট্রুপেন্স বলল, তবে মনে হয় আমাদের এই ব্যাপারের সঙ্গে এটার কোন সম্পর্ক আছে। ট্রুপেন্স বলল, কি বলতে চাইছি নিশ্চয় বুঝতে পারছ। এটা হল সেই জায়গা, আমাদের বাড়ি, বাগান সবকিছু আছে। বলতে বলতে বলছে আমি এখানকার সবকিছু একটা অস্বস্তি বোধ করছি। অতীতের কোন একটা ঘটনার।
ওরা কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। একটু পরেই টমি বলল, বুড়ো আইজ্যাকের সঙ্গে আমাদের তদন্তের বিষটির সঙ্গে সম্পর্ক আছে।
ট্রুপেন্স বলল, কেউ ওকে খুন করেছে? কিন্তু কেন ওকে খুন করল? তাহলে এই ব্যাপারটা ভেবে দেখা দরকার কারণ এই ব্যাপারটার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থাকার জন্য সে বা তারা আমাদের খুন করবে। সেটাও হয়তো চেষ্টা করবে।
হয়তো আইজ্যাক কিছু জানতে পেরেছিল। সেটা হয়ত ও আমাদের জানাতে চেয়েছিল। এর জন্য ওকে কেউ ভয় দেখিয়েছিল। তাও আইজ্যাক আমাদের বলার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এবং একেবারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল যে সে আমাদের বলবে। হয়তো সেই মহিলাটি মেরী জর্ডন এবং পারকিনসনের মধ্যে কাউকে জানত। সেই জন্যই হয়তো ওকে চিরদিনের মত চুপ করিয়ে দিয়েছিল।
সেইসময় বুড়ো আইজ্যাকের ছেলের বউ এল। সে মনে হয় আইজ্যাকের ছেলে স্টিফেনের স্ত্রী। সে জানালো স্টিফেন নাকি একটা লরী দুর্ঘটনায় মারা গেছে। শ্বশুর আইজ্যাক সম্বন্ধে জানালো যে, সে অনেক কিছু জানত। অনেকদিন ধরে এই পাড়াতে থাকতেই এখানকার পাড়া প্রতিবেশীদের সে যেমন জানত সেই সঙ্গে অনেক দুর্ঘটনারও অভিজ্ঞতাও তার ছিল।
বধূটি চলে যাওয়ার পর টমি বলল, আইজ্যাকের পদবীটা কি যেন? ট্রু
পেন্স বলল, আইজ্যাক বডিকট। তাহলে এই মহিলাটি মিসেস বডিকট হবে।
মহিলাটির অনেকগুলো ছেলেমেয়ে আছে। তারা সবাই একসঙ্গে থাকে। মারটন রোডের মাঝামাঝি ঐ কটেজটাতে থাকে। আমার মনে হয় বধূটি জানে তার শ্বশুরকে কে মেরেছে?
এইভাবে হঠাৎ কিছু ঠিক মত না জেনে বলা শক্ত। ট্রুপেন্স বলল, মনে হয় মহিলাটি ফুলের জন্য ধন্যবাদ জানাতে এসেছিল। মহিলাটি প্রতিশোধ নেওয়ার মত দেখতে নয়। তাছাড়া মনে হয় ও খুনীকে চেনে না। চিনলে মনে হয় ঠিকই তা উল্লেখ করত।
কোন কিছুই ঠিক বলা যায় না, ব্যাপার হতে পারে আবার নাও হতে পারে, ট্রুপেন্স বলল। ও বাড়ির ভেতর গেল। ওকে কেমন গভীর ভাবে খুবই চিন্তিত লাগছিল।
পরের দিন আইজ্যাকের সম্পর্কে ভাইপো হেনরী এলো। ছেলেটাকে ট্রুপেন্সের খুব ভালো লেগে গেল। ছেলেটাও ট্রুপেন্সের কথাবার্তা শুনে মুগ্ধ ভক্ত হয়ে উঠল। ছেলেটা তার কাকা মারা যাবার ব্যাপার নিয়ে ট্রুপেন্সের সাথে দুচার কথা বলল।
হেনরীর সঙ্গে কথাবার্তা বলে ঘরে ঢুকতেই তাকে খুব উত্তেজিত মনে হচ্ছিল দেখে টমি জিজ্ঞাসা করল, কি হয়েছে? হেনরীর সাথে যে তার কথাবার্তা হয়েছে সেটা জানালো এবং বলল, ছেলেটার বয়স মনে হয় দশ কি এগারো এবং ওর একটা বন্ধু আছে ক্লারেন্স বলে।