অনেক নাম অনেক জটিলতা মেয়ে ডেবোরা বলল, অতবড় গল্পের বই কে পড়বে। তুমি শুনলে অবাক হবে। টমি বলল। লোকে পড়বে এবং উপভোগ করবে। টমি আর ট্রুপেন্স পরস্পরের দিকে তাকালো।
***
কি চমৎকার একটা খাদ্য তালিকা। ট্রুপেন্স বলল। ঘরে সমবেত মানুষগুলির দিকে একবার তাকিয়ে নিল। খাওয়াদাওয়া সেরে ওরা একটু আগে গ্রন্থাগারে কফিটেবিল ঘিরে বসেছে।
হ্যানিবল ট্রুপেন্সের পায়ের কাছে বসেছিল। মাঝে মাঝে কুকুরটা ল্যাজটা নাড়ছিল। এটা আদরের লক্ষণ।
একসময় মিঃ রবিনসন বলল, তুমি এবং তোমার স্বামী একটা উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে। তোমাদের কাছে আমি ঋণী। কর্নেল পাইকঅ্যাজন আমাকে বলল যে ব্যাপারটায় তোমরা উৎসাহী। ট্রুপেন্স সাংকেতিক স্বরে বলল, ঘটনাক্রমে হয়ে গেছে। আমি খুবই কৌতূহলী। আমি খুঁজে বের করতে চেয়েছিলাম। বিশেষ কতকগুলি ব্যাপার।
হ্যাঁ, তা আমি অনুমান করতে পারি। আর এখন নিশ্চয় তুমি এসবরে শেষ পরিণতিটা আসতেও তুমি সমানভাবে আগ্রহী।
ট্রুপেন্স আরো সংকোচিত হল। বলল ওহো..অবশ্যই আমি বলছি এসবই সম্পূর্ণ গোপন ব্যাপার মানে সবই চুপচাপ আর তাই আমি কোন প্রশ্ন করতে চাই না। কেন না আমি ব্যাপারটা আমাদের তুমি বলতে পারো না। আমি সেটা ভালো ভাবেই বুঝতে পারছি। বরং উল্টে আমি হলাম সেই ব্যক্তি যে তোমাকে একটা প্রশ্ন করবে। তথ্য নিয়ে তুমি যদি আমার প্রশ্নের উত্তর দাও আমি দারুণ ভাবে খুশী হব।
ট্রুপেন্স বিস্মিত বড় বড় চোখে মিঃ রবিনসনের দিকে তাকাল। তার কণ্ঠস্বরে তারই এভাব পড়ল আমি কল্পনা করতে পারছি না যে…। কথাটাও শেষ করতে পারল না।
তোমার একটা তালিকা রয়েছে। সেরকমটাই তোমার স্বামী আমাকে বলছে। তবে বলেনি তালিকাটি কি? ঠিকই করেছে। তালিকাটি তোমার গোপন সম্পত্তি। ওটার ব্যাপারে আমি কৌতূহলী।
ট্রুপেন্সের চোখ দুটি আবার চকচক করে উঠল হঠাৎ ওর মনে হল মিঃ রবিনসনকে ও বড় বেশী এখন পছন্দ করছে।
কয়েকমুহূর্ত ও নীরব রইল। একটু থামল। ভাবল। ও ব্যাগটায় হাত ঢুকিয়ে হাতড়ালো।
অপ্রত্যাশিত ভাবে মিঃ রবিনসন বলল, পাগল, পাগল সমস্ত পৃথিবীটাই পাগল, আমার প্রিয় নাটকে একটা বুড়ো গাছের নীচে বসে হ্যাঁন্স ম্যাচ এই কথাই বলেছিল।
ট্রুপেন্সের থেকে মিঃ রবিনসন তালিকাটি নিল। তুমি এটা চেঁচিয়ে পড় ট্রুপেন্স বলল। আমি সত্যি কিছু মনে করব না।
মিঃ রবিনসন তালিকাটি একবার চোখ বুলিয়ে নিল। তারপর সেটা ক্রিসপিনের হাতে দিল। অ্যাঙ্গাস আমার থেকেও তোমার কণ্ঠস্বর বেশী পরিষ্কার।
মিঃ ক্রিসপিন তালিকাটি ওর হাত থেকে নিয়ে পরিষ্কার উচ্চারণে পড়তে লাগল।
ব্ল্যাক অ্যারো।
আলেকজাণ্ডার পারকিনসন,
মেরি জর্ডন স্বাভাবিক ভাবে মরেনি।
অক্সফোর্ড কেমব্রীজ
গ্রিন হেন বললো
কে কে
মেথিলডের গেট
কেইন এবং হাবেল
ট্রুলভ।
পড়া শেষ হলে মিঃ ক্রিসপিন মিঃ রবিনসনের দিকে তাকালো। সে তখন ট্রুপেন্সের দিকে তাকিয়েছিলেন।
প্রিয় ট্রুপেন্স মিঃ রবিনসন বলল। তোমাকে আমি অভিবাদন জানাই। তোমাদের নির্ঘাত একটা অসাধারণ মন রয়েছে। তোমার বই তালিকাটি নতুন আবিষ্কারের ব্যাপারে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
খুব ভালো অনুসন্ধানের কাজ করেছে টমি। পাশ থেকে পাইকঅ্যাজন বলল। ওর দেওয়া আদমসুমারী আমাদের তদন্তে দারুণ ভাবে সাহায্য করেছে।
তোমরা উপহৃত দুটি রবিনসন বলল। কথাটা বলে সে আবার পেন্সের দিকে তাকাল মৃদু হাসল। আমি এখন অনুমান করছি যে তোমরা কৌতূহল না দেখালেও ব্যাপারগুলি সকলকে জানাতে চেয়েছে।
ওহো। বিস্মিত কণ্ঠস্বরে ট্রুপেন্স বলল সত্যিই তুমি আমি কিছু বলতে চলেছি? কি চমৎকার।
তুমি যে ভাবে দেখেছো সেই ভাবেই শুরু করতে হয়। পারিকিনসন পরিবার নিয়ে মিঃ রবিনসন বলল। অর্থাৎ বলতে হয় দূর অতীতের কথা। আমার নিজের প্রপিতামহ একজন পারিকিনসন ছিল তার কাছে থেকেই আমি কিছু জেনে ছিলাম।
কথাগুলি বলে মিঃ রবিনসন একটু থামলেন পরক্ষণে আবার বলতে শুরু করলেন। মেরি জর্ডন নামে মেয়েটি আমাদের গোয়েন্দা বিভাগে ছিল। এবং কাজ করত। নৌবাহিনীর সঙ্গে ওর যোগাযোগ ছিল। ওর মা ছিলেন একজন অস্ত্রীয়। আর সেই কারণেই ও জার্মান ভাষায় অনর্গল কথা বলে যেতে পারত।
রাজনৈতিক চিন্তার সাম্প্রতিক ঝোঁক হল বিশেষ একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন গোপন ব্যাপার চেপে রাখার। তবে তা চিরদিনের মত সংরক্ষিত রাখা উচিত নয়। নথিপত্র সক্ষম কিছু ব্যাপার আছে যা দেশের বিশেষ একটা যুগের ইতিহাস হিসাবে প্রকাশিত হওয়া উচিত। কয়েক বছরের মধ্যে নথিপত্রের সাক্ষ্যের সাহায্যে তিন থেকে চারখণ্ড বই প্রকাশ হতে চলেছে।
সোয়ালো বাসায় কি হত (বর্তমান বাড়িটার নাম সেই সময় ওটাই ছিল) বিষয়টির তাতে যুক্ত হবে।
ফাঁস হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ছিল। যুদ্ধের সময় কিছু না কিছু ফাস হয়ে যেতো। তখন এমন কিছু রাজনীতিবিদ ছিলো যাদের আত্মমর্যাদা ছিল। তারা খুবই উচ্চ চিন্তা পোষণ করত। কয়েকজন প্রথম সারির সাংবাদিক সেইসব মানুষকে প্রভাবিত করত। তাদের আকাটের মত ব্যবহার করা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় এমন কিছু মানুষ ছিল যারা নিজের দেশের বিরুদ্ধে কাজ করত। যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলে কিছু বুঝে কিছু না বুঝে শুনেই কমুনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য হয়েছিল। এবং এমন কি তার থেকেও বিপদজনক ফ্যাসিবাদ হিটলারের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পূর্ণ উদ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল শান্তির প্রেমিকের কাজ করে।