হ্যাঁ, টমি বলল হ্যানিবলের খুব চমৎকার একটা বর্ণনা দিয়েছে। আর এখন আমার মনে হয় ঐ মিঃ ক্রিসপিন না কি যেন নাম ও ওর তদন্ত শেষ করেছে। তবে মিস মুলিন্সের মেরী জর্ডনের ঘটনার কি সম্পর্ক থাকতে পারে অথবা ঐ বিপজ্জনক কেসের সঙ্গেই বা কি রকম সম্পর্ক থাকতে পারে সে সম্বন্ধে ও কি ভাবে কে জানে।
আমার মনে হয় না ওর অস্তিত্ব কেবল অতীতেই ছিল আমার মনে হয় ওর একটা নতুন সংকলন হতে পারে বা পুনর্জন্ম, তুমি কেমন ভাবে বলবে।
আমি এই কদিন হল কান্ট্রি হ্যানিবল নামে একটা বই পড়েছি। ট্রুপেন্স বলল, ওটা ওপর-তলার আলেকজাণ্ডারের বইগুলির মধ্যে ছিল?
টমি জানতে চাইল বইটা কি বিষয়ে। জবাবে ট্রুপেন্স সংক্ষেপে বইটির বিষয়বস্তু জানালো। আরও দু-একটা কথা বলার পর ট্রুপেন্স বলল, তুমি কি সত্যি ভালো গোপন জায়গা থেকেও বেশী কিছু আবিষ্কার করবে। কোন চৌবাচ্চা নিশ্চয়। জানো নিশ্চয় ব্যাঙ্ক ডাকাতরা লুঠের দ্রব্য প্রায়ই চৌবাচ্চায় লুকিয়ে রাখে। এটা খুবই আদর্শ জায়গা। কোন কিছু লুকিয়ে রাখার আদর্শ জায়গা। তোমার কি মনে হয় তদন্ত হয়ে গেলে মিঃ ক্রিসপিন এখানে ফিরে আসবে। আর আমাকে এবং তোমাকে দেখে ভালো করার কাজটা চালিয়ে যাবে।
আমাকে তার আর দেখাশোনা করার দরকার নেই। টমি বলল, আমার মনে হয় ও আমাদের আসবে বিদায় জানাতে।
ওহো হা। কেননা ওর আচরণটা চমৎকার। তাই না? ও নিশ্চিত হতে চাইবে ঠিক আছে কিনা? ট্রুপেন্স বলল, আমি মাত্র আহত হয়েছি, ডাক্তারও দেখছে।
লোকটা সত্যিই বাগানের ব্যাপারে দারুণ আগ্রহী টমি বলল, আমি সেটা বুঝতে পেরেছি। ও প্রকৃতই ওর এক বন্ধুর কাছে বাগানের কাজ করত। আর ঘটনাক্রমে সে মিঃ ফলমন নামে পরিচিত। কিছু বছর আগে লোকটা মারা গেছে। ৩৫০ আমার মনে হয় এটা একটা ভালো আচরণ ও বলতে পারবে যে ও তার হয়ে কাজ করেছে আর লোকে তা সত্যিই বিশ্বাস করবে।
ওদের কথাবার্তা চলছিল। এমন সময় হঠাৎ কথাবার্তার মাঝখানে দরজার বেলটা বেজে উঠল। আর তখনই হ্যানিবল দৌড়ে বেরিয়ে গেল সদর দরজার উদ্দেশ্যে। ওকে দেখে হ্যানিবল খেপে গেল। অনুপ্রবেশকারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে ও সবসময় তৈরী।
একটু পরে টমি একটা খাম নিয়ে ফিরে এল। আমাদের দুজনের উদ্দেশ্যে লেখা। টমি বলল, খুলবো কি? ট্রুপেন্স বলল, খোল। টমি খামটা খুলে ফেলল। ভালো কথা, ও বলল, ভবিষ্যতের জন্য এই সম্ভাবনাগুলি তুলে ধরেছে। কিছুটা মিঃ রবিনসনের নিমন্ত্রণ তোমাকে এবং আমাকে এই সপ্তাহের পরের সপ্তাহ নির্দিষ্ট একটি তারিখে ও আশা করছে। নিমন্ত্রণটা করেছে ওর দেশের বাড়িতে। মনে হয় সাসেলের কোন এক জায়গায়।
ট্রুপেন্স জিজ্ঞাসা করল, তুমি কি মনে কর তখন ও আমাদের কিছু বলবে? মনে হয় বলতে পারে, টমি বলল। ট্রুপেন্স বলল, আমি কি সঙ্গে করে নামের তালিকাটি নেব? তবে ওটা এখন আমার মুখস্থ।
কথাটা বলে একটু থেমে তারপর ও পড়ে গেল সেটা। ব্ল্যাক অ্যারো, আলেকজাণ্ডার পারকিনসন, অকসফোর্ড এবং কেমব্রিজ নামে পোর্সিলিনের ভিক্টোরিয়া যুগের আসন। গ্রেন বললো কে কে, ম্যাথিলভের নোট, কেউন, আবেল আর ট্রলভ।
যথেষ্ট টমি বলল, শুনে পাগল…হ্যাঁ এটা পাগলের মতই বটে। তুমি কি মনে কর মিঃ রবিনসনের কাছে আরো কেউ থাকবে। সম্ভবত কর্নেল পাইকঅ্যাজন থাকবে।
সেক্ষেত্রে আমার সঙ্গে একটা কিসের লজেন্স নেওয়া উচিত। কি তাই না? ট্রুপেন্স বলল। সে যা হোক আমি মিঃ রবিনসনের সঙ্গে দেখা করতে চাই।
***
ট্রুপেন্স গাড়ী আমার রাস্তার ফাঁকে উঁকি মেরে কৌতূহলোদ্দীপক স্বরে বলল। ঐ গাড়িটাই কি? আসলে ও ওর মেয়ে ডেবোররা এবং তার তিন ছেলে মেয়ের জন্য সে অপেক্ষা করছিল। পাশের দরজাটা দিয়ে বেরিয়ে এসে অ্যালবার্ট বলল, না ওরা এখনো এসে পৌঁছায়নি। ওটা মুসির ম্যাডাম।
ট্রুপেন্স সব ব্যবস্থা ঠিকঠাক হয়েছে কিনা জিজ্ঞাসা করল অ্যালবার্টকে, তারপর হাঁফ ছাড়ল।
একটু পরে ডেবোরো তার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ওখানে পৌঁছে গেল। ওদের পরস্পরের মধ্যে কুশল বিনিময় হল। ব্যাপারটা দেখতে ভালো লাগছিল।
পরে একসময় ওরা সবাই ছাদে গেল। বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে তারা চারিদিক দেখছিল। তারা আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখল পাখীরা মাথার ওপর দিয়ে অনেক অনেক দূরে উড়ে চলে যাচ্ছে। ট্রুপেন্সের এক নাতনি সেগুলি কি পাখি জিজ্ঞাসা করল।
সোয়ালো পাখি। দক্ষিণে উড়ে যাচ্ছে। ট্রুপেন্স বলল। ওরা কি আর ফিরবে না নাতনিটি জিজ্ঞাসা করল।
হা, ওরা পরের গ্রীষ্মে আবার ফিরে আসবে, কথাটা বলে একটু থেমে নাতনির দিকে ফিরে বলল। এক সময় এই বাড়িটার নাম ছিল সোয়ালোর বাসা। কিন্তু তুমি এখানে আর বাস করবে না; কি তাই তো? মেয়ে ডেবোরো জিজ্ঞাসা করল। বাবা আমাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিল যে তোমরা নাকি অন্য একটা বাড়ির সন্ধান করছো?
কয়েকটা কারণ বলছি, টমি বলল, তারপর ট্রুপেন্সের তালিকাটা ওকে দেখালো। চেঁচিয়ে পড়তে লাগল।
তুমি চুপ কর টমি–ওটা আমার তালিকা, ওটার ব্যাপারে তোমার কিছু করার নেই। ট্রুপেন্স বলল। কিন্তু এটার অর্থ কি? ট্রুপেন্সের এক নাতনি জিজ্ঞাসা করল। মনে হচ্ছে যেন কোন গোয়েন্দা গল্পের সূত্রের তালিকা। তুমি তো এ নিয়ে একটা গল্প লিখতে পারো ঠাকুমা।