হ্যাঁ, আমি বাগানের কাজ করতে চাই। এই বাগান করা আমার একটা হবি। এই কাজ করতে আমার খুব ভালো লাগে। বাগানকে সুন্দর করে গড়ে তোলা তাতে সুন্দর সুন্দর ফুল ফোঁটান। যে ঋতুতে যে ফুল ফোটে সেই ধরনের গাছ লাগিয়ে। কত ধরনের পাতা বাহার আছে তাই লাগিয়ে বাগানকে সুন্দর করে তুলতে আমার খুব ভালো লাগে।
টমি বলল, গত কাল মিস মুলিন্স নামে একজন মহিলা আমার কাছে এসেছিল।
মুলিন্স, মুলিন্স! সে কি মালি। সেই কথাটাই আমি অনুমান করেছি, মিসেস গ্রিফিন তাকে নাকি পাঠিয়েছে। তার সঙ্গে তুমি কথাবার্তা পাকা করে ফেলেছো নাকি?
এখনো পারনি। টমি বলল, আমার এখানে একটা সত্যিই ভলো কুকুর আছে, ম্যাঞ্চেস্টার টেরিয়ার।
হ্যাঁ পাহারা দিতে এইসব কুকুর খুব ভালো। মিঃ ক্রিপসিন বলল, আমার মনে হয় তোমার স্ত্রীকে সেই পাহারা দিতে পারবে। এখন কোথাও যেতে হবে না।
ঠিক বলেছো টমি বলল, কোন ব্যক্তিই আমার স্ত্রীর দেহ স্পর্শ করতে পারবে না। কেউ যদি স্পর্শ করে তাহলে তাকে কুকুরটা টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে খাবে।
মহিলাটির ব্যাপারে চিন্তিত হয়ে মিঃ ক্রিসপিন এবং মিঃ মুলিন্স কথাটা উচ্চারণ করল। বলল, হা হা, এটা খুব উৎসাহব্যঞ্জক। টমি বলল, কেন তোমরা এই রকম বলছ।
সে বলল, ঐ নামে কোন মহিলাকে আমরা চিনি না। একটু থেমে ক্রিসপিন বলল, আচ্ছা মহিলাটির বয়স কি পঞ্চাশ থেকে ষাটের মধ্যে? হ্যাঁ, কেমন খসখসে, আচার আচরণে গেঁয়ো।
মহিলাটির সঙ্গে কিছু লোকের যোগাযোগ আছে। আইজ্যাক তার সম্বন্ধে কিছু বলেছে। মনে হয় ও হয়তো এখানে কাজ করার জন্য এসেছে। খুব বেশী দিন আগে আসেনি। সমস্ত ব্যাপারগুলোর মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে। বুঝতে পারছ নিশ্চয়।
টমি বলল, আমার মনে হয়, এই জায়গাটার ব্যাপারগুলি তোমার জানা যা আমার নেই। আইজ্যাক তোমাকে অনেক কিছু বলে থাকবে। ও অনেক কিছু জানত। ওর স্মৃতিশক্তি প্রখর ছিল। পুরানো দিনের লোক তো। তারা সব সময় বলাবলি করত। বৃদ্ধ লোকেদের ক্লাবগুলিতে অনেক অনেক বড় বড় গল্প ছিল। ওই সব গল্পের মধ্যে অনেক কিছু সত্যিই ছিল না। আবার এমন অনেক গল্প এমন ছিল যে যা ঘটে যাওয়া ঘটনাকে ভিত্তি করে তৈরী। হ্যাঁ, এই সবই উৎসাহব্যঞ্জক। আইজ্যাক সবটাই জানত বা জানা ছিল।
সত্যিই আইজ্যাকের ব্যাপারটা একটা লজ্জার টমি বলল, ওকে যে খুন করল তাকে আমি একবার দেখতে চাই। আইজ্যাক একজন চমৎকার বুড়ো মানুষ ছিল। আমাদের কাছে খুব ভালো লোক ছিল। যতটা পারত ও আমাদের সাহায্য করত এসে, ঘুরে ফিরে দেখা যাক।
***
অ্যালবার্ট ট্রুপেন্সের শোবার দরজায় টোকা মারল। ট্রুপেন্স ভেতরে আসতে বলল।
তখন অ্যালবার্ট বলল, কয়েকদিন আগে যে মহিলাটি তোমার কাছে এসেছিল সে আবার এসেছে। সে দুএক মিনিট তোমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। মনে হয় বাগানের ব্যাপারে তোমার সাথে কথা বলবে। আমি তাকে বলে দিয়েছি তুমি এখন ঘুমাচ্ছো। তুমি ওর সঙ্গে দেখা করবে কি না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত ছিলাম না।
ট্রুপেন্স ওকে জানিয়ে দিল মিস মুলিন্সকে বসতে। সে তার সঙ্গে দেখা করবে।
অ্যালবার্ট বলল, আমি তোমার সকালের চা এনে দিচ্ছি। ট্রুপেন্স বলল, ভালো কথা, তুমি এর সঙ্গে আর এক কাপ চা নিয়ে এসো, ব্যস। তাতেই হবে, কি তাই তো? হ্যাঁ ম্যাডাম।
ব্যস, তুমি ওটা ওপরে নিয়ে এসো ঐ টেবিলটায় রাখো তারপর মিস মুলিকে ডেকে নিয়ে এসো।
হ্যানিবল কি করবে? অ্যালবার্ট বলল। ওকে কি আমি নিচে নামিয়ে নিয়ে যাবে এবং রান্নাঘরের মধ্যে আটকে রাখব?
ও রান্নাঘরে আটকে থাকা পছন্দ করে না। না, ওকে কলতলায় ঠেলে ঢুকিয়ে দাও। আর সেটা করার সময় দরজাটা বন্ধ করে দিও।
অ্যালবার্ট ওকে নিয়ে চলে গেল। ও অপমানিত হয়ে হিংস্র ডাক ডাকতে লাগল। সেই ডাক ট্রুপেন্সের কানে আসতে লাগল। তারপর সেই ডাকটা ক্রমশ বন্ধ হয়ে গেল। কারণ ও বুঝতে পেরেছে। আমাকে এটা ওরা করবেই। আমার কোন উপায় নেই। সম্ভবত অ্যালবার্ট ওকে কলতলার ভেতর পুরে রেখেছে।
একটু পরেই মিস মুলিন্স এলো। ওহো মিসেস বেরেসফোর্ড, উচ্চস্বরে বলল, মিস মুন্সি আমার আশঙ্কা আমি না বলেই ঢুকেছি। আমি ভেবেছি বাগানের ওপর এই বইগুলো দেখে খুশী হবেন।
এরপর গাছপালা চাষের ব্যাপারে অনেক কথা বলে গেল সে। নিজেরই ইচ্ছা হল বুঝি, তাই সে নিজেই ট্রুপেন্সের কাপে কফি ঢেলে দিল। তারপর তার অ্যালবার্টের দিকে চোখ পড়তেই থেমে গেল। অ্যালবার্ট তখন তাকে একটা চেয়ার এনে দিল।
নিচের তলায় একটা ঘন্টাধ্বনি শোনা গেল। দুধ মনে হয়। অ্যালবার্ট বলল, কিংবা মুদি হতে পারে। আমি নিচে গিয়ে দেখে আসি। কথাটা বলে অ্যালবার্ট চলে গেল। যাবার সময় ঠিকমত দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে গেল। হ্যানিবল যে তখনও ডাকছে। সেটা শোনা গেল।
ওটা আমার কুকুর। ট্রুপেন্স বলল, অচেনা লোককে দেখলে ও খুব একটা পছন্দ করে না। সেই রকম কাউকে দেখলে এত গোলমাল বাধায় না।
তুমি কি চিনি নেবে? মিসেস বেরেসফোর্ড? একটুখানি ট্রুপেন্স বলল। মিস মুলিন্স একটা কাপে কফি ঢালল। ট্রুপেন্স বলল, তাই না হলে কালো।
মিস্ মুলিন্স ট্রুপেন্সের পাশে কাপটা রাখল। তারপরে নিজের কাপে কফি ঢালার জন্য এগোল। আচমকাই সে হোঁচট খেল। হোঁচট খেয়ে একটা টেবিল ধরে নিল। এত জোরে ব্যথা পেল যে সে টেবিল ধরে বসে পড়ল।