রিপোর্ট করাতে পরের দিন আমাকে থানায় যেতে বলা হয়। আমি সেখানে গিয়ে ইনসপেক্টর নুরিসের সঙ্গে দেখা করি। আমি আগে কখনও এই ইনসপেক্টর সাহেবকে দেখিনি। আমার যতদূর মনে হচ্ছে এই ইনসপেক্টর সাহেব এখানে নতুন এসেছে।
পাইকঅ্যাজন বলল, সিগারেট খেয়ে গলগল করে মুখ দিয়ে ধোঁয়া বার করতে করতে বলল, এটা সম্ভবত নতুন চুক্তি। টমি বলল, আমি আশা করছি তুমি ওর সম্বন্ধে সবই জানো।
কর্নেল পাইকঅ্যাজন বলল, হ্যাঁ আমি ওর সম্বন্ধে সব জানি এবং এখানকার যা কিছু সবই আমার জানা কারণ কর্নেল পাইকঅ্যাজন এখানে বহুদিন ধরে আছেন। তোমাদের পেছনে যারা এইরকম করছে তাদের সম্বন্ধে স্থানীয় লোক ভালো সনাক্ত করতে পারবে।
কর্নেল পাইকঅ্যাজন বলল, তুমি কিছু দিনের জন্য তোমার স্ত্রীকে নিয়ে সরে আসতে পারবে? মনে হয় সম্ভব হবে না, টমি জানাল।
কর্নেল পাইকঅ্যাজন বলল, তাহলে তোমার স্ত্রী ওখান থেকে সরে আসবে না। তাছাড়া তোমার পক্ষেও সম্ভব নয় ওকে ওখান থেকে সরিয়ে আনা। তোমার স্ত্রী তেমন কোন গুরুতর আহত হয়নি বা অসুস্থও নয়। আমার মনে হচ্ছে একবার আমরা পেছনে ধাওয়া করে দেখি। কি হয়? ব্যাপারটা তো বোঝা যাচ্ছে না। আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না যে কিছু আমরা কি খুঁজে বার করব কিংবা কি করব।
এসব ক্ষেত্রে কিছু জানতে গেলে স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে কিছু কথা বলে কিছু বের করে নেওয়া কথাটা বলে পাইকঅ্যাজন একটা ধাতব বাক্সে নখ দিয়ে ঠুকল, এবং বলল, এই বাক্সটা আমাদের কিছু বলবে, আমরা সবসময় যেটা জানার জন্য উৎসুক সেই সম্বন্ধে কিছু বলবে। বহু বহু বছর আগে দৃশ্যের আড়াল করা শয়তানি কাজে লিপ্ত ছিল।
যারা এইসব করেছে, তাদের কে বা কারা সাহায্য করেছিল। কেই বা তাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। কারা যে এই ব্যাপারগুলি করে চলেছে কেন বা কারা এই কাজগুলো একনাগাড়ে করে চলেছে। অনেক মানুষকে আমরা হিসাবের মধ্যে রাখি না। অথচ তারাই হয়ত এই ব্যাপারটাতে জড়িত। যা আমরা কখনও ভাবতে পারি না।
পাইকঅ্যাজন আসতে টমি বলল, ফলমন নামটা কি আপনার কাছে অর্থ বহন করে? মিঃ ফলমন? ভ্রূ কুঁচকে তাকালো এবং বলল, তুমি কোথা থেকে এই নামটা শুনলে বা জানতে পারলে?
ইনসপেক্টর নরিস এই নামটার উল্লেখ করেছে। ও তাই বল। ভালো কথা, ফলমনকে ব্যক্তিগতভাবে জেনে কোন লাভ নেই, তুমি হয়ত কিছু মনে করবে না, লোকটা মারা গেছে। টমি শুনে আশ্চর্য হয়ে গেল।
আমরা প্রয়োজনে ওনার নামটা ব্যবহার করি, প্রয়োজনে এই নামটা ভালো কাজে লাগান যায়। লোকটা খুবই ভালো ছিল। এই রকম একটা উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন নোক সাবধানে চলা উচিত। আমরা চাই-না তোমরা কখনও বিপদে পড়ো। তোমরা সব সময় সাবধানে থাকবে। সব কিছুতেই তোমাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি থাকা দরকার, সবকিছুতেই তোমাদের সন্দেহ করা উচিত।
সেটাই সঠিক পথ।
আমার মাত্র দুটি লোককে বিশ্বাস হয় টমি বলল। তাদের একজন হল অ্যালবার্ট। সে অনেকদিন ধরে আমাদের কাছে এবং আমাদের কাছে কাজ করছে আর অন্য একজন হল আমার বাড়ির কুকুর হ্যানিবল।
***
বাগানের রাস্তাটা ধরে বাড়ি ফেরার মুখে ট্রুপেন্সের সঙ্গে অ্যালবার্টের দেখা হয়ে গেল। অ্যালবার্টও বাড়ির দিক থেকে আসছিল। অ্যালবার্ট বলল, একজন মহিলা তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাইছে ম্যাডাম! মহিলাটি কে? মিস সুলেমন। সেরকমই বলল। মহিলাটি গ্রামে তোমার পরিচিত একজন মহিলার সুপারিশ নিয়েই এসেছে।
বাগানের ব্যাপারে এসেছে মহিলাটি, ট্রুপেন্স বলল, অ্যালবার্ট হ্যাঁ মহিলাটি বাগানে সম্বন্ধে যেন বলছিল। একটু পরেই বাড়িতে গিয়ে দেখে মহিলাটি তার জন্য অপেক্ষা করছে।
মহিলাটি বলল, আমার ইরিস মুন্সি। মিসেস গ্রিফিন পাঠিয়েছে আমাকে আপনার সঙ্গে দেখা করতে। আপনি বাগানের কাজের জন্য তোক চাইছেন কাজের সাহায্যের জন্য। কি তাই
ট্রুপেন্স বলল, হ্যাঁ আমার যে লোকটি ছিল, সে খুব একটা ভালোভাবে কাজ করত না, এবং সব সময় মন দিয়ে কাজ করত না, আমার মনে হয়।
মহিলাটি কথা প্রসঙ্গে কোথা থেকে এসেছে এবং কোথায় থাকে তা জানালো। তারপর ওরা দুজনে বাগান নিয়ে আলাপ আলোচনা করতে লাগল।
ওদের কথার মাঝখানে অ্যালবার্ট এসে জানালো যে, মিসেস রেডক্লিফ তাকে ফোন করেছে। অ্যালবার্ট এও মহিলাটি বলছিল তুমি তার সঙ্গে কাল লাঞ্চ করতে পারবে কি না।
ট্রুপেন্সের কাছে একটা ছোট ব্যাগ ছিল। সেই ব্যাগ থেকে একটা ছোট প্যাড বার করল। তার মধ্যে কয়েকটা কথা লিখে প্যাডটা থেকে কাগজটা ছিঁড়ে অ্যালবার্টের হাতে দিল। এবং বলল, মিঃ বেরেসফোর্ডকে বল আমি একটু ব্যস্ত আছি কারণ আমি মিস মুলিন্সের সঙ্গে বাগানে গিয়ে কথাবার্তা বলছি এবং বাগানটাকে আবার কি ভাবে সুন্দর করা যায় এবং বাগানের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। এবং বলবে ও আমাকে যা বলেছিল তা করতে আমার একাজেই মনে নেই একেবারেই ভুলে গেছি। আমি কাগজটার মধ্যে একটা নাম ও ঠিকানা লিখেছিলাম মিঃ বেরেসফোর্ড এই নাম ঠিকানায় যেন চিঠি লেখে।
অ্যালবার্ট কাগজটা নিয়ে চলে যেতে, আবার ট্রুপেন্সও মিস মুলিন্সের সঙ্গে শাক সবজি, বাগান নিয়ে আলোচনা শুরু হল। কিছুক্ষণ পর টমি যখন এখানে এসে হাজির হল, ওকে দেখে ট্রুপেন্স বলল, টমি এই হল মিস মুলিন্স। মিসেস গ্রিফিন ওকে আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। আমরা বাগানের জন্য একটা ভালো লোক চাইছি।