এই রকম অবস্থায় হ্যানিবল তাড়াতাড়ি এগিয়ে এসে ট্রুপেন্সের কাছে বসল তারপর গর গর শব্দ করতে লাগল। কুকুরটা ওদের এতই আদরের যে ট্রুপেন্স যখন বলল, কি ব্যাপার তখন কুকুরটা আবার গর গর করতে লাগল। ট্রুপেন্স কোলে নিয়ে কুকুরটাকে আদর করতে লাগল। কুকুরটাকে লক্ষ্য করে টমি আর ট্রুপেন্সের মধ্যে অনেক কথাবার্তা চলতে লাগল। কুকুরটা এর মধ্যে ট্রুপেন্সের কাছ থেকে নেমে টমির কাছে এলো। আদরের চোটে ল্যাজ নাড়তে লাগল।
হ্যানিবল এগিয়ে এসে টারপোলিনের মোড়কটা শুকল, তারপর ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে লাগল। কুকুরের শব্দ শুনে ট্রুপেন্স বলল, দেখছো বাড়ির হয়ত কেউ এসেছে। মালিক হতে পারে। মনে হয় মিসেস্ ফেরিং। ও নাকি খুব ভালো বাগান দেখাশুনা করতে পারে। টমি দরজাটা খুলে ভেতরে গেল। কুকুরটাও ওর সঙ্গে গেল। হ্যানিবল খুব জোরে জোরে ডাকতে লাগল। প্রথমে গর গর করে ডাকতে লাগল। তারপর রেগে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে ডাকতে লাগল।
টমি বলল, আমার মনে হয় কুকুরটা হয়তো ভেবেছে দোকানটার পেছনে কেউ বা কোন কিছু রয়েছে সেইজন্য চীৎকার করছে। হয়তো কোন ষাঁড় বা খরগোস। খরগোস দেখলে হ্যানিবল ভয় পায়। তাই খুব একটা উৎসাহ না পেলে চট করে খরগোসের পেছনে ধাওয়া করে না।
অনেক খোঁজখুঁজি করল দোকানটার চারপাশ। পাচ্ছে না বলে ঘেউ ঘেউ করে চীৎকার করতে লাগল। মাঝে মাঝে কুকুরটা টমির দিকে পেছন ফিরে তাকাতে লাগল। টমি এতসব কাণ্ডকারখানা দেখে বলল, আমার মনে হয় দোকানটার মধ্যে কোন বেড়াল আছে। এই বেড়াল মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে ঢোকে। এই কথাটা বলে ট্রুপেন্স হ্যানিবলের দিকে তাকিয়ে বলল, আয় চলে আয়।
খুঁজে পাচ্ছে না বলে হ্যানিবলকে যেন হিংস্র দেখাচ্ছিল। সে একবার ট্রুপেন্সের দিকে তাকিয়ে তারপর কেউ পেছনে সরে দাঁড়াল। তার পরক্ষণেই আবার সেইগুলোর দিকে তাকিয়ে ভয়ঙ্কর ভাবে ডাকতে লাগল। কিছুতেই যেন ওর রাগ কমছে না।
ওকে কিছু একটা ব্যতিব্যস্ত করছে বা বিব্রত করছে। যার জন্য কুকুরটা এতই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। হ্যানিবল ট্রুপেন্সের আর টমির দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছে যেন বলতে চাইছে তোমরা ফিরে যেও না। একটু অপেক্ষা কর তবে আমার আশঙ্কা দূর হবে।
ঠিক সেই সময় একটা শব্দ হল। দুটো তীক্ষ্ণ শব্দ। সবাই ভয় পেয়ে গেল। ট্রুপেন্স বিস্মিত কণ্ঠস্বরে বলল, হে ভগবান কেউ মনে হয় খরগোস স্বীকার করছে।
চল, চল, ভেতরে ঢুকে পড় ট্রুপেন্স, টমি বলল। কিছু একটা যেন তার কানের পাশ দিয়ে উড়ে গেল। এতে হ্যানিবল যেন পুরোপুরি সতর্ক। কুকুরটা ঝোঁপটাতে পর পর পাক খাচ্ছিল। কুকুরটা যেন পাগল হয়ে গেছে। টমি ওর দিকে দৌড়ে গেল। ও মনে হয় কাউকে তাড়া করছে। টমি বলল, নীচের কাউকে তাড়া করছে। ট্রুপেন্স বার বার জিজ্ঞাসা করল কি ওটা? কি ওটা?
টমি ট্রুপেন্সকে জিজ্ঞাসা করল তুমি পুরোপুরি ঠিক আছে তো?
ট্রুপেন্স বলল, আমি একদমই ঠিক নেই। আমার কাঁধের ঠিক নীচে খুব জোরে লাগল। মনে হয় কেউ যেন আঘাত করল।
মনে হয় কেউ গুলি করছে আমাদের লক্ষ্য করে। লোকটা মনে হয় আমাদের চোখের আড়ালে ঐ ঝোঁপটার মধ্যে লুকিয়ে আছে।
এমন কেউ হয়ত হবে, যে ঐ ঝোঁপটার মধ্যে থেকে আমাদের গতিবিধি লক্ষ্য করছে, ট্রুপেন্স বলল।
কিন্তু ক্লারেন্স বলল, আমার মনে হয় আইরিশরা আই অর এ তারা কেউ জায়গাটাকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টা করছে ট্রুপেন্স বলল, আমার মনে হয় না এটা কোন রাজনৈতিক ব্যাপার।
টমি সবাইকে বাড়ির মধ্যে চলে আসার জন্য বলতে লাগল। এমনকি ক্লারেন্সকে বলল, তুমিও চলে এসো।
হ্যানিবলকে বাগানের দরজার কাছে আবার দেখা গেল। হ্যানিবল দৌড়ে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে টমিকে সে যেন কিছু বলতে চাইল। টমির প্যান্টের কাপড় ধরে টানতে লাগল এবং সে যেদিক থেকে এসেছিল সেদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠল।
ট্রুপেন্স হ্যানিবলের ব্যাপারটা লক্ষ্য করছিল। টমি বলল, নোকটা যেই হোক না কেন হ্যানিবল তাকে তাড়া করবার জন্যই বলছে।
টমি ভয় পেয়ে গেল। সে ট্রুপেন্সকে বলল, না তোমার কাছে যাবার দরকার নেই। লোকটা কিন্তু সাংঘাতিক। লোকটার হাত কিন্তু খালি না। হাতে নিশ্চয় কোন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র আছে। সামনে সাংঘাতিক বিপদ। আমি তোমাকে ঐ বিপদের মধ্যে ঠেলে দিতে পারি না। এই রকম একটা ঝুঁকি তোমার এই বয়সে নেওয়া ঠিক হবে না। বাড়ির ভেতরে তাড়াতাড়ি ঢুকে পড়ল।
টমি হলঘরে ঢুকে টেলিফোনে কথা বলতে শুরু করল। ট্রুপেন্স বলল, তুমি কি করছ? আমি পুলিসকে ফোন করছি। এই রকম ভাবে কোন ব্যাপার তো চলতে পারে না। ওরা আমাদের ক্ষতি করার জন্যই এসেছে। এবং নিশ্চয় ক্ষতি করতে পারত।
ট্রুপেন্সের কাঁধ থেকে তখনও রক্ত বেরোচ্ছে। আমার মনে হয় কাঁধটার মধ্যে কিছু লাগান দরকার। তাড়াতাড়ি অ্যালবার্ট ফাস্ট-এড বক্স নিয়ে হাজির হল। সে বলল, কোন শয়তান আপনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়েছিল।
টমি জানালো তোমার অতি অবশ্যই হাসপাতালে যাওয়া দরকার। না আমার যাওয়ার দরকার নেই, আমি ঠিক আছি। আমার কাঁধটা ঠিক করে বেঁধে দাও ব্যাণ্ডেজ দিয়ে। তাহলেই ভালো হয়ে যাবে। না অন্য কিছু যদি ভালো জিনিষ থাকে সেটা লাগিয়ে দাও।
এইরকম চলতে চলতে ট্রুপেন্সকে হঠাৎ টমি জিজ্ঞাসা করল। তুমি জিনিষ ঠিক রেখেছে তো? টমি জিজ্ঞাসা করল কোন জিনিষটা ট্রুপেন্স, তুমি কি বলতে চাইছো? টমি জিজ্ঞাসা করল।