তিনি তার ভাগ্নে জেমস্ লীচ-এর কাছে উঠেছেন। হঠাৎ ফোন এল, তার ভাগ্নেকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। ছেলেটি বেরোনোর উদ্যোগ নিল। কারণ স্যার ম্যাথু ট্রেসিলিয়ানের স্ত্রীর মৃত্যু ঘটেছে।
জিমি যাবার আগে তার মামাকে বললেন এই প্রথম তিনি খুনের তদন্ত করছেন। যদি দরকার হয় তাহলে যেন তাকে সাহায্য করে।
তিনি বললেন তিনি তা করবেন। জিমি আর দাঁড়ালেন না।
.
৪.২
আধঘণ্টার মধ্যে জিমি আবার ফিরে এল। তার সঙ্গে মেজর রবার্ট মিচেল এল। তিনি খুনের ব্যাপারে নিয়ে ব্যাটলের সঙ্গে কথা বলতে চান। ব্যাটলকে বললেন এটা বাইরের ব্যাপার নয়। তাকে জিজ্ঞাসা করলেন তদন্তের ভার তিনি নিতে রাজী কিনা।
ব্যাটল বললেন, তার কোন আপত্তি নেই কিন্তু ওপরওয়ালা রাজী হবেন কিনা।
মেজর মিচেল বললেন আপনি এখন স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ডে আছেন না। তিনি আরও বললেন কমিশনার তার বন্ধু এখুনি তাঁকে তিনি ফোন করবেন। যদি তাকে ছেড়ে দেন তাহলে আর কোন আপত্তি নেই। তিনি সম্মতি জানালে মেজর মিচেল স্কটল্যাণ্ড ইয়ার্ডে ফোন করলেন। সুপারিন্টেন্টে ব্যাটল এটা বুঝেছিলেন যে এই খুনের ব্যাপারে পুলিসকে খুব হুশিয়ার হয়ে এগোতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপ সতর্ক হওয়া চাই। যতক্ষণ না পাকাঁপোক্ত প্রমাণ মিলছে ততক্ষণ গ্রেপ্তার তো দূরে থাক কাউকে সন্দেহ করা চলবে না। কারণ মানহানির আশঙ্কা এখানে পদে পদে। মেজর মিচেল পাকা লোক হিসাবে সুপারিন্টেন্টে ব্যাটলকে তদন্তে নিয়োগ করতে চান। গাল পয়েন্টে ঢুকে লেডি ট্রেসিলিয়ানের ঘরের সামনে গিয়ে তিনি দাঁড়ালেন। মেঝের উপর একটা গলফ খেলবার ছড়ি আছে–যা রক্তমাখা, একজন পুলিস অফিসার পরীক্ষা। করছিলেন ছড়ির উপর আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া যায় কি না। ডঃ ল্যাজনবি বিছানায় ঝুঁকে লেভি ট্রেসিলিয়ানের মৃতদেহ পরীক্ষা করছিলেন।
তার মনে হয়, সামনে থেকে জোরে কেউ তাকে আঘাত করেছিল। প্রথম আঘাতেই হাড় ভেঙে মৃত্যু ঘটে। কিন্তু তার পরেও তাকে আঘাত করা হয়েছে।
মৃত্যু সম্পর্কে খুনী নিশ্চিত হতে চেয়েছিল। তিনি রাত ১০-১২ টার মধ্যে মারা গেছেন। ডঃ ল্যাজনবি বললেন, খুনী যদি গলফের ছড়িটা এখানে ফেলে যেত তাহলে ঠিক কি দিয়ে যে আঘাত করা হয়েছে, তা হয়ত তিনি বুঝতে পারতেন না। যাইহোক ছড়ির প্রান্তভাগ কিন্তু লেভী ট্রেসিলিয়নের মাথায় লাগেনি। লেগেছে বাঁকানো জায়গাটা। খুনী কি চেয়েছিল। আমরা তা জানি না; আমরা শুধু এটুকু বুঝতে পারছি, বাঁকানো জায়গাতেই আঘাত করেছে।
তিনি বললেন যে আঘাত লেগেছে লেভি ট্রেসিলিয়ানের ডান কপালে অথচ যেই আঘাত করুক, সে যে এই বিছানায় ডানদিকে, খাটের শিয়রের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল, তাতেও সন্দেহ নেই। খাটের বাঁদিকে দেওয়াল।
ডঃ ল্যাজনবি বলতে চান লোকটি ন্যাটা, প্রমাণ হতে পারে ট্রেসিলিয়ান বাঁ দিকে মুখ ঘুরিয়ে ছিলেন সেই মুহূর্তে খুনী আঘাত হেনেছে কিংবা খাটটা বাঁদিকে টেনে এনে আবার তাকে সরিয়ে রেখেছে। এ ব্যাপারটা অস্বাভাবিক।
ডিটেকটিভ সার্জেন ছড়ি পরীক্ষা করে বললেন, এটা একটি সাধারণ ছড়ি। ন্যাটাদের জন্য ব্যবহৃত ছড়ি নয়। ন্যাটা হওয়া ছাড়াও সে অন্য কারো ছড়ি হাতিয়ে এনেছিল ল্যাজনবি এই ব্যাপারে সঠিক নয়।
তবে লোকটি পুরুষ জিমি বললেন, কোন মেয়ের পক্ষে অত জোরে আঘাত করা সম্ভব নয়।
ডাক্তার বললেন, তিনি গল খেলার সময় অনেক মেয়েকে জোরে ছড়ি চালাতে দেখেছেন।
মিঃ ব্যাটল ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করলেন গলফের এই ছড়িটা দিয়ে আঘাত করা হয় এ বিষয়ে কি তিনি নিশ্চিত নন।
তিনি বললেন, তিনি এটা অনুমান করেছেন। ছড়ির মাথায় চুল রক্ত লেগে থাকায় তিনি এটা অনুমান করেছেন। তবে সেগুলি ট্রেসিলিয়ানের কিনা তা প্রমাণ করতে হবে। ব্যাটলও এই বিষয়ে তার সঙ্গে একমত।
জিমি ব্যাটলকে জিজ্ঞাসা করলেন লেভি ট্রেসিলিয়ানকে যখন আঘাত করা হয় তখন কি তিনি জেগে ছিলেন না ঘুমিয়েছিলেন?
ব্যাটল মনে করেন তিনি ঘুমিয়েছিলেন। তার বিশ্বাস খুনী তার চেনা ছিল। ব্যাটলকে দেখে তার মনে হল ঘুম থেকে তাকে জাগিয়ে ভোলা হয়েছিল। তার মুখে আতঙ্কের ভাব নেই। তার চোখে একটু বিস্ময়ের ভাব ছিল।
এমন হতে পারে উনি জেগেই ছিলেন।
জিমি ছড়ি দেখে আঙ্গুলের ছাপ পেলেন। জিমি সার্জেন্ট জোন্স-এর থেকে জানতে পারলেন। তিনি বললেন এ বেশ ভদ্র খুনী। ছড়ি, আঙ্গুলের ছাপ সবই রেখে গেছে, নাম ঠিকানা রেখে যায়নি?
ডঃ ল্যাজনবি লেভির চাকর ব্যাটলকে চিকিৎসা করতে গেলেন যাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। লেভি ট্রেসিলিয়ানের ঘরের কাণ্ড শুনে যেন ব্যাটল ছুটে না আসতে পারে, তারজন্য তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। বিপদের মুহূর্তে লেভি ঘন্টি টেনেছিলেন কিনা জানা যায়নি। টেনে থাকলেও ব্যাটল কিছু জানতে পারেনি।
ব্যাটল বললো, জানতে পারার কথা নয়। কিন্তু একটা কথা ঠিক, যে তাকে খুন করেছে সে এই বাড়ির খবর রাখে। ডঃ ল্যাজনবি ব্যাটলকে দেখে চলে গেলেন। ব্যাটল জিমিকে বললেন, গলফের ছড়ির ওপরকার ওই আঙ্গুলের ছাপ খুনীর নয়, ছাপ হয়ত অন্য কারোর, খুনী হয়ত দস্তানা পরে ওই ছড়িটা ব্যবহার করেছিল।
ঘাড় নেড়ে জিমি বললো, তা হতে পারে না। ছড়ির ওপর কারও আঙ্গুলের ছাপ পড়বার পর যদি কেউ দস্তানা হাতে ও ছড়ি ব্যবহার করতো তাহলেও ছাপটা অস্পষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু আমরা যে ছাপ পেয়েছি সেটা খুবই স্পষ্ট।