.
১৯শে আগস্ট
সুপারিটেণ্ডেন্ট ব্যাটেল বললেন, ব্যস ছুটির বারোটা বেজে গেল। তিনি ভাবছিলেন মাস খানেকের ছুটি নিয়ে কোথাও যাবেন কিন্তু দপ্তরে কি চুরি ধরা পড়েছে, তার তদন্তের জন্য তার যাওয়া হবে না। তার স্ত্রী এটা শুনে বললেন, সেপ্টেম্বর না হয় অক্টোবর মাসে যাবে। তার ঘর বুক করা আছে। তাই তিনি বললেন তার স্ত্রী বেন, ছেলেমেয়েদের নিয়ে চলে যায়। তার তদন্তের কাজটা তাড়াতাড়ি চুকে গেলে তিনি হপ্তাখানেকের জন্য ওয়াশিংটন থেকে বেড়িয়ে আসবেন তার সাথে জিমের দেখা হবে। জিমের পুরো নাম জেমস্ লীচ। এটা পছন্দ না হলেও মিসেস ব্যাটল করতে রাজী হলেন।
.
০৩.
৩.১
সলাটিংটন স্টেশনে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে টমাস লয়েডের জন্য অপেক্ষা করছিল মেরী। টমাস নামার পর তার সাথে মেরীর দেখা হল। ওরা দুজন ছোটবেলার বন্ধু, তাদের মধ্যে পত্রবিনিময় হয়।
টমাস বললো যে, সে হোটেলে থাকবে। মেরী তাকে তার পিসীমার বাড়ি রাখতে চায়। মেরীর কথামত টমাস বসল গাড়িতে মেরী গাড়ি স্টার্ট দিল। মেরী বললো, সলাটিংটন থেকে সল্টীক মাত্র সাত মাইল। একটু বাদেই আমরা সেখানে পৌঁছে যাব। পিসীমা তোমাকে দেখলে খুশী হবেন। পিসীমার বাড়ির নাম গাল পয়েন্ট। মেরী জানাল তার বাড়িতে একটা অস্বস্তিকর ঘটনা ঘটেছে। লেভিলের সঙ্গে অড্রের বিচ্ছেদ ঘটেছে, প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে তারা ছুটি কাটাতে আসত। এবার দুজনকে পিসিমা নিমন্ত্রণ করেছেন। কিন্তু লেভিল তার দ্বিতীয়া পত্নীকে নিয়ে আসছেন। এটাতেই অশান্তিজনক অবস্থা তৈরী হয়েছে।
টমাস বললো যে, লেভিল কি জানত যে অড্রে আসবে। পিসীমা তার চিঠিতে লেভিলকে জানিয়েছিলেন। টমাস একথা শুনে খুব আশ্চর্য হল।
মেরী বললো, আশ্চর্য বলে আশ্চর্য। এখন আর একটা ফ্যাশন হয়েছে নতুন বউয়ের সঙ্গে পুরানো বউয়ের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। কেউ কারো সঙ্গে কথা বলছে না। একটা থমথমে আবহাওয়া সৃষ্টি হবে। এইসময় যদি একজন বাইরের লোক থাকে তবে সবাই স্বাভাবিক ভাবে চলবে।
টমাস অড্রের কথা জিজ্ঞাসা করল। অড্রেকে এককালীন ভালোবাসত টমাস। কিন্তু সেকথা সে মুখ ফুটে বলতে পারেনি। অড্রের সঙ্গে লেভিলের বিচ্ছেদের কথা ভেবে সে ইংল্যাণ্ড ছেড়ে মালয়ে চলে গেছিল। এতদিন বাদে সেকি অড্রের বিচ্ছেদের কথা শুনে চলে এল? এটা ভাবছিল মেরী।
গালস পয়েন্টে গাড়ি ঢুকল। লন পেরিয়ে বাড়ি, প্রথমে ড্রইংরুম। ড্রইংরুম পেরিয়ে ওদিকে বারান্দায় গিয়ে পৌঁছাল টমাস। দেখা হল অড্রের সঙ্গে, সে ভীষণ রোগা হয়ে গেছে। তার চোখ দুটি উজ্জ্বল।
টমাসকে অড্রে দেখতে পায়নি। অড্রের পাশে একটা মেয়ে বসে আছে। মেয়েটি কি অড্রের সপত্নী? একজন ঠাণ্ডা অপরজন উগ্র; খুব আকস্মিক ভাবেই তুলনা করা যায়। ওদিক থেকে লেভিল বারান্দায় ঢুকল। তার হাতে একটা পত্রিকা। সেও দেখতে পায়নি টমাসকে। এগিয়ে এসে সে বললো, একটাই মাত্র কাগজ ছিল। তা সেইটিই নিয়ে এলাম। পরমুহূর্তে দুটি ঘটনা ঘটল। কো বললে দাও। আর অড্রেও হঠাৎ মুখ না তুলে হাত বাড়িয়ে দিল লেভিলের দিকে। লেভিল বুঝতে পারছিল না কাগজটা কাকে দেবে। হঠাৎ তীব্র গলায় কো বলে উঠল কাগজটা তাকে দেওয়া হোক। অড্রে বললো যে, সে বুঝতে পারেনি। টমাস দেখতে পাচ্ছিল লেভিলের মুখ লজ্জায় লাল হয়ে উঠেছে। সে ঘরে যাবার সময় ধাক্কা খেল টমাসের সাথে। টমাস দেখল তার চোখে অশ্রুপ্লাবিত। লেভি ট্রেসিলিয়ানকে বললেন সব লেভিলের কাণ্ড, তাকে আসতে বললেন, তিনি তার নতুন বউকে নিয়ে এসেছেন এবং এই নিয়ে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
টমাস বললো, এতে অড্রের সম্মতি ছিল।
টমাসকে জিজ্ঞাসা করলেন তিনিও অড্রেকে ভালোবাসতেন কি?
তিনি বললেন, যে এখনও বাসেন। টমাস অড্রেকে বিয়ের প্রস্তাব করবেন বলেই এখানে এসেছেন।
মিসেস স্পাইসারকে নিরিবিলিতে পেয়ে বুড়ো বাৰ্টলার হার্টল তার মনের কথাটা খুলে বললেন। সবাই কথাবার্তা বলছেন কিন্তু কেউ কারো মনের কথা খুলে বলছেন না।
হার্টল বুড়ো বাৰ্টলার বললেন এরকম কখনো হয়, দুটি বর্তনের মধ্যে কখনো ভাবসাব হয়।
খাবার ঘরে সবাই বসেছিল। মেরী টমাস, লেভিল, কো আর অড্রে। অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
কো’র উদ্দেশ্যে মেরী বললো, আজ সকালে নদীর ওপারে গেছিলাম। সেখানে তোমার বন্ধু মিঃ ল্যাটিমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। কাল রাত্রিতে তাকে এখানে খেতে বলেছি।
কো বললো, তার সঙ্গেও ট্রেডের দেখা হয়েছে। ট্রেড ইটার হেড হোটেলে উঠেছে।
লেভিল বললো, সে একটু হোটেল থেকে ঘুরে আসবে। আচ্ছা মেরী নদী পারের জন্য আজকাল খেয়া পারাপার ব্যবস্থা হয়েছে। তাই না?
মেরী জানাল ভোর থেকে রাত দেড়টা পর্যন্ত খেয়া পারাপার করা যায়। লেভিল বললো, সবাই মিলে একদিন নদীপার হয়ে ট্রেডের হোটেলে যাবো।
টমাস অড্রেকে জিজ্ঞাসা করলো আজকাল কি আর তুমি পিয়ানো বাজাও না?
অড্রে বললে, ভালো লাগে না।
টমাস বললো, এককালে তুমি চমৎকার পিয়ানো বাজাতে।
অড্রে বললো, পিয়ানো ছেড়ে দিয়েছি।
লেভিল বললো, পিয়ানো ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়।
কো বললো, তুমি কবে থেকে আবার পিয়ানোর সমজদার হলে লেভিল?
লেভিল বললো, অড্রের হাত তো খুব ছোট। অত ছোট হাত দিয়ে অর্কেস্ট্রাকে ধরা খুব সুবিধে নয়।