.
৮ই মার্চ
পুলিস কমিশনার ও তার মেয়ে সিলভিয়ার গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন। সিলভিয়ারের চোখে জল। তার বাবা তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন যে, সে তো কোন অন্যায় করেনি। তবে সে কাঁদছে কেন? তিনি মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে এনেছেন। স্কুলের অবস্থাটা জেলখানার মত। সিলভিয়ারের কোন দোষ না থাকলেও সে দোষ স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল। কেননা সে দোষ অস্বীকার করলেও তিনি তা মেনে নেবেন না এই ভয়ে অস্বীকার করলে তিনি সন্দেহের চোখে তাকিয়ে থাকবেন, এই ভেবে সিলভিয়া ভেবেছিল যে তার চাইতে শাস্তি পাওয়া ভালো। আজ সকালে সিলভিয়ার স্কুলের হেডমিস্ট্রেস একটি চিঠিতে জানাল।
বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের কাগজপত্র চুরি যাচ্ছিল, তার কন্যা সিলভিয়ার বিরুদ্ধে একজন নালিশ জানায়। নানাভাবে প্রশ্ন করে তারা সিলভিয়াকেই চোর সন্দেহ করেন। অবশ্য চোরাই মাল সে কোথায় রেখেছে তা এখনও জানা যায়নি। জানি খবর শুনে আপনি মর্মাহত হবেন কিন্তু যে বালিকা চুরিতে হাত পাকিয়েছে তাকে বিদ্যালয়ে রাখা সম্ভব নয়। আপনি যদি এই চিঠি পেয়ে নিজে আসেন তারা এবিষেয়ে আপনার সাথে কথা বলতে পারেন।
সুপারিন্টেন্টে নিজেই গিয়ে বুঝেছিলেন সিলভিয়া নির্দোষ। তিনি অনেক চোর ডাকাত ঘেটেছেন। তিনি এটাও বুঝেছিলেন তারা প্রশ্ন করে মেয়েটাকে দোষ স্বীকার করিয়েছেন। তিনি তার মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যদি দরকার হয় তারা পুলিসে খবর দিতে পারেন। তারা না দিলে তিনিই তা করবেন। সিলভিয়ার ক্রন্দনরতা মুখটির দিকে চেয়ে গাড়িতে যেতে যেতে তার বাবা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, সে দোষী না হলেও কেন দোষ স্বীকার করল।
আসলে শিশুরা ভয়ে তার দোষ স্বীকার করে।
.
১৯শে এপ্রিল
খেলা-টেলার খবর যারা রাখেন লেভিলকে না চেনার কথা তাদের নয়। সে একজন খেলোয়াড়। ফুটবল, ক্রিকেট, গল্ফ, সাঁতার ইত্যাদি যাবতীয় খেলায় সে পটু। তার সবচেয়ে বড় গুণ হারলেও তার মুখের হাসিটা ম্লান হয় না। তার সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হল তার স্ত্রীভাগ্য। তিনি খ্যাতিবান ও অর্থবান। লেভিলের বয়স এখন ৩৩, তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ ঘটেছে। তার দ্বিতীয় স্ত্রী কো। এত কিছুর পরে তার মনে একটা অস্বস্তির কাটা বিধে আছে। সিঁড়ি বেয়ে নেমে এল লেভিল।
কয়েকদিন আগে ফ্রান্স থেকে ফিরেছে তারা সস্ত্রীক।
কো বললো, তার বন্ধু শাটি তাকে সামনের জুনে নরওয়েতে যেতে লিখেছে কিন্তু সেপ্টেম্বরে যদি ক্যামিলিয়ার কাছে যাওয়া হয় তাহলে কি জুন মাসে যাওয়া সম্ভব হবে।
লেভিল বললো, এই তারা ফ্রান্স থেকে ফিরলেন। সেপ্টেম্বরে যদি ক্যামিলিয়ার কাছে যাই, তাহলে জুন মাসে যাওয়া সম্ভব হবে না।
কো বললেন ক্যামিলিয়া তার মায়ের মতন, স্যার ম্যাথু ট্রেসিলিয়ানের স্ত্রী তিনি। যার সাহায্যনা পেলে তিনি জীবনে দাঁড়াতে পারতেন না। যিনি তার অবিভাবক ছিলেন। তিনি তাকে তার ছেলের মত মানুষ করছেন। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে তিনি তার বাড়ি গিয়ে থাকেন। এবারে যদি তিনি না যান তাহলে খারাপ দেখাবে। তাছাড়া তোমাকেও তিনি নিয়ে যেতে বলেছেন।
কোর বক্তব্য ভদ্রমহিলা মারা গেলে বিস্তর টাকা পাবে বলে যাওয়া উচিত। তাছাড়া টাকার উপর ক্যামিলিয়ার হাত নেই, এটা বোঝাল লেভিল। তিনি ভালোবাসেন বলে তার কাছে তারা যাবে। ম্যাথু তার মৃত্যুর সময় যে ব্যবস্থা করে গেছেন, সেই অনুযায়ী ক্যামিলিয়া তার জীবনদশায় সে টাকার সুদ পাবে। উইলে লেখা আছে ক্যামিলিয়ার মৃত্যুর পর এমনিতেই সেই টাকা স্ত্রীর কাছে চলে আসবে। ক্যামিলা সেই উইল পাল্টাতে পারেন না।
কো বললো তাকে ভালোবাসলেও কোকে তিনি ভালোবাসেন না। তিনি অড্রেকে ভালোবাসতেন। তার মতে গলাস পয়েন্টে সবাই তাকে ঘেন্নার চোখে দেখে। কো বললো যে, অড্রের প্রতি তার এখনও অস্বস্তি যায়নি। তার মনে হয় সে তার প্রতি অন্যায় করেছে। আসলে অড্রের কাছ থেকে লেভিল ডির্ভোস চায় কিন্তু সে মন থেকে তা দিতে না চাইলেও লেভিলের কথা ভেবে একবাক্যে তাকে ডিভোর্স করে দেয়। কেননা সে কো-কে ভালোবাসত। অড্রেকে নিয়ে কো একটু বিরক্ত। তার মনে হল লেভিল একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছে। সে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ছুটি কাটাতে বেড়াতে যাচ্ছে এখানে প্রথম স্ত্রীকে ডাকার কোন প্রয়োজন আছে?
লেভিল বললো, তাকে যে ডাকা হল কারণ প্রতি বছর তাকে সেখানে ডাকা হয়। অড্রে প্রতিবারের মত এবারেও আসবে, কেন না তাতে প্রতিপন্ন হবে যে, লেভিলকে ভালো মনেই নিয়েছে। লেভিল বললো, অড্রের সঙ্গে সে বন্ধুত্বের মত সম্পর্ক রাখতে চায়। এইকথা শুনে কোর ভালো লাগলো না। লেভিল বললো যে, তার চিঠি পেয়ে সে খুশী হয়েছে। এটা ক্যামিলিয়াকে জানিয়ে দেওযা হোক সেপ্টেম্বরে তারা দুজনেই তার বাড়িতে উঠবে।
.
৩০শে এপ্রিল
লেভিলের চিঠি পেয়ে পাগল হয়েছে বলে সেই চিঠি সে তার ভগ্নীর দিকে ছুঁড়ে দিলেন, ক্যামিলিয়া মেরীর বয়স ছত্রিশ, কিন্তু সে তার মায়ের মৃত্যুর পর আর বিয়ে করেনি। মেরি তার পিসীমার কাছে আছে।
ক্যামিলয়া বললেন যে তাকে সেপ্টেম্বরে আসতে বলা হয়েছে বলেই কি ওকে আসতে হবে। তাও আবার প্রথম স্ত্রীর উপস্থিতিতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে। প্রথম স্ত্রীকে সে ত্যাগ করেছে। বিনা অপরাধে।