কে হঠাৎ অড্রেকে বললো যে, সে জেনেছে অড্রে খুন করেছে। লেভিল তাকে চুপ করাল। ইনসপেক্টর জেনে যাবার জন্য অড্রেকে জামাকাপড় গুছিয়ে নিতে বললেন। ব্যাটল বললেন যে, ভদ্রলোক বড় অদ্ভুত কথা বললেন।
লেভিল অড্রের জন্য এ্যাটর্নী দাঁড় করাতে চান। ব্যাটল বললেন যে, মার্কহোয়াটার যা বললেন, তাতে মনে হয় তাকে একটা ছোট্ট এক্সপেরিমেন্ট করতে হবে।
অড্রে চলে গেল, মিঃ মার্ক হোয়াটারের সঙ্গে ব্যাটল একটা এক্সপেরিমেন্টের জন্য ফেরীঘাটে যাওয়া হল।
.
০৫.
৫.১
রহস্য উপন্যাসে একেবারে গোড়াতে কেউ না কেউ খুন হয়ে যায়, ব্যাটল বললেন। তিনি মনে করেন ক্লাইম্যাক্স খুনের জন্য প্ল্যান করতে হবে। আর সেই প্ল্যান অনুযায়ী একটু একটু করে এগোতে হয়। একটু একটু করে চক্রান্তের জাল বিছিয়ে যেতে হয়। খুন হচ্ছে চক্রান্তের শেষ পরিণতি।
ব্যাটল বললেন, এই ঘটনায় বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছে। এখানে নাটকের পঞ্চম অঙ্কের শেষ দৃশ্য ঘটেছে।
ব্যাটল মনে করেন লেভির খুন পরিণতির পথে এটা একটা সোপান মাত্র। খুনী আসলে লেভিকে খুন করে দুসেট প্রমাণ সাজিয়ে রেখেছিল। প্রথম সেটটা লেভিল স্টেঞ্জের বিরুদ্ধে এবং দ্বিতীয়টি অড্রের বিরুদ্ধে। খুনী জানত প্রথমটি ভুয়ো হলে তার নজর গিয়ে পড়বে দ্বিতীয়টির উপর। কিন্তু দ্বিতীয় সেটের প্রমাণগুলিকে আমরা সাজানো বলে সন্দেহ করতে পারি। এটা সাজানো প্রমাণ বলে সন্দেহ হয়েছে। অড্রের চিরুনী থেকে খানিকটা চুল আর খানিকটা পাউডার লেভিলের কোটে বসানো হয়েছে। খুনী দস্তানাটা আগে চুরি করে সেখানে লেভির রক্ত লাগিয়ে সেটাকে আইভিলতার ঝাড়ের মধ্যে ফেলে দেয়। অড্রের বিরুদ্ধে যেসব প্রমাণ পেয়েছি সেগুলি অকাট্য প্রমাণ।
অড্রে যে নির্দোষ তা তার মনে হয়েছে। কিন্তু তার প্রমাণ যতক্ষণ না জাল বলে প্রমাণিত হয় ততক্ষণ তাকে তিনি দোষী ভাবছেন।
মিঃ মার্কহোয়াটার বলেন সোমবার রাত্তিরে তিনি ইটারহেড হোটেলের বারান্দায় বসেছিলেন। তার হাতে দূরবীনও ছিল। সেই দূরবীন রাত ১১টা নাগাদ সে চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দেখে গালস পয়েন্টের জানালা থেকে দড়ি ঝুলছে। পাঁচিলের উপর দিয়ে সেই দড়ির প্রান্ত নদীর উপর এসে পড়েছে। নদীর মধ্যে থেকে আবছায়া একটা মূর্তিকে তিনি গাল পয়েন্টের দোতলায় উঠে যেতে দেখেছেন।
মেরী বললো, তাহলে খুনী বাইরের লোক। ব্যাটল বললেন, সে বাইরে থেকে গালস পয়েন্টে ঢুকেছিল বটে তবে সে বাইরের লোক নয়। নদীর ওপার থেকে সাঁতরে সে এপারে এসেছিল। কিন্তু ওপারে গিয়ে গালস্ পয়েন্টের ভিতরে কোন বন্ধু তার জন্য দড়ি ঝুলিয়ে রেখেছিল। ব্যাটল বললেন, রাত এগারোটার সময় কেউ এখানে এসেছিল। বিভিন্ন লোক ইটারহেড হোটেলে আসা যাওয়া করেন।
এখন সবাই যদি বলেন তারা হোটেলেই আছেন, তাহলে সবাই সত্যি বলছেন এটা নির্ভরযোগ্য নয়। ল্যাটিমারের দিকে তাকাতে তিনি বললেন তিনি সাঁতার কাটতে জানেন না। তিনি মিঃ ল্যাটিমারকে জলে ফেলে দিলেন। মিঃ জোনস্ তাকে বাঁচিয়ে আনলেন এর থেকে প্রমাণ হল যে তিনি সত্যি সাঁতার জানেন না। কিন্তু সেই ব্যক্তি?
মিঃ ব্যাটল তখন স্টেঞ্জকে বললেন যে, তিনিই সাঁতরে এদিকে এসেছিলেন দশটা পঁয়ত্রিশে। এগারোটার সময় তার বন্ধুর সঙ্গে তার দেখা হয় তাহলে মাঝের সময়টা তিনি কি করছিলেন? তিনি বলতে চাইলেন তিনি তার বন্ধুকে খুঁজছিলেন। কিন্তু ব্যাটল বললেন এটা ভুল কেন না অতক্ষণ ধরে কারোকে খোঁজা সম্ভব নয়। তিনি স্টীমার থেকে নেমে আবার ওপরে চলে যান। তারপর দোতলায় উঠে আমি লেভিকে খুন করি এটা বললো লেভিল।
ব্যাটল বললেন, হ্যাঁ, তিনি দড়িবেয়ে তার ঘরে ওঠেন, যে দড়িটা আগেই তিনি উপরে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। তার ঘরে জল ঝরতে দেখেছিলেন। তিনি নিজের ঘর থেকে লেভির ঘরে গিয়ে তাকে খুন করেন। তারপর হাতলটা ধুয়েমুছে রাখেন এবং তার আগে তিনি অড্রের দস্তানা চুরি করে রক্ত লাগিয়ে আইভিলাতার ঝড়ে ফেলে আসেন এবং দড়িটা অকেজো জিনিসপত্রের ঘরে ফেলে আসেন। এইসব তিনি অড্রের স্টেঞ্জকে ঘৃণা করেন কেননা সে তাকে ত্যাগ করে অড্রিয়ানের কাছে চলে গেছিল বলে সেইজন্যই করেছেন।
আসলে তিনি বাল্যকাল থেকে অপ্রকৃতিস্থ, ছোটবেলায় তিনি একটি শিশুকে খুন করেন। অড্রেকে তিনি ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলাবেন বলে এইটি করেন, তিনি দুসেট প্রমাণ সাজান, যাতে পুলিস বিভ্রান্ত হয়। নিষ্কৃতি অড্রে পেতেন না যদি না টমাস বলে বসতেন যে তাকেই ত্যাগ করেছেন অড্রে। আসল খুনীকে বের করার জন্য মার্কহোয়াটার এলেন। আসলে তিনি চালাক মনে করলেও তিনি মূর্খ উন্মাদ।
হঠাৎ বলে উঠল লেভিল যে সে পাগল নয়। যদি মার্কহোয়াটার দেখতে না পেত তিনি কোনদিন ধরা পড়তেন না।
.
৫.২
অড্রে বললেন যে, তার সারাটা সময় ভয়ে কাটত। লেভিলকে তিনি ভয় করতেন। এক এক সময় মনে হত তার যে তিনি মনে হয় পাগল হয়ে যাচ্ছেন। আসলে লেভিল নিজেও পাগল হয়ে যাচ্ছিলেন।
তিনি নিজের উপর রাগ পুষে রাখতেন এবং তারজন্য তিনি কেমন হয়ে যাচ্ছিলেন। অড্রিয়ান তার বন্ধুকে তিনি বিশ্বাস করেন। তার সাথে তিনি পালিয়ে ছিলেন। সে মোটর অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান। অড্রের মনে হয় এটা ঘটানো হয়েছে। এমনসময় একদিন সে লেভিলের ঠিকানা জোগাড় করে তার সাথে দেখা করতে আসে তারপর তাকে সে ডিভোর্স দিতে চায়।