ব্যাপারটি ব্যাটল বোঝালেন যে খুনী দস্তানা পরে খুন করে। সে ভিজে নেকড়া দিয়ে রক্তমাখা হাতলটাকে মুছে ফেলেছে। আর মুছেছে বলেই হাতলটা ঝকমক করছে।
জিমি খুব অবাক হল। ব্যাটল বললো, যে খুন করে হাতলটা আবার লাগিয়ে দেয় সে বোকা না হলেও চালাক নয়। চালাক হলে সে দুটো হাতলই মুছে রাখত। বাঁদিকে ঝকমকে হাতল থেকে খুব সম্ভব রক্তের দাগ লেগেছিল। ওটাকে ল্যাবরেটরীতে পাঠাতে বলা হল।
.
৪.৯
মেরি বাগানে ছিল, সে ব্যাটলকে বললো যে সত্যিই কি তিনি বিশ্বাস করেন যে বাইরের লোক খুন করেছে। ব্যাটল এ বিষয়ে নিঃসন্দেহ। তিনি বললেন যে, পিসীমা কারো অপকার করেননি। তিনি বাড়ির সকলকে ভালোবাসতেন। যে খুন করেছে সে উন্মাদ।
ব্যাটলকে মেরী তার সন্দেহের কথা শোনালেন। এবং মিঃ ট্রিভসের গল্প ও সে বিষয়ে কথা বলতে ব্যাটলও সেই সন্দেহ সম্পর্কে একমত হলেন। তিনি বললেন যে, একই খুনী ট্রিভসকেও খুন করেছে।
মেরির একটা শারীরিক লক্ষণ আছে। তার মাথার সমস্ত চুল সাদা শুধু একগুচ্ছ কালো।
ব্যাটল দেখলেন ঘরে এ্যাটনী বসে আছেন। ঘরে লেভিল এলেন। লেভিল জানালেন সম্পত্তির অংশ পাবেন তার প্রথম স্ত্রী অড্রে। এ নিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে কোন আলোচনা হয়নি।
ব্যাটল বললেন যে, এবিষয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী জানেন না, তার মতে তিনি টাকা পাবেন এবং সম্পত্তির অংশ পাবেন। তার কথা শুনে এইরকম মনে হল।
লেভিল বললো, কোর এখন টাকার দরকার নেই। বরং অড্রের এখন টাকার প্রয়োজন। অড্রের বর্তমান অবস্থা প্রশ্নে এ্যাটনী জানালেন বিচ্ছেদের দরুণ তিনি কোন টাকা লেভিলের কাছ থেকে নেননি।
ব্যাটলকে জিমি বললেন, টাকার চাহিদাটা প্রায় সকলের ক্ষেত্রেই আছে। লেভি ট্রেসিলিয়ানের মৃত্যুর পর স্যার ম্যাথুর সম্পত্তির অর্ধেক পাবেন লেভিল আর অর্ধেক পাবেন অড্রে। সুতরাং স্বার্থের বিচারে তাদের উপরে আমার সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক। এদিকে কো যদিও কিছুও পাবে না, তবু তার ধারণা অড্রে নয় বাকী অর্ধেক ও পাবে। সে যদি লেভি ট্রেসিলিয়ানকে খুন করে থাকে তাহলে অবাক হবার কিছু নেই। টমাসের টাকার স্বার্থ নেই। মেরী, ব্যারট এদেরকেও তাহলে সন্দেহ করতে হয়। তবে তার মতে হেতুটা টাকা নয়, ঘৃণা বা অন্যকিছু।
অ্যঙ্গার্য মার্কহোয়াটার যে আত্মহত্যা করতে গেছিল তার সত্যবাদিতার জন্য লর্ড কর্নেল তাকে দক্ষিণ আমেরিকার ফার্মে চাকরী করতে পাঠান। দিন কয়েক বাদে সে সেখানে যাবে। তার আগে সে এখানে বেড়াতে এসেছে। জীবনযুদ্ধে পরাজিত হয়ে সে একদিন আত্মহত্যা করতে এসেছিল। খাবার আগে সে জায়গাটাকে আবার দেখতে চায়।
মার্ক হোয়াটার ইটারহেড হোটেলে উঠেছে। হোটেলের বারান্দায় বসে সে ওপারে পাহাড়ের দিকে তাকিয়েছিল। আজ তার কারো প্রতি কোন অভিযোগ নেই। সে দেশ ছেড়ে চলে যাবে।
তার ভাবনায় ছেদ পড়লো। তার পাশের ঘরে থাকে ছোট্ট একটা মেয়ে ডায়না নামে। সে তার কুকুরকে নিয়ে লনে ঘুরছে, সেই মেয়েটি তাকে ডাকছে।
হঠাৎ মার্ক হোয়াটারের মনে পড়ল তাকে একবার সালটিংটনে যেতে হবে। সেখানকার ড্রাইক্লিনিকে একটা আর্জেন্ট স্যুট কাঁচাতে দিয়েছে। সেটা আনতে হবে। হোটেল থেকে বেরিয়ে সে বাসে উঠল।
দোকানে বললো, তার স্যুট এখনও কাঁচা হয়নি। সে ভয়ানক রেগে গেল এবং তার স্যুট ফেরত দিতে বললো।
হোটেলে ফিরে সে কাগজ খুলে দেখল। সে তো একটা গাঢ় নীল রঙের স্যুট কাঁচতে দিয়েছিল। স্যুটের মধ্যে লেভেলের নাম লেখা থাকলেও এটা তার স্যুট নয়। সেই স্যুট থেকে একটা পচা গন্ধ বের হচ্ছিল। ওটা কিসের দাগ সে বুঝতে পারল না। সে ওই স্যুট নিয়ে ড্রাই ক্লিনিকে দেবে ঠিক করল।
.
৪.১০
রাত্তিরের খাওয়া চুকিয়ে ইটারহেড হোটেলে বেরিয়ে এল মার্কাহোয়াটার। ব্যালমোরাট কোর্টের সামনে খানিকটা যেতেই তার চোখে পড়ল গালস্ পয়েন্ট সেখানে একজন বৃদ্ধা খুন হয়েছে।
সে পাহাড়ের সেইখানে এসে দাঁড়াল, যেখানে সে মরতে চেয়েছিল কিন্তু মরতে পারেনি। তার জীবনে সঙ্গীর অভাব আজ তার তীব্রভাবে লাগছে। তার পত্নী মোনার কথা তার মনে হল সে যার জন্য মরতে চেয়েছিল। হঠাৎ সে দেখল একটা পরীর মত মেয়ে খাদের দিকে ছুটে আসছে। তাকে বাঁচাল সে। বললে তাকে সে মরতে দেবে না। মেয়েটি তার হাতে পাখির মত ছটফট করছিল। তাকে সে বললো, আত্মহত্যা করা মহাপাপ। তার দুঃখের কাহিনী শুনতে চাইল। সে যে অড্রে, মিঃ স্টেঞ্জর প্রথম স্ত্রী এটা সে বুঝতে পারল। তার স্বামীকে সবাই খুনী বলছে এটা সে মেনে নিতে পারছে না। তার মতে আসল খুনী তার স্বামীকে খুনী হিসেবে সাব্যস্ত করতে চায়। আসলে সে তার পূর্বতন স্বামীকে ভালোবাসে। এখনও সে তার স্বামীকে ফাঁসিকাঠে ঝুলতে দিতে চায় না। তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে যাতে ঝুলতে না হয় তার ব্যবস্থা সে করবে বললো।
.
৪.১১
বাড়িতে মেরী একা ছিল। কিন্তু তার মন অবসন্ন। আজ জেরা কেউ করছে এই বিষয়ে সে বেশ আগ্রহী।
তার চাকর জানাল মিঃ মার্ক হোয়াটার নামে একজন ভদ্রলোক, যে অড্রের বন্ধু সে তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। তাকে মেরী জানালেন যে অড্রে এখানে নেই। তিনি একগোছা লম্বা দড়ির খোঁজে এখানে এসেছেন। মেরী কিছু না প্রশ্ন করে বললো যে, মালীর ঘরে হয়তো দড়ি পাওয়া যাবে।