তিনি বললেন তিনি তার বন্ধু এ্যাডওয়ার্ড ল্যাটিলের সঙ্গে দেখা করতে ইটারহেড হোটলে গিয়েছিলেন। সেই হোটেলের দরজা সারারাত খোলা থাকে। তিনি নীলরংয়ের স্যুট পরেও পরে আবার ছাইরংয়ের স্যুটটা পারেন। তারপর লেডির সঙ্গে তার কথাবার্তা হয়। তিনি মিনিট কুড়ি তার ঘরে ছিলেন। তারপর সাড়ে দশটার সময় তার বন্ধুর সঙ্গে খেলতে বেরোন। রাত দেড়টার সময় তিনি ফেরীঘাট থেকে, যখন তিনি নৌকা না পান তখন তার বন্ধুর গাড়িতে রাত আড়াইটে নাগাদ এখানে ফিরিয়ে দিয়ে যান।
লেভি ট্রেসিলিয়ানের সঙ্গে যে তার বাদানুবাদ হয় সেটা তিনি বললেন। তিনি ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে কিছু কথা বলেছিলেন। কিন্তু তারজন্য রেগে গিয়ে তার মাথা ফাটাননি। তার ছড়িতে যে তার আঙ্গুলের ছাপ আছে এটা শুনে তিনি বললেন যে এটাই স্বাভাবিক ছড়ির উপর আঙ্গুলের ছাপ থাকায় প্রমাণিত হয় ওটা তিনি ব্যবহার করেছিলেন শেষে।
লেভিল বললো যে, কেউ দস্তানা পরে ওটা ব্যবহার করেছে।
ব্যাটল বললেন, তাহলে আঙ্গুলের ছাপও মুছে যেত বা অস্পষ্ট হয়ে যেত। লেভিল বললেন যে, তিনি খুন করেননি। তার স্যুট থেকে রক্ত পাওয়া গেছে এটা শুনে বললেন, এটা হতেই পারে না।
তিনি বললেন যে, লেভি ট্রেসিলিয়ানকে তিনি খুন করেছেন এটা হতেই পারে না। কারণ তিনি তাকে মায়ের মত ভালোবাসতেন। তার টাকার দরকার নেই। ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করে মিঃ রোনাণ্ডসন জানালেন যে তাদের ব্যাঙ্কে তার বিস্তর টাকা আছে।
ব্যাটল বললেন, তিনি খুনী না হলেও প্রমাণ তার বিপক্ষে যায়নি। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা যায় না, যদি কোন মোটিভ পাওয়া যায় তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
.
৪.৪
কো স্টেড সাক্ষ্য দিতে এলেন। তিনি জানালেন রাত নটা নাগাদ তার ঘুম এসে যাওয়ায় তিনি শুতে যান। ড্রইংরুমে থেকে বেরিয়ে আসার পর তার সাথে আর দেখা হয়নি, কাল বিকালে তার স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। তাই তিনি খিল তুলে দিয়ে শুয়ে পড়েন। ঝগড়ার কারণ হল ওই মেয়েটি। লেভিলকে,যে ভুলিয়ে ভালিয়ে এখানে এনেছে। সে লেভিলকে দেখিয়ে টমাসের সঙ্গে মেলামেশা করছে এটা ট্রেডকে কষ্ট পাওয়ানোর জন্য, যাতে সে ঈর্ষায় জ্বলে। এটা হবে তিনি জানতেন। কিন্তু লেভিল ভাবে তিনি অড্রেকে হিংসা করেন। অড্রেকে ত্যাগ করে তার অন্যায় হয়েছে। ভালোবেসে তাকে বিয়ে করে লেভিল কিন্তু তার মন পড়ে রয়েছে অড্রের কাছে।
ব্যাটলকে তিনি বললেন যে, তিনি জানেন যে, লেভি ট্রেসিলিয়ানের মৃত্যুর পর টাকাটা যাবে লেভিল ও তার স্ত্রীর হাতে। তিনি জানেন যে, লেভি তাকে বিশেষ ভালোবাসতেন না। তার মানে এই নয় যে, তার মৃত্যু এইভাবে তোক তিনি তা চেয়েছিলেন। তিনি অতটা স্বার্থপর নন।
এরপর মেরি অল্ডিন বললেন, তিনি রাত্রি ১০টা নাগাদ শুতে যান, তিনি মিঃ স্টেডকে মেরীর সঙ্গে ঝগড়া করতে শুনেছিলেন। তার মনে হয় হত্যাকারী বাইরের লোক।
ব্যাটল বললেন, এরকম ভাবতে না পারার কারণ আছে। প্রথমতঃ কোন কিছু খোয়া যায়নি, তাছাড়া দরজা ভেঙে বাইরের লোক কেউ যে ভেতরে ঢুকেছিল, এমন কোন প্রমাণ নেই, বাইরে থেকে কাউকে যদি এ বাড়িতে ঢুকতে হয় তাহলে দরজা জানালা ভেঙ্গে ঢুকবে কি করে? এ বাড়ির পশ্চিম দিকে গভীর খাদ, সেদিক থেকে কারও আসার উপায় নেই। অবশ্য পাঁচিল টপকে কিংবা ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে সদর দরজা খুলে কারো ভিতরে ঢোকা সম্ভব নয়। এমন কথা তিনি বলছিলেন। তাকে যে খুন করেছে সে রাত্রিতে ব্যারটের দুধের মধ্যে বিষ মেশাতে চেয়েছেন, দুধের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ব্যারেটকে অজ্ঞান করা বাড়ির লোকের পক্ষেই সম্ভব।
এই কাজ লেভিলের নয় তিনি মনে করেন। এছাড়া টাকার লোভে সে মানুষ খুন করতে পারে না। তার বউ খরচে হলেও ইদানীং সে টাকাপয়সার কথা ভাবছিল না। কো আর অড্রেকে নিয়ে সে দারুণ দুর্ভাবনায় পড়ে গেছে, তার দুই বউকে নিয়ে। এই নিয়ে বাড়িতে একটা দারুণ অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে, সবাই ভয়ে ভয়ে আছে। এমনকি মিঃ ল্যাটিমার।
মিঃ ল্যাটিমার হলেন কোর বন্ধু। লেভিলের সঙ্গে বিয়ে হবার আগে তিনি কো-কে চিনতেন, মিঃ ট্রেড তাকে পছন্দ করতেন কিন্তু লেডি তাকে পছন্দ করতেন না। ব্যারট অত্যন্ত বিশ্বাসী। সে পিসীমাকে ভালোবাসত। সে খুন করতে পারে না। সে টাকা পাবে উইল থেকে। সে মেরীও পাবেন।
মেরী চলে গেল। এরপর অড্রে এল, সে মানুষ নয় যেন শ্বেতপাথরের মূর্তি। তিনি গতকাল রাতে দশটা নাগাদ শুতে গেছিলেন। তিনি রাত্তিরে কোন শব্দ শুনতে পাননি। প্রতিবছরের মতো এখানে তিনি বেড়াতে আসেন। মিঃ স্টেঞ্জের এটা আইডিয়া ছিল। আপত্তি করলে খারাপ দেখাত বলে তিনি তা করেননি। তাঁর প্রতি এখন তার কোন আক্রোশ নেই। মিসেস কো তাকে বিশেষ পছন্দ করে না। তাকে সে পছন্দ করে। সে বললো যে, লেভিল খুন করেনি কেননা টাকার লোভ তার নেই।
.
৪.৫
সর্বশেষে টমাস রয়েড, ব্যাটলের প্রশ্নের উত্তরে সে জানাল, যে মালয় থেকে তা প্রায় সাত বছর বাদে সে দেশে ফিরেছে। মিসেস স্টেঞ্জ তার দূর সম্পর্কের বোন, একই বাড়িতে তারা মানুষ হয়েছেন। সে আগের রাতের ১১টার আগে ঘুমোতে গেছিল। সদর দরজা বন্ধ করার শব্দ সে বুঝতে পেরেছিল। সে সচক্ষে তাকে বেরোতে দেখেননি। তিমি মিঃ স্টেঞ্জ দুই স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে কিছু জানেন না। তার আর্থিক অবস্থা সম্পর্কেও কিছু জানেন না। তিনি অত্যন্ত চাপা স্বভাবের তা বোঝা গেল।