ভেতরে বেশ কিছু মাইক্রোফিল্ম আছে, সেলডন বললেন। টি লেখা ফিল্মটা বের কর। নির্দেশ পালন করল গাল।
সেলডন ফিল্মটাকে প্রজেক্টরে ঢুকিয়ে গালের হাতে একজোড়া আই-পীস ধরিয়ে দিলেন। চোখে পরে নিল গাল। দেখল, ওর চোখের সামনে খুলে যাচ্ছে মাইক্রোফিল্মটা।
বলে উঠল সে খানিক পরে, কিন্তু তাহলে–
বাগড়া দিলেন সেলডন মাঝপথে, জিগ্যেস করলেন, কোন জিনিসটা অবাক করছে তোমাকে?
আপনি কি দুবছর ধরে ব্র্যানটর ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন? অবিশ্বাস ভরা কণ্ঠে গাল পাল্টা প্রশ্ন করল।
আড়াই বছরে ধরে। অবশ্যি শেন যে টার্মিনাসই পছন্দ করবে সে-ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে ভেবেছিলাম, হলেও হতে পারে, সেই ধারা অনুযায়ীই কাজ।
কিন্তু কেন ড: সেলডন? নির্বাসনে যাবার প্রস্তুতি নিলেন কেন আপনি? ট্রানটরে থেকেই কি সবকিছু আরো ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেত না?
কেন, তার কিছু কারণ আছে। ইম্পেরিয়াল সাপোর্ট পাবো আমরা টার্মিনাসে কাজ করলে। কারণ, তাতে করে কখনোই এ-সন্দেহের উদ্রেক হবে না যে, আমরা কোনোভাবে সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করব।
কিন্তু আপনি সেই সন্দেহেরই উদ্রেক করেছেন স্রেফ নির্বাসনটা আদায় করতে গিয়ে। আমি এখনও বুঝতে পারছি না কিছু। উম্মা ঝরে পড়ল গালের কণ্ঠ থেকে।
বিশ হাজার পরিবার সম্ভবত স্বেচ্ছায় ট্রানটর ছেড়ে গ্যালাক্সির শেষ মাথায় যেতে চাইত না।
কিন্তু তাদের যেতে বাধ্য করা হবে কেন? থামল একটু গাল। তারপর আবার প্রশ্ন করল, আমি কি জানতে পারি না?
নট ইয়েট, সেলডন জবাব দিলেন। আপাতত শুধু এটুকু শুনেই সন্তুষ্ট থাক যে, টার্মিনাসে একটা সায়েন্টিফিক রিফিউজ বা বৈজ্ঞানিক আশ্রয় শিবির স্থাপন করা হবে। এবং আরেকটা স্থাপন করা হবে গ্যালাক্সির অন্য প্রান্তে; বলতে পার, মৃদু হাসলেন তিনি, স্টারস এও-এ। আর বাদবাকি ব্যাপারগুলোর মধ্যে শুধু এটুকু বলি, শিগগিরই মারা যাচ্ছি আমি। আর আমি যা যা দেখে গেলাম, তুমি তারচেয়ে অনেক বেশি দেখে যাবে- না, না, আঁতকে ওঠার কারণ নেই, আমার জন্যে মঙ্গল কামনা করারও দরকার নেই। ডাক্তার বলে দিয়েছে আমাকে, বড় জোর আর এক কি দুবছর টিকব আমি। কিন্তু তাতে আফসোস নেই, যা করার ইচ্ছে ছিল তা শেষ করতে পেরেছি আমি জীবনে। এর চেয়ে ভাল আর কোন অবস্থায় একটা লোক মৃত্যুবরণ করতে পারে, বলো?
আর আপনি মারা যাওয়ার পর কী হবে, স্যার?
কেন, উত্তরাধিকারীরা থেকে যাবে- হয়ত তুমি হবে তাদেরই একজন। এরাই প্রজেক্টের ফাইনাল টাচ দেবে। সেই সঙ্গে অ্যানাক্রিয়ন-এ সময়মত, সঠিকমতো বিদ্রোহের সূচনা করবে। তারপর ঘটনা আপনা আপনিই গড়াতে থাকবে।
বুঝলাম না। বুঝবে। প্রায় সবাই টার্মিনাসে চলে যাবে। কেউ কেউ অবিশ্য থেকে যাবে, তবে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে অসুবিধে হবে না। আর আমার কথা যদি বল, গলাটা তাঁর একেবারে খাদে নেমে গেল এখানে এসে, গাল কোনোরকমে শুনতে পেল, আই অ্যাম ফিনিশড্।