- বইয়ের নামঃ এম্পায়ার অভ দ্য মোগল ব্রাদার্স অ্যাট ওয়ার
- লেখকের নামঃ অ্যালেক্স রাদারফোর্ড
- প্রকাশনাঃ রোদেলা প্রকাশনী
- বিভাগসমূহঃ অনুবাদ বই, উপন্যাস
এম্পায়ার অভ দ্য মোগল ব্রাদার্স অ্যাট ওয়ার
১.১ ভ্রাতৃপ্রতিম প্রেম – প্রথম পর্ব
অ্যাম্পেয়ার অব দ্য মোগল – ব্রাদার্স অ্যাট ওয়ার
মূল : অ্যালেক্স রাদারফোর্ড
অনুবাদ : সাদেকুল আহসান কল্লোল
‘ভ্রাতৃসম আবেগ বিসর্জন দাও,
যদি তুমি সম্রাট হিসাবে অভিষিক্ত হওয়ার আকাঙ্খা পোষণ কর…
কেউ কারো ভাই নয়!
ওরা সবাই তোমার সাম্রাজ্যের শত্রু!’
—-হুমায়ুনের সৎ-বোন গুলবদন লিখিত হুমায়ুননামা থেকে সংকলিত
প্রধান চরিত্রসমূহ
হমায়ুনের পরিবারবর্গ :
বাবর, হুমায়ুনের আব্বাজান এবং প্রথম মোগল সম্রাট
মাহাম, হুমায়ুনের আম্মিজান এবং বাবরের প্রিয়তমা স্ত্রী
খানজাদা, হুমায়ুনের ফুপিজান এবং বাবরের ভগিনী
বাইসানগার, হুমায়ুনের নানাজান
কামরান, হুমায়ুনের সৎভাইদের ভিতরে বয়োজ্যেষ্ঠ
আসকারি, হুমায়ুনের সৎ-ভাইদের ভিতরে মধ্যম এবং কামরানের আপন ভাই
হিন্দাল, হুমায়ুনের সৎ-ভাইদের ভিতরে কনিষ্ঠতম
গুলবদন, হুমায়ুনের সৎ-বোন এবং হিন্দালের আপন ভগিনী
আকবর, হুমায়ুনের প্রাণপ্রিয় পুত্র
হমায়ুনের বিশ্বস্ত পারিষদবর্গ :
কাশিম, হুমায়ুনের বিশ্বস্ত উজির
জওহর, হুমায়ুনের ব্যক্তিগত পরিচারক এবং পরবর্তীতে তার রাজপ্রাসাদের খরচের নিয়ন্ত্রক
বাবা ইয়াসভালো, হুমায়ুনের অশ্বশালার প্রধান
আহমেদ খান, হুমায়ুনের গুপ্তদূতদের প্রধান এবং পরবর্তীতে আগ্রার শাসনকর্তা
শারাফ, হুমায়ুনের জ্যোতিষী
জাহিদ বেগ, একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সেনাপতি
সালিমা, হুমায়ুনের প্রিয়তম উপপত্নী
সুলেয়মান মির্জা, হুমায়ুনের আত্মীয় সম্পর্কিত ভাই এবং তাঁর অশ্বারোহী বাহিনীর সেনাপতি
মাহাম আগা, আকবরের দুধ-মা
আধম খান, আকবরের দুধ-ভাই
নাদিম খাজা, হুমায়ুনের অন্যতম সেনাপতি এবং মাহাম আগার স্বামী
অন্যান্য :
গুলরুখ, বাবরের স্ত্রী এবং কামরান আর আসকারির আম্মিজান
দিলদার, বাবরের স্ত্রী এবং হিন্দাল এবং গুলবদনের আম্মিজান
নিজাম, একজন ভিস্তিঅলা
জয়নব, হামিদার প্রধান পরিচারিকা
সুলতানা, রাজা মালদেবের মোগল উপপত্নী
ওয়াজিম পাঠান, একজন অবসরপ্রাপ্ত সৈন্য সাহসিকতার জন্য হুমায়ুন যাকে পুরস্কৃত করেছিল
শেখ আলি আকবর, হিন্দালের উজির এবং হামিদার আব্বাজান
দারয়া, নাসিরের পুত্র, কাবুলে হুমায়ুনের সেনাছাউনির আধিকারিক
মুস্তাফা আরগুন, তূর্কী অশ্বারোহী যোদ্ধা
হিন্দুস্তান :
সুলতান বাহাদুর শাহ, গুজরাতের শাসনকর্তা
তার্তার খান, হুমায়ুনের আব্বাজান বাবরের কাছে পরাস্ত হওয়া পূর্ববর্তী শাসক বংশ, লোধিদের, একজন সদস্য এবং হিন্দুস্তানের তখতের একজন দাবীদার
শেরশাহ, ছোটজাতে জন্ম নেয়া বাংলার এক উচ্চাভিলাষী শাসক
ইসলাম খান, শেরশাহের পুত্র
মির্জা হুসেন, সিন্ধের সুলতান
রাজা মালদেব, মারওয়ারের শাসক
তারিক খান, ফিরোজপুরের শাসক এবং শেরশাহের অনুগত জায়গিরদার
আদিল শাহ, ইসলাম শাহের ভগ্নিপতি এবং হিন্দুস্তানের তখতের একজন দাবীদার সেকুন্দার শাহ, ইসলাম শাহের আত্মীয় সম্পর্কিত ভাই এবং হিন্দুস্তানের তখতের একজন দাবীদার
পারস্য :
শাহ তামান্স
রুস্তম বেগ, বয়োজ্যেষ্ঠ সেনাপতি এবং শাহ তামাস্পের আত্মীয় সম্পর্কিত ভাই
বৈরাম খান, অভিজাত ব্যক্তি, দক্ষ সেনাপতি এবং পরবর্তীতে হুমায়ুনের খান-ই-খানান, প্রধান সেনাপতি
হমায়ুনের পূর্ব-পুরুষ :
চেঙ্গিস খান
তৈমূর পশ্চিমে যাকে তৈমূর লঙ বলা হয়
উলুঘ বেগ, তৈমূরের প্রপৌত্র এবং একজন খ্যাতনামা জ্যোতিষী
.
প্রথম পর্ব – ভ্রাতৃপ্রতিম প্রেম
০১. বাঘের পিঠে সওয়ারী
কয়েকদিন ধরেই বাতাসে প্রচণ্ড হিমের প্রকোপ। হুমায়ুন যদি চোখ বন্ধ করে তাহলে অনায়াসে আগ্রার এই দূর্গ প্রকারের পরিবর্তে নিজেকে শৈশবের সঙ্গী কাবুলের পাহাড় আর তৃণভূমির প্রেক্ষাপটে কল্পনা করতে পারে। কিন্তু সংক্ষিপ্ত শীতকাল শেষ হয়ে আসছে। আগামী কয়েক সপ্তাহের ভিতরেই হিন্দুস্তানের সমভূমি আবারও ধূলিকণা আর উষ্ণতায় দগ্ধ হবে।
পশমের পরত দেয়া লাল রঙের আলখাল্লাটায় নিজেকে ভালো করে মুড়ে নিয়ে, মন্থর পায়ে দেয়ালের উপরে পায়চারি করে হুমায়ুন। তার দেহরক্ষীদের আদেশ দিয়েছে তাঁকে একা থাকতে দিতে কারণ একাকী নিজের ভাবনায় বিভোর হয়ে থাকতে চায় সে। মাথা উঁচু করে, তারার ফুলঝুরি নিয়ে জ্বলজ্বল করতে থাকা পরিষ্কার আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে সে। তাদের তীব্র, রত্ন-তুল্য উজ্জ্বলতা সবসময়েই মোহিত করে তাকে। এটা প্রায়শই তার মনে হয় যে সেখানে সবকিছু লেখা রয়েছে, কেবল তোমাকে জানতে হবে সেটা কোথায় আর কিভাবেই বা সেই লিখনের পাঠোদ্ধার করতে…।
পেছনে কোথাও থেকে একটা লঘু, সাবলীল পায়ের শব্দ ভেসে এসে ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটায় তার। হুমায়ুন ক্রু কুচতে ঘুরে তাকায়, ভাবে কোনো অমাত্য বা প্রহরী এতটাই হঠকারী যে নির্জনতার জন্য সম্রাটের অভিপ্রায়ের প্রত্যক্ষ আদেশ অমান্য করার স্পর্ধা দেখাতে পারে। বেগুনী আলখাল্লায় মোড়া একটা লম্বা, ক্ষীণদর্শন অবয়বের উপরে ক্রুদ্ধ নজর আপতিত হয় তার, মুখের নিম্নাংশ একটা মিহি পর্দার অবগুণ্ঠনে ঢাকা, এর উপরে তাঁর ফুপু খানজাদার কিশমিশ রঙের চোখ জ্বলজ্বল করছে। হুমায়ুনের ক্রুদ্ধ অভিব্যক্তি নিমেষে মিলিয়ে গিয়ে সেখানে একটা হাসি ফুটে উঠে।