সেপ্টেম্বর ১৬৮৭ খ্রিস্টাব্দে গোলুন্ডার পতন হয়, যখন একজন আফগান বিশ্বাসঘাতক উৎকোচ গ্রহণ করে একটি ছোট মোগল সেনাদলকে একটি ছোট ফটকের মধ্য দিয়ে দুর্গে ঢোকার সুযোগ করে দেয়। আদিল হাসানকে যখন বন্দী করা হয় তখন তিনি যে নির্লিপ্ততা দেখিয়েছিলেন, তা সত্যি ছিল। গোলকুন্ডা বিজয়ের পর মোগল সাম্রাজ্য সর্বকালের সর্ববৃহৎ বিস্তৃতি লাভ করে। এর এলাকা ছিল ৩২, ০০০০০ বর্গ কিলোমিটার বা ১২৫,০০০০০ বর্গ মাইল। জনসংখ্যা ছিল এক থেকে দেড় কোটি।
.
অধ্যায় : ১৮/১৯
কবি-কুলেশের সাথে সম্ভাজির গ্রেফতারের ঘটনাটি ঘটে ১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দের প্রথমভাগে। ঘটনাটি যেভাবে বর্ণিত হয়েছে, প্রায় সেরকমই ঘটেছিল। ১৬৮৯ খ্রিস্টাব্দের মাচের শেষদিকে তাদেরকে দাক্ষিণাত্যের গ্রামে গ্রামে ঘুরিয়ে দেখান, আওরঙ্গজেবের সামনে হাজির হওয়া, অত্যাচার আর মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঐতিহাসিক সূত্র থেকে, বিশেষত কাফি খানের বর্ণনা থেকে নেওয়া হয়েছে। মানুচি আরো বীভৎস বর্ণনা দিয়েছেন, যা এখানে উল্লেখ করা হয় নি।
.
অধ্যায় : ২০
স্যর উইলিয়াম নরিস তার রাজার কাছে চিঠির মাধ্যমে তার প্রতিবেদন পাঠান নি। তবে তার কথিত ‘চিঠিটি’তে উল্লেখ করা তারিখগুলো সঠিক ছিল। সেই সাথে তার ভ্রমণের বিষয়বস্তু, আওরঙ্গজেবের সাথে যেখানে সাক্ষাৎ করেছিলেন, মারাঠা, জাট আর শিখদের সম্পকে বিবরণ, ১৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে মুয়াজ্জমের কারামুক্তি এবং কমবখশের অস্থায়িভাবে কারাবরণের ঘটনাগুলো সঠিক ছিল। ভিড়ের মধ্য দিয়ে চলতে চলতে আওরঙ্গজেবের ডানে বামে না তাকিয়ে একটি বই পড়ে চলার বিবরণটি নরিসের নিজস্ব বিবরণের খুব কাছাকাছি। হেনরী এভারিকে প্রকৃতপক্ষে ইতিহাসের সবচেয়ে সফল জলদস্যু বলা হয়, সে কখনও ধরা পড়ে নি। উইলিয়াম কিডকে লন্ডনের ওয়াপিং জাহাজঘাটায় মে ১৭০১ খ্রিস্টাব্দে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। আর তার আলকাতরা মাখা নাবিকের দেহটি একটি লোহার খাঁচায় ভরে টেমস নদীর তীরে প্রদর্শন করা হয়, যাতে অন্যরা সাবধান হয়।
চিঠি লেখার সময় নরিস হয়তো মনে করেছিলেন তিনি ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় উইলিয়ামকে উদ্দেশ্য করে লিখছেন। তার জানার কথা নয় যে রাজা মার্চ ১৭০২ খ্রিস্টাব্দে মারা গিয়েছিলেন আর তার পরিবর্তে রানি এনি সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। নরিসের পূর্ব ধারণা মতে ইংল্যান্ডে পৌঁছার আগে ১০ অক্টোবর ১৭০২ খ্রিস্টাব্দে তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
.
অধ্যায় : ২১
গওহরা মারা যান ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে। বিদ্রোহী আকবর পারস্যে নির্বাসিত অবস্থায় ১৭০৪ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। জেবুন্নিসার কারাগারে মৃত্যু হয় ১৭০২– খ্রিস্টাব্দে।
.
অধ্যায় : ২২
আজমকে লেখা চিঠির অনুচ্ছেদটি, প্রকৃতপক্ষে তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা আওরঙ্গজেবের একটি চিঠির অনুবাদ থেকে উদ্ধৃত হয়েছে। একইভাবে কম বখশকে লেখা চিঠির প্রথম অনুচ্ছেদটি আসলেই সর্বকনিষ্ঠ পুত্রকে উদ্দেশ্য করে লেখা আওরঙ্গজেবের একটি চিঠি থেকে নেওয়া হয়েছে।
আওরঙ্গজেব শুক্রবার ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে ফজরের নামাজের পর ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তাকে খুলদাবাদে একটি সাধারণ সমাধিতে দাফন করা হয়। লাল বেলেপাথরের কবরটির উপর কোনো কিছু উত্তীর্ণ করা নেই। যে ধরনের বিশাল সমাধিসৌধে হুমায়ুন, আকবর, জাহাঙ্গীর এবং শাহজাহানকে সমাহিত করা হয়েছে, তা থেকে এটি অত্যন্ত ভিন্ন ধরনের। তবে আফগানিস্তানের কাবুলে একটি পাহাড়ের পাশে প্রথম সম্রাট বাবর এবং দিল্লিতে তার আদরের বোন জাহানারার অতি সাধারণ কবরের সাথে এর মিল রয়েছে।
.
উপসংহার
আজম, কমবখস্ এবং উদিপুরী মহলের মৃত্যু এবং বাহাদুর শাহ নাম নিয়ে মুয়াজ্জমের সিংহাসনে আরোহণের ঘটনাগুলো নির্ভুল। বাহাদুর শাহ পাঁচ বছরেরও কম সময় শাসন করতে পেরেছিলেন।
মূল চরিত্রসমূহঃ
আওরঙ্গজেবের পরিবার
মা-বাবা :
মমতাজ মহল
সম্রাট শাহজাহান
ভাই :
দারা শিকো
শাহ সুজা
মুরাদ
বোন :
জাহানারা
রওশনআরা
গওহারা
স্ত্রী :
দিলরাস বানু
নওয়াব বাঈ।
উদিপুরী মহল
পুত্র :
মোহাম্মদ সুলতান} (নওয়াব বাঈর পুত্র)
মুয়াজ্জম
আজম} (দিলরাস বানুর পুত্র)
আকবর}
কমবক্স (উদিপুরী মহলের পুত্র)
কন্যা :
জেবুন্নিসা} (দিলরাস বানুর কন্যা)
জেবাতুন্নিসা}
ভ্রাতুস্পুত্র :
সুলায়মান} (দারাশিকোর পুত্র)
সিফির}
ভ্রাতুস্পুত্রী :
জানি, দারা শিকোর কন্যা
সেনাপতি, সভাসদ এবং রাজপ্রাসাদের বিভিন্ন কর্মকর্তা :
জসবন্ত সিং, মারওয়াড়ের রাজা এবং মোগল সেনাবাহিনীর সেনাপতি
আবু হাকিম, উলামাদের প্রধান
ওয়াজিম খান, আওরঙ্গজেবের গুপ্তচর প্রধান।
উমর আলি, আওরঙ্গজেবের দেহরক্ষী বাহিনীর প্রধান
কামরান বেগ, আওরঙ্গজেবের প্রধান চর
আওরঙ্গজেবের প্রধান প্রতিপক্ষ :
শিবাজি, মারাঠি নেতা
সম্ভাজি, শিবাজির পুত্র
রাজারাম, শিবাজির দ্বিতীয় পুত্র
কবি-কুলেশ, সম্ভাজির একজন সেনাপতি
গোকলা, জাট নেতা
আদিল হাসান, গোলকুন্ডার শাসক
সিকান্দার, বিজাপুরের শাসক
অন্যান্য চরিত্র :
আমবারের রাজা
জগিন্দর সিং, আমবারের রাজার পুত্র
মেওয়াড়ের রানা
তাহাব্বুর খান, আকবরের বন্ধু ও ঘনিষ্ঠজন
দুর্গাদাস, মারওয়াড়ের রাজপ্রতিভূ
সন্তাজি, মারাঠি যুবক।
স্যর উইলিয়াম নরিস, মোগল দরবারে ইংল্যান্ড থেকে আগত রাষ্ট্রদূত
তেগ বাহাদুর, শিখ নেতা