.
অধ্যায় : ৫
রওশনআরা মারা যান সেপ্টেম্বর ১৬৭১ খ্রিস্টাব্দে। কেউ কেউ অভিযোগ করেছিলেন আওরঙ্গজেব তাকে বিষ প্রয়োগ করেছিলেন, তবে এই অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি।
সতনামি বিদ্রোহ ঘটে ১৬৭২ খ্রিস্টাব্দে। সতনামিদের প্রথা এবং তাদের জাদুফুৎকারিণীর বর্ণনা ঐতিহাসিক সূত্র থেকে নেওয়া হয়েছে। তাদের সম্পর্কে আরো পরিষ্কারভাবে ঈশ্বরদাস নগর লিখেছেন, “এরা অত্যন্ত নোংরা, অশুচি এবং নিম্নশ্রেণির মানুষ ছিল। এরা হিন্দু ও মুসলমানদের মাঝে কোনো ভেদাভেদ করতো না। এরা নোংরা শূকর ও অন্যান্য নিষিদ্ধ খাবার খেত। তাদের সাথে একই পাত্র থেকে একটি খাবার খেলে তারা কিছু মনে করতো না, ঘৃণা করতো না। লাম্পট্য ও ব্যভিচারকে তারা পাপ মনে করতো না। আওরঙ্গজেব তাঁর লোকদের মনোবল বাড়াবার জন্য তাঁর নিজের তরফ থেকে তন্ত্রমন্ত্র–দোয়া-কালাম লিখে পতাকায় সেলাই করিয়েছিলেন। তাদের সাথে সরাসরি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া কিংবা নিজ হাতে জাদুকরীকে গুলি করে মারার বিষয়টি কাল্পনিক।
সিফির শিকো এবং জাবতুন্নেসার মধ্যে বিয়ে হয় ১৬৭৩ খ্রি.।
.
অধ্যায় : ৬
আওরঙ্গজেব ও তার ভাইদের মাঝে গৃহযুদ্ধ চলার সময় মারওয়াড়ের জশবন্ত সিং বেশ কয়েকবার পক্ষ বদল করেন। এজন্য তার প্রতি আওরঙ্গজেবের আস্থা ছিল না। তিনি ডিসেম্বর ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দে খাইবার গিরিপথে তার সদর দফতরে মারা যান। উত্তরাধিকার নিয়ে বিভিন্ন ঘটনা এবং রাজপুতদের ক্ষমতা খর্ব করার জন্য আওরঙ্গজেব মারওয়াড়ের বিরুদ্ধে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, তা অনেক বিস্তৃত এবং জটিল ছিল; তবে কেবল প্রয়োজনীয় এবং সঠিক বিষয়গুলো এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
আওরঙ্গজেব জিজিয়া কর পুনরায় আরোপ করার কিছু দিন পর–১২ এপ্রিল ১৬৭৯ খ্রি. দিল্লিতে একটি ভূমিকম্প হয়।
.
অধ্যায় : ৭
জুন ১৬৭৪ খ্রি., শিবাজির জাঁকজমকপূর্ণ রাজ্যাভিষেক হয়। এর বিবরণ তৎকালীন ঘটনাপঞ্জির বিবরণ থেকে নেওয়া হয়েছে।
.
অধ্যায় : ১০
এপ্রিল ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দের প্রথম দিকে শিবাজি মারা যান। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র সম্ভাজি তার বিষয় সম্পত্তির একটি বর্ণনাপূর্ণ তালিকা তৈরি করেন। এতে রত্ন ছাড়াও প্রায় ১০০,০০০টি সোনালি এমব্রয়ডারি করা কাপড়, ৪০০,০০০টি রেশমি কাপড়, ৬৮০০ কিলোগ্রাম মরিচ, ২,২০০ কিলোগ্রাম তিমি মাছের অন্ত্ৰজাত মোমজাতীয় তীব্র সুগন্ধি, ৪৫০০ কিলোগ্রাম আবীর–বসন্ত উৎসবে (হোলি) ব্যবহৃতব্য লাল রংজাত গুঁড়ো পদার্থ, ৪৫ কিলোগ্রাম বারুদ, ৩১,০০০টি ঘোড়া, ৩০০০টি উট এবং ৫০০টি হাতি প্রাপ্ত হন।
.
অধ্যায় ১১
আকবর জানুয়ারি ১৬৮১ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহী হয়ে নিজেকে সম্রাট ঘোষণা করেন।
.
অধ্যায় : ১২
এখানে যেভাবে পিতার বিরুদ্ধে আকবরের যুদ্ধাভিযান তুলে ধরা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে তার চেয়েও দীর্ঘদিন ধরে চলেছিল; তবে আওরঙ্গজেব ঠিকই আকবরের সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে দিয়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য নকল চিঠি ব্যবহার করেছিলেন। এছাড়া তিনি তাহাব্বুর খানকে ভয় দেখিয়ে বলেছিলেন যে, যদি সে আকবরের সঙ্গ ত্যাগ না করে তবে তার পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়া হবে। আওরঙ্গজেব তার একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, যদি তোমার কোনো শত্রুকে ধ্বংস করতে চাও, তবে ব্যর্থ না হতে চাইলে কোনো কিছুই বাদ দিও না। সরাসরি উন্মুক্ত যুদ্ধে প্রতারণা, অজুহাত, কোনো কিছুর জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি–সবকিছুই চলে। তোমার পরিকল্পনা সফল করতে হলে এই দুনিয়ায় যত ধরনের ছলচাতুরী আছে সব ব্যবহার কর।
আওরঙ্গজেব ঠিকই তাঁর মেয়ে কবি জেবুন্নিসাকে তার ভাই আকবরকে সমর্থন দেওয়ার কারণে তাকে বাকি জীবন কারাগারে বন্দী করে রেখেছিলেন। পুস্তক সংগ্রহ এবং জ্ঞানী ব্যক্তিদের উৎসাহ দেবার ব্যাপারে তার এত আগ্রহ ছিল যে, তিনি এমন একটি গ্রন্থাগার গড়ে তুলেন যা, ‘কোন মানুষ কখনও দেখেনি।
বিদ্রোহী আকবর ১৬৮১ খ্রিস্টাব্দে সম্ভাজির সাথে যোগ দেন। মারওয়াড়ের দুর্গাদাস তাঁকে দক্ষিণে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন।
একদিকে মারওয়াড় ও মেবার এবং অন্যদিকে মোগল সাম্রাজ্যের মধ্যে শান্তি পুনপ্রতিষ্ঠিত হলেও, তাদের সম্পর্ক সবসময় আন্তরিকতাশূন্য ছিল না। আগের মতো ওরা পরস্পরের এত কাছাকাছি আর ছিল না। এরপর খুব কম রাজপুতই মোগল সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়।
.
অধ্যায় : ১৪
জাহানারা ১৬৮১ খ্রিস্টাব্দে মারা যান। তাঁর শেষ ইচ্ছানুযায়ী তাঁকে দিল্লির একজন সুফি সাধকের কবরের কাছে একটি অতি সাধারণ কবরে দাফন করা হয়। তার নিজ হস্তে রচিত একটি ফার্সি পঙক্তি তার কবরের ফলকে খোদাই করা আছে :
“শুধু সবুজ ঘাস যেন আমার সমাধি ঢেকে রাখে,
নম্র ও ধৈর্যশীলের সমাধি ঢেকে রাখার জন্য ঘাসই সর্বোত্তম।”
.
অধ্যায় : ১৬
গোলকুন্ডার আদিল হাসান ও অন্য শাসকদের লুচ্চামি সম্পর্কে বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক বিবরণ রয়েছে।
সেপ্টেম্বর ১৬৮৬ খ্রিস্টাব্দের বিজাপুর আত্মসমর্পণ করে। যারা সাহস করে বিজাপুর দুর্গের পরিখায় যথেষ্ট পরিমাণে বিভিন্ন দ্রব্য, এমনকি মৃতদেহও ছুঁড়ে ফেলেছিল, তাদেরকে আওরঙ্গজেব পুরস্কৃত করেন।
.
অধ্যায় : ১৭
গোলকুন্ডা দরবারের সাথে যোগাযোগ করার কারণে আওরঙ্গজেব আসলেই মুয়াজ্জমকে কারাদণ্ড দেন।