পরদিন সকাল।
জলাভূমি ভেদ করে বাড়ির পথে চলেছি।
তোমার সাথে পরিচয় হওয়ার পরপরই তুমি একটা কথা বলেছিলে, জবাব দিলাম। বলেছিলে প্লেন ল্যাণ্ড করার ঠিক আগ মুহূর্তে কেবিনের বাতিগুলো নিভু নিভু হয়ে আসে। আমার ধারণা সে সময়ই ক্যাপ্টেনের আত্মা তোমার শরীরে প্রবেশ করে। ওটা হয়তো আলো সইতে পারে না, তাই কাজটা আঁধারেই সেরেছে।
মনে হচ্ছে তোমার কথাই ঠিক, স্বস্তির হাসি হেসে বলল মার্ক। ওর দিকে চেয়ে মুচকি হাসলাম। কুয়াশা উবে যাওয়ার পরপরই ঘুম ভাঙে মার্কের। ওর চোখের দিকে চেয়ে দেখেছি আগের স্বাভাবিক বাদামি রং ফিরে পেয়েছে।
বুড়োর আত্মা আমার শরীরে ঢোকার পর থেকে ভয়ঙ্কর সময় কেটেছে। তোমাকে বলতেও পারি না, সইতেও পারি না-সে এক বিশ্রী অবস্থা, বলল মার্ক।
তোমার তো কোন দোষ নেই। তুমি ওর নিরীহ এক শিকার। আর তুমি যদি কেবিনের বাতি নেভার কথা না বলতে, ফ্ল্যাশলাইট জ্বালার কথা মাথায় আসত না আমার। কাজেই, আমরা দুজনে একসাথে দুষ্ট আত্মাকে হারিয়েছি। আমরা একটা দল হিসেবে কাজ করেছি।
পরস্পরের হাত ঝাঁকিয়ে দিলাম আমরা।
বাসায় ফিরতে কতক্ষণ লাগবে বলতে পারো? মার্কের প্রশ্ন।
দুপুরের মধ্যে পৌঁছে যাব।
এখন কটা বাজে? রিস্টওয়াচ দেখলাম।
এগারোটা প্রায়। ঘড়ির দিকে চেয়ে রয়েছি। হঠাই হাঁটার গতি ধীর হয়ে এল।
কী হলো?
জবাব দিলাম না। দিতে পারলাম না। ঘড়ির দিকে চেয়ে রইলাম একদৃষ্টিতে। বড় কাঁটাটা বারোটার ঘরের উদ্দেশে এগোচ্ছে। ছোট কাটাটা এগারোর ঘরে।
আমার মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে সেকেন্দ্রে কাটা। পিছন দিকে চলেছে ওটা।
ঠিক সে মুহূর্তে, মনে হলো আকাশে পুরানো এক বিমানের এঞ্জিনের শব্দ শুনলাম। মুখ তুলে চাইলাম। কিছু নেই। স্রেফ স্বচ্ছ নীল আকাশ।