বাবা, জিনা বলল, কিশোরকে কথা দিয়েছিলে তুমি, আমি যা চাই। দেবে। দাওনি?
কাছেই দাঁড়ানো কিশোরের দিকে চট করে তাকিয়ে নিলেন একবার মিস্টার পারকার, রবিনের মুখের দিকেও তাকালেন, দ্বিধা করলেন,
অবশেষে মুখ খুললেন, হ্যাঁ, দিয়েছিলাম। কী চাই, দ্বীপটা তো?
না, মাথা নাড়ল জিনা।
সোনার বারগুলো?
তা-ও না।
তা-ও না! তা হলে? ভুরু কুঁচকে গেছে ভদ্রলোকের।
আগে বলো, দেবে কিনা? আঙুল নাড়ল জিনা।
বলে যখন ফেলেছি, দেব। কী আর করা? অস্বস্তি বোধ করছেন।
সিঁড়িমুখে ঝুঁকে বসে ডাকল জিনা, রাফি, এই, রাফি! উঠে আয়।
রাফিয়ানের ভোতা মুখটা দেখে চমকে উঠলেন মিস্টার পারকার। কোনমতে হাসি চাপল তিন গোয়েন্দা।
যা, বাবাকে সালাম কর, রাফিয়ানকে আদেশ দিল জিনা।
আরে, না, না, দরকার নেই, লাগবে না! লাফ দিয়ে সরে দাঁড়ালেন। মিস্টার পারকার।
কিন্তু রাফিয়ান কি আর সুযোগ ছাড়ে? তার একেবারে পায়ের কাছে এসে পড়ল, দুই পা তুলে দিল হাঁটুতে, জড়িয়ে তো আর ধরতে পারে না, হাত নেই যে।
ঠিক আছে, ঠিক আছে, বোকা হয়ে গেছেন মিস্টার পারকার, ঝুঁকে কুকুরটার মাথায় হাত রেখে কোনমতে বললেন, বেঁচে থাকো, বাবা! গর্জে উঠলেন পরক্ষণেই, কিন্তু খবরদার! আমার ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট করলে চাবকে পাছার চামড়া তুলে ফেলব!
আর সামলাতে পারল না মুসা, হো হো করে হেসে উঠল। তাতে যোগ দিল কিশোর আর রবিন। জিনার মুখে হাসি, চোখে পানি।
হাসিটা সংক্রমিত হলো মিস্টার পারকারের মুখেও।
আরে, এ কী কাণ্ড! পেছন থেকে শোনা গেল, ভরাট কণ্ঠ, বেরিয়ে এসেছেন শেরিফ লিউবার্তো জিঙ্কোনাইশান, আধা রেড ইনডিয়ান আধা
স্প্যানিশ রক্ত শরীরে। আমাদের জনাথন পারকার ছেলেমেয়েদের সামনে হাসছে! স্বপ্ন দেখছি না তো! আচ্ছা শিক্ষা দিয়েছে তোমাকে তোমার মেয়ে…
চোখ কটমট করে বন্ধুর দিকে তাকালেন মিস্টার পারকার। মুখ থমথমে, কালো মেঘের আড়ালে-ঢাকা পড়েছে যেন মিষ্টি রোদ, কই, হাসলাম আবার কখন?